Justice Amrita Sinha and Justice Abhijit Ganguly

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে জিতিয়ে দিলেন বিচারপতি সিন্‌হা! সরে যাওয়া কোন মামলায় কী রায়?

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে একাধিক মামলা সরে গিয়েছে বিচারপতি সিন্‌হার বেঞ্চে। নতুন বেঞ্চে মামলাগুলির অগ্রগতিতে তেমন বাধা সৃষ্টি হয়নি। একই ছন্দে এগিয়েছে শুনানি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২৩ ০৮:২৭
Share:
০১ ২০

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কলকাতা হাই কোর্টে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার বেঞ্চ বদলে গিয়েছিল। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পরিবর্তে মামলা চলে গিয়েছিল বিচারপতি অমৃতা সিন্‌হার বেঞ্চে।

০২ ২০

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রথম থেকেই ‘রণং দেহি’ মেজাজে ছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। একের পর এক মামলায় দ্রুত শুনানি করতে এবং কড়া নির্দেশ দিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।

Advertisement
০৩ ২০

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের তৎপরতা দেখে অনেকে তাঁকে ঈশ্বরের আসনে বসাতে শুরু করেছিলেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি যেন একাই অস্ত্র হাতে যুদ্ধক্ষেত্রে নেমেছেন। একাই যেন চলছিল তাঁর লড়াই। এমনই ধারণা হয়েছিল সাধারণ মানুষের।

০৪ ২০

জনসাধারণের মধ্যে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তা যখন তুঙ্গে, ঠিক সেই সময় তাঁর এজলাস থেকে মামলা সরিয়ে দেওয়া হয়। এতে অনেকেই ভেঙে পড়েছিলেন। মনে করা হয়েছিল, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের যুদ্ধ বুঝি থেমে গেল। আর হয়তো দুর্নীতির মামলায় তাঁর সুরে কোনও কড়া রায় শোনা যাবে না।

০৫ ২০

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস বদলে যে বিচারপতির এজলাসে মামলাগুলি পাঠিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম, সেই বিচারপতি সিন্‌হার দিকে নজর ঘুরেছিল এর পর।

০৬ ২০

বিচারপতি সিন্‌হা কোন দুর্নীতির মামলায় কী রায় দেন, সে দিকে অনেকেরই আগ্রহ ছিল। তাঁর রায়ের উপরেই নির্ভর করেছিল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের ছেড়ে যাওয়া মামলাগুলির ভবিষ্যৎ।

০৭ ২০

দেখা যায়, আশাহত করেননি বিচারপতি সিন্‌হা। আগের বিচারপতির ছায়াই যেন দেখা গিয়েছে তাঁর নির্দেশের মধ্যেও। একাধিক ক্ষেত্রে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ বহাল রেখেছেন বিচারপতি সিন্‌হা।

০৮ ২০

কোন মামলায় কী রায় দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়? কী-ই বা রায় দিয়েছেন বিচারপতি সিন্‌হা? বেঞ্চ বদল হলেও দুই বিচারপতির রায়ে তেমন ফারাক দেখা যায়নি।

০৯ ২০

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টে ২০১৯ সালে মামলা করেন জনৈক চাকরিপ্রার্থী রমেশ মালিক। ২০২২ সালে আরও একটি মামলা করেন চাকরিপ্রার্থী সৌমেন নন্দী।

১০ ২০

এই দুই মামলায় প্রথম সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। পরে ইডি এই তদন্তের সূত্র ধরেই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করে।

১১ ২০

প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় এর পর একে একে গ্রেফতার হন অনেকে। হুগলি তৃণমূলের অধুনা বহিষ্কৃত যুবনেতা কুন্তল ঘোষকেও এই মামলায় গ্রেফতার করা হয়। কুন্তলের সূত্রে উঠে আসে অভিষেকের নাম।

১২ ২০

গত মার্চে অভিষেকের শহিদ মিনারের জনসভার পর কুন্তল নিম্ন আদালতে চিঠি দিয়ে জানান, ইডি এবং সিবিআই তাঁকে জেরায় অভিষেকের নাম বলার জন্য চাপ দিচ্ছে। পুলিশি হস্তক্ষেপ চেয়ে ওই চিঠি দেওয়া হয় হেস্টিংস থানাতেও।

১৩ ২০

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এই মামলার পর্যবেক্ষণে জানান, ইডি এবং সিবিআই প্রয়োজনে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। তাঁর নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে যান অভিষেক।

১৪ ২০

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এই মামলার এজলাস বদলের নির্দেশ দেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতির মামলা সরে যায় বিচারপতি সিন্‌হার এজলাসে।

১৫ ২০

অভিষেক নতুন বেঞ্চে আগের বিচারপতির নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছিলেন। কিন্তু বিচারপতি সিন্‌হার পর্যবেক্ষণ ছিল, অভিষেকের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা হয়নি। তা হলে তাঁর তদন্তে সহযোগিতা করতে সমস্যা কোথায়? সাধারণ নাগরিক হিসাবেই তদন্তে সহযোগিতা করা উচিত অভিষেকের।

১৬ ২০

বৃহস্পতিবার এই মামলার রায় ঘোষণা করেছেন বিচারপতি সিন্‌হা। তিনি অভিষেক এবং কুন্তলের আগের রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ করে দিয়েছেন। অর্থাৎ, এ ক্ষেত্রে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ই বহাল রয়েছে।

১৭ ২০

বিচারপতি সিন্‌হার রায়ে আরও বলা হয়েছে, আদালতের নির্দেশ পুনর্বিবেচনা বা প্রত্যাহারের যে আবেদন অভিষেক করেছিলেন, তার কোনও সারবত্তা খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই তাঁকে এবং কুন্তলকে ২৫ লক্ষ টাকা করে মোট ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হচ্ছে।

১৮ ২০

প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আরও একটি বিষয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল ইডি। তারা জানিয়েছিল, তদন্তের স্বার্থে অয়ন শীলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার কাছ থেকে প্রাপ্ত নথিপত্রে শুধু শিক্ষক নিয়োগ নয়, পুরসভার নিয়োগেও দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে। এই নিয়োগের তদন্তের ভারও সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

১৯ ২০

বেঞ্চ বদলে পুরসভার মামলাটিও বিচারপতি সিন্‌হা হাতে পেয়েছিলেন। রাজ্যের তরফে তাঁর বেঞ্চে আগের বিচারপতির রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হয়েছিল। কিন্তু বিচারপতি সিন্‌হা সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছেন।

২০ ২০

পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ বহাল রেখেছেন বিচারপতি সিন্‌হা। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছে। বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে শুক্রবার সেই মামলার শুনানি হবে।

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement