প্রতিভাধর অভিনেতারা অনেক সময় অভিনয় করতে করতে চরিত্রের গভীরে ঢুকে পড়েন। ফিল্মের পরিভাষায় যাকে বলে ‘মেথড অ্যাক্টিং’।
এই ধরনের অভিনয়ের মূল মন্ত্রই হল চরিত্রের সঙ্গে একাত্মবোধ করা। চরিত্রটিকে বোঝা। তার আবেগ, দুঃখ, আনন্দের সঙ্গে নিজের ভাবনাকে মেলানো। যাতে কোনও একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে অভিনেতা স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তা-ই করেন, যা বাস্তবে চরিত্রটিও করত।
অভিনেতা জন আব্রাহম বলিউডে ‘অ্যাকশন হিরো’ হিসেবে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছেন বলে মনে করেন তাঁর অনুরাগীরা। সেই জনও ‘মেথড অ্যাক্টিংয়ে’ কম যান না।
সম্প্রতি জনের অ্যাকশন ছবি ‘সত্যমেব জয়তে ২’ পর্দায় মুক্তি পেয়েছে। ছবিটি বক্স অফিসে তেমন সাড়া জাগায়নি ঠিকই। তবে জনের অ্যাকশন এবং পর্দায় এইট প্যাক উপস্থিতি অনুরাগীদের মনে ধরেছে।
সুঠাম শরীরের, সুদর্শন জন বরাবরই পর্দায় দেখার মতো বিষয় ছিলেন। কেরিয়ারের শুরুতে ‘জিসম’ ছবিতে প্রাক্তন প্রেমিকা বিপাশা বসুর সঙ্গে জনের রসায়ন দেখে অভিনেতার জন্য একরকম পাগল হয়ে উঠেছিলেন তাঁর মহিলা ভক্তরা।
বিপাশার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে জনের আবেগপ্রবণ অভিনয় মন ছুঁয়েছিল দর্শকদের।
পরে এই জনই আবার এক অভিনেত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের অভিনয় করতে গিয়ে একটু বেশিই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন।
ছবিতে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয়ের সময় আত্মনিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিলেন জন। আঘাত পেয়ে রক্তাক্ত হন সেই অভিনেত্রী।
‘শ্যুট আউট অ্যাট ওয়াডালা’ ছবির শ্যুটিংয়ে ঘটনাটি ঘটে। জনের বিপরীতে ওই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন কঙ্গনা রানাউত।
ছবিতে বেশ কয়েকটি ঘনিষ্ঠ দৃশ্য ছিল জন এবং কঙ্গনার। তার মধ্যে দু’টি বেশ নিবিড় মুহূর্তের। একটি আবেগপ্রবণ চুম্বনের দৃশ্য অন্যটি শয্যাদৃশ্য।
জন-কঙ্গনার সে দিনের শ্যুটিংয়ে উপস্থিত এক জনকে উদ্ধৃত করে সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয়ের সময় আবেগতাড়িত হয়ে কঙ্গনাকে আঘাত করে ফেলেছিলেন জন।
সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীরা দাবি করেন, নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া বা বন্ধুত্ব না থাকলে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয়ের সময় অস্বস্তি বোধ করেন দু’পক্ষই। যদিও জন আর কঙ্গনার চুম্বনের দৃশ্যের শ্যুটিংয়ে তেমন সমস্যা হয়নি।
সংবাদ সংস্থার এক প্রতিবেদনে ওই প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করেছেন, এর আগেও একটি ছোটখাটো চুম্বনের দৃশ্যে অভিনয় করেছিলেন দু’জনে। কিন্তু গোলমাল বাধে শয্যাদৃশ্যে অভিনয়ের সময়।
ছবিতে জনের চরিত্রটি ছিল এক জন ‘আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন’-এর। কঙ্গনার সঙ্গে তাঁর শয্যাদৃশ্যটি একটা সময় এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, অভিনেত্রীকে তিনি আদর করছেন না কি যৌন হেনস্তা করছেন বোঝা যাচ্ছিল না। এমনই জানিয়েছেন ওই প্রত্যক্ষদর্শী।
শয্যাদৃশ্যের গল্পটি ছিল কিছুটা এইরকম— কঙ্গনা এবং জনের চরিত্রের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। মাঝপথে কঙ্গনাকে থামিয়ে তাঁকে আদর করতে শুরু করেন জন।
কিন্তু বাস্তবে জন এই পর্যায়ে কঙ্গনার হাত এতটাই জোরে চেপে ধরেন যে অভিনেতার হাতের চাপে নায়িকার চুড়ি ভেঙে যায়। তাঁর হাত কেটে রক্ত পড়তে শুরু করেন। মেথড অ্যাক্টিংয়ের শেষ কথা যাকে বলে!
ব্যাপারটা বুঝতে জনের কয়েক মুহূর্ত সময় লেগে যায়। তবে দ্রুত তিনি নিজেকে সামলেও নেন। কঙ্গনার কাছে তৎক্ষণাৎ ক্ষমা চেয়ে নেন অভিনেতা।
সংবাদ সংস্থাটিকে ওই প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, আসলে দোষ কারও নয়। চরিত্র দু’টির আবেগ আর চিত্রনাট্য এমন ছিল যে দুই অভিনেতাই তাঁদের সঙ্গে একটু বেশি একাত্ম বোধ করে ফেলেছিলেন। তা থেকেই বিপত্তি।