সামরিক ক্ষেত্রে অন্য দেশগুলির তুলনায় কয়েক কদম এগিয়ে গেল ভারত। কারণ ভারতের হাতেই এসে গেল ‘বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী’ অপারমাণবিক বোমা।
সম্প্রতি ভারতের নৌসেনা সেবেক্স-২ নামের একটি নতুন বিস্ফোরককে শংসাপত্র দিয়েছে। বিস্ফোরক তৈরির সম্পূর্ণ নতুন তিনটি সূত্র প্রয়োগ করে এটি তৈরি করা হয়েছে।
বিস্ফোরকের নতুন সূত্রগুলি আবিষ্কার করেছে ‘ইকোনমিক এক্সপ্লোসিভস লিমিটেড’। মহারাষ্ট্রের নাগপুরের একটি সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থার সহযোগী সংস্থা এটি।
সচরাচর কোনও বিস্ফোরকের শক্তি বুঝতে টিএনটি-কে মানদণ্ড হিসাবে ধরা হয়। নতুন বিস্ফোরকটি টিএনটির চেয়ে অনেক শক্তিশালী। ফলে এর ধ্বংসাত্মক শক্তিও অনেক বেশি।
সেনার একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্র বাদ দিয়ে অন্য বিস্ফোরকের তুলনায় বেশি শক্তিশালী এই সেবেক্স-২।
ফলে শত্রুদের তৈরি করা বাধা সরাতে কিংবা গোলাবর্ষণের ক্ষেত্রে ভারতীয় সেনা এ বার নতুন অস্ত্র হাতে পেয়ে গেল। ‘ইকোনমিক টাইমস’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের ‘ডিফেন্স এক্সপোর্ট প্রোমোশন স্কিম’-এর অঙ্গ হিসাবে এই বিস্ফোরকটির উপরে ধারাবাহিক ভাবে পরীক্ষা চালায় নৌসেনা।
আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পের আওতায় সম্প্রতি সেবেক্স-২ পরীক্ষা করে নৌসেনা। বিস্ফোরকটি ‘যোগ্য’ হিসাবে স্বীকৃতিও দেয়।
টিএনটির তুলনায় সেবেক্স ২.১ গুণ অধিক শক্তিশালী। তবে উৎপাদক সংস্থাটি খুব শীঘ্রই টিএনটির তুলনায় ২.৩ গুণ শক্তিশালী বিস্ফোরক আনতে চলেছে বলেও জানিয়েছে।
সেবেক্স-২-কে শংসাপত্র দেওয়ার পরেই ভারতীয় সেনার মুখপাত্রের তরফে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করা হয়। সেখানে বলা হয়, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রকে ‘আত্মনির্ভর’ করে তুলতে নতুন পদক্ষেপ করা হল।
সেবেক্স-২ তৈরি হয়েছে ‘হাই মেল্টিং এক্সপ্লোসিভ’-এর সূত্র ব্যবহার করে। বিধ্বংসী বিস্ফোরণ ঘটাতে এগুলিকে সহজেই ব্যবহার করা যাবে। এগুলি ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়া শূন্য থেকেও ছোড়া সম্ভব।
দীর্ঘ দিন ধরেই ভারত প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বিদেশি রাষ্ট্রগুলির উপর নির্ভরতা ক্রমশ কমিয়ে আনতে চাইছে। সেবেক্স-২ তৈরি এবং ব্যবহারে ছাড়পত্র দেওয়া সেই প্রক্রিয়ারই একটি অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।
দুই পড়শি রাষ্ট্র পাকিস্তান এবং চিন বরাবরই নয়াদিল্লির মাথাব্যথার কারণ। বিশেষত চিনের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং অস্ত্রের মোকাবিলা করতে সদা সচেষ্ট থাকে ভারত।
তা ছাড়া পাকিস্তানও জম্মু কিংবা কাশ্মীর সীমান্তে অনুপ্রবেশে মদত দিয়ে থাকে। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে। এই সমস্ত বিষয়ে কার্যকরী হতে পারে সেবেক্স-২।
সে ক্ষেত্রে পরমাণু বোমার মতো মারণাস্ত্রের ব্যবহার না করেও কৌশলে শত্রুকে ঘায়েল করা সম্ভব হবে। আপাতত সেই কৌশলের চাবিকাঠি নয়াদিল্লির পকেটে। প্রয়োজনে বন্ধু দেশগুলির হাতেও এই প্রযুক্তি তুলে দেওয়ার কথা ভাবছে ভারত।