২০ মার্চ অর্থাৎ আগামী রবিবার আন্তর্জাতিক সুখ দিবস। তার আগেই সুখী দেশের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনল রাষ্ট্রপুঞ্জের হয়ে কাজ করা এক সংস্থা। তাতে স্পষ্ট, সুখে নেই ভারতবাসী!
সুখী দেশের তালিকায় আরও এক বার একেবারে নীচের দিকে স্থান পেল ভারত। ওই রিপোর্টে বিশ্বের সুখী দেশের তালিকায় ভারতের ঠাঁই ১৩৬ নম্বরে।
২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতেই তৈরি হয়েছে এই রিপোর্ট। গত বারের রিপোর্টে ভারতের স্থান ছিল ১৪০-এ। তার আগের বছরের তালিকায় ১৩৩ নম্বরে ছিল ভারত।
এই নিয়ে ১০ বছর ধরে সুখী দেশের রিপোর্ট প্রকাশ করছে রাষ্ট্রপুঞ্জের হয়ে কাজ করা সংস্থা ‘সাস্টেনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশনস নেটওয়ার্ক’। বিভিন্ন দেশের মানুষকে ফোন করে নানাবিধ প্রশ্ন করা হয়। জানতে চাওয়া হয়, তাঁরা সুখী কি না বা কেন সুখী ইত্যাদি। রিপোর্ট তৈরির সময় নজরে রাখা হয় দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার, মানুষের গড় আয়ু, সামাজিক সহায়তা, কাজ করার স্বাধীনতা, দুর্নীতির মতো বিষয়গুলি। এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অক্সফোর্ডের ‘ওয়েলবিইং রিসার্চ সেন্টার’, ‘সেন্টার ফর সাস্টেনেবল ডেভেলপমেন্ট’, ‘ভ্যাঙ্কুভার স্কুল অব ইকোনমিক্স’।
ব্যক্তি স্বাধীনতা, সরকারের উপর আস্থা, সুস্থ জীবনযাপনের প্রত্যাশার মতো মাপকাঠিও মাথায় রাখা হয় এই রিপোর্ট তৈরির সময়। এই সব মাপকাঠিতে ভারতের মান যে ‘অচ্ছে’ নয়, তা স্পষ্ট।
২০১৯ সালের রিপোর্টের মতো এ বারও ভারতের উপরে রয়েছে পাকিস্তান। তবে শুধু পাকিস্তানই নয়, বাংলাদেশ, চিন, নেপাল, শ্রীলঙ্কা-সহ প্রায় সব প্রতিবেশী দেশই ভারতের উপরে রয়েছে।
সদ্য প্রকাশিত তালিকায় ১২১ নম্বরে জায়গা পেয়েছে ইমরান খানের দেশ। তবে অবনতি হয়েছে পাকিস্তানের। গত বার (২০১৬-২০১৮ সালের তথ্যের ভিত্তিতে)-এর রিপোর্টে পাকিস্তানের স্থান ছিল ৬৭ নম্বরে।
তবে মোটের উপর একই জায়গায় রয়েছে বাংলাদেশ। গত বারের রিপোর্টে বাংলাদেশের স্থান ছিল ৯৩ নম্বরে। নতুন রিপোর্টে এক ধাপ নীচে, ৯৪ নম্বরে জায়গা হল বাংলাদেশের।
অন্য দিকে, তালিকায় ২১ ধাপ উপরে উঠেছে চিন। গত বারের তালিকায় চিন ছিল ৯৩ নম্বরে। নয়া তালিকায় চিনের ঠাঁই ৭২-এ। তালিকায় শ্রীলঙ্কা রয়েছে ১২৭ নম্বরে।
পৃথিবীর মোট ১৪৬টি দেশ থেকে পাওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে এই তালিকা। তাতে একেবারে শেষে অর্থাৎ ১৪৬ নম্বরে রয়েছে আফগানিস্তান। গত বছর অগস্ট মাসেই ওই দেশে ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে। আমেরিকার সেনা আফগানিস্তানের মাটি ছাড়ার পরেই আশরফ গনিকে গদিচ্যুত করে কাবুল দখল নিয়ে সরকার গড়েছে তালিবান। এই রিপোর্টে তার অভিঘাত রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
এই নিয়ে টানা পাঁচ বার সুখী দেশের তালিকায় শীর্ষ স্থানে ফিনল্যান্ড। এর পরে রয়েছে ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, সুইৎজারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস।
মহাশক্তিধর দেশ হলেই সেখানকার মানুষ যে মহা সুখে ভরপুর হবেন, তা নয়। এই তালিকাতেই তা স্পষ্ট। সুখী দেশের তালিকায় আমেরিকার স্থান ১৬ নম্বরে। ব্রিটেন ১৭ নম্বরে রয়েছে।
আমেরিকা ও ব্রিটেনের চেয়েও নীচে ফ্রান্স (২১)। তবে জার্মানির স্থান ১৪ নম্বরে। ব্রাজিলের স্থান ৩৮-এ।
বর্তমানে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের স্থান এই তালিকায় রয়েছে ৯৮ নম্বরে। যদিও ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের তথ্যের ভিত্তিতেই তৈরি হয়েছে এই রিপোর্ট।
ইউক্রেনে সেনা অভিযান চালানো রাশিয়ার স্থান তালিকায় ৮০ নম্বরে। প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে হামলার কারণে পুতিন সরকারের বিরুদ্ধে রাশিয়ায় নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।