অত্যন্ত শৌখিন মানুষ বলেই পরিচিত অনলাইন কেনাকাটার সংস্থা অ্যামাজ়নের মালিক জেফ বেজোস। সেই শখ মেটাতে প্রায়ই কোটি কোটি টাকা খরচ করে ফেলেন আমেরিকার ধনকুবের। কিন্তু টাকার বিনিময়ে যা কেনেন, তা চমকে দেওয়ার মতো।
বেজোসের মালিকানায় রয়েছে রোবট কুকুর, মিউজ়িয়াম বাড়ি, সুপার ইয়ট, আরও কত কী! মাঝেমধ্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে ভাঙা জিনিসপত্রও কিনে আনেন অ্যামাজ়নের কর্ণধার। তার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করতেও রাজি থাকেন তিনি।
ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বের সব চেয়ে ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় বেজোস রয়েছেন তিন নম্বরে। ২০২২ সালের হিসাবে তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১৮ হাজার ৩৮০ কোটি আমেরিকান ডলার।
বিলাসবহুল জীবনে অভ্যস্ত বেজোসের কাছে বিলাসের অর্থই আলাদা। তাতে যত না বাহুল্য, তার চেয়ে বিরল জিনিসপত্রের সম্ভার অনেক বেশি!
বেজোসের সেই শখের তালিকায় এ বার যুক্ত হতে চলেছে একটি দৈত্যকায় ঘড়ি। যা চলবে ১০ হাজার বছর। ঘড়িটির উচ্চতা হবে ৫০০ ফুট।
আমেরিকার স্ট্যাচু অব লিবার্টির চেয়ে দেড় গুণ লম্বা হবে এই ঘড়ি। পশ্চিম টেক্সাসের পাহাড়ে বসানো হবে ঘড়িটি। এটি বানানোর জন্য প্রায় সাড়ে চার কোটি ডলার খরচ করছেন বেজোস। ২০১৮ সাল থেকে ঘড়িটি তৈরি হচ্ছে আমেরিকার টেক্সাসের একটি কারখানায়।
ঘড়িটির বৈশিষ্ট্যগুলিও অবাক করার মতো। সেকেন্ড কিংবা মিনিটের হিসাবে চলবে না ঘড়িটি। সেটি বছরের হিসাব করবে। হিসাব করবে শতাব্দীর। ঘড়িটিতে থাকা পেন্ডুলাম প্রতি এক বছরে এক বার নড়বে।
ঘড়িটিতে থাকবে শতাব্দীর কাঁটাও। যা ১০০ বছরে এক বার নড়বে। ঘড়িটি জানান দেবে যে, এক হাজার বছর পূর্ণ হল!
ঘড়িটি চলবে ‘থার্মাল সাইকেল’ (তাপচক্র)-এর সাহায্যে। এতে ব্যবহৃত হবে ইস্পাত, টাইটানিয়াম ও বিশেষ ধরনের সেরামিক।
বেজোসের আশা, এখন যেমন পিরামিড কিংবা স্টোনহেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়, তেমনই এ ঘড়িটি নিয়ে আলোচনা হবে হাজার বছর পরে।
ঘড়িটি ড্যানি হিলস নামে এক ব্যক্তির মস্তিষ্কপ্রসূত। ১৯৮৯ সালে তিনি ঘড়িটির নকশা তৈরির কাজ শুরু করেন। এর পর ১৯৯৫ সালে ‘ওয়ার্ড’ ম্যাগাজিনে সেই পরিকল্পনা প্রকাশ করেন ড্যানি।
ঘড়িটির একটি প্রতিরূপ তৈরি হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। সেটি বর্তমানে লন্ডনের বিজ্ঞান জাদুঘরে প্রদর্শনীর জন্য রাখা রয়েছে।
জেফের রোবট কুকুরও তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। তার দাম সাড়ে ৭৪ হাজার ডলার। ১৪ কেজি ওজনের জিনিসপত্র বইতে পারে রোবট কুকুরটি। দরজাও খুলতে পারে। এমনকি তার মালিকের জন্য পানীয়ও এনে দিতে পারে সে।
এরই সঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রমোদতরী বা সুপার ইয়টের মালিক জেফ। নাম— ওয়াই ৭২১। দৈর্ঘ্য ৪১৭ ফুট। ২০১৮ সালে এটি তৈরি করার কাজ শুরু করতে বলেন অ্যামাজ়ন প্রতিষ্ঠাতা। এখন তার কাজ শেষ পর্যায়ে। দাম ৫০ কোটি আমেরিকান ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় চার হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি।
আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে থাকার জন্য একটি বাড়িও কিনেছেন জেফ। তবে তাকে শুধু বাড়ি বললে কমিয়ে বলা হয়। এককালে পোশাক এবং কাপড়ের জাদুঘর ছিল বাড়িটি। সেটিই কিনে নতুন করে সাজিয়েছেন জেফ। ভিতরে রয়েছে ১১টি শোওয়ার ঘর, ২৫টি স্নানঘর, পাঁচটি বসার ঘর এবং দু’টি লিফ্ট। বাড়িটির দাম প্রায় আড়াই কোটি আমেরিকান ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৭৩ কোটি টাকা।