ডিজিটাল লেনদেনে ক্রমশ ঝুঁকছে ভারত। অনলাইনে টাকার লেনদেনের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এত দিন নগদ টাকা বা কার্ডের মাধ্যমে টাকার লেনদেন করতেন সকলে। কিন্তু এখন অনেকেই চটজলদি টাকার লেনদেনের জন্য অনলাইন মাধ্যমকেই বেছে নিচ্ছেন। তার প্রমাণও এ বার হাতেনাতে মিলল।
‘ইউনিফায়েড পেমেন্টস ইন্টারফেস’ বা ইউপিআই-এর মাধ্যমে গত মাসে নজিরবিহীন লেনদেন হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছে ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (এনপিসিআই)।
মে মাসে ৯৪১ কোটি লেনদেন হয়েছে ইউপিআই মাধ্যমে। যা এক নজির বলে জানানো হয়েছে।
মে মাসে ইউপিআই মাধ্যমে মোট ১৪.৮৯ লক্ষ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই প্রথম এত বেশি টাকার লেনদেন হল।
এপ্রিল মাসে ৮৮৯ কোটির বেশি লেনদেন হয়েছিল এই মাধ্যমে। মার্চ মাসে এই সংখ্যা ৮৬৮ কোটি।
যে হারে দেশে ইউপিআই লেনদেনের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে ২০২৬-২৭ সালে রোজ ১০০ কোটির লেনদেন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
২০১৬ সালে দেশে ইউপিআই লেনদেনের সূচনা করা হয়েছিল। বিশ্বেও লেনদেনের জন্য এই মাধ্যমকে সাদরে গ্রহণ করা হয়েছে। আত্মপ্রকাশের পর থেকেই আস্থা অর্জন করেছে এই মাধ্যম।
ভারতে কোনও বিদেশি এলে, এ দেশে বিকিকিনির জন্য ইউপিআই মাধ্যমে লেনদেন করার সুযোগ পাবেন। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এই সুবিধা চালু করা হয়েছে।
১০টি দেশে অনাবাসী ভারতীয়রাও ইউপিআই মাধ্যমে লেনদেনের সুবিধা পাবেন। অর্থাৎ, ইউপিআই মাধ্যমে লেনদেনের জন্য তাঁদের ভারতীয় ফোন নম্বর না থাকলেও চলবে।
আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, হংকং, ওমান, কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ইংল্যান্ড— এই ১০টি দেশে অনাবাসী ভারতীয়রা ইউপিআই মাধ্যমে লেনদেন করার সুবিধা পান।
গত ৬ বছরে ইউপিআই লেনদেন লাফিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানানো হয়েছে। আগামী দিনে এই মাধ্যমে লেনদেন আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নগদে লেনদেন ছেড়ে এখন অনলাইন লেনদেনেই স্বচ্ছন্দ অনেকে। একে তো টাকা বয়ে বেড়ানোর ঝক্কি কম। তার উপর কয়েকটি পদ্ধতি মেনে মোবাইলের মাধ্যমে সহজেই লেনদেন সম্ভব।
সহজ যেমন, তেমনই বিপদও রয়েছে ইউপিআই লেনদেনে। সরকারি রিপোর্ট বলছে, ২০২২ সালে ইউপিআইয়ের মাধ্যমে লেনদেনের সময় প্রায় এক লক্ষ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে।
ভারতে ইউনিফাইড পেমেন্ট ইন্টারফেস বা ইউপিআই-এর মাধ্যমে অনলাইন লেনদেনের গতি বেড়েছে অনেকটাই। আর সেই কারণে জালিয়াতির সংখ্যা বাড়ছে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।
অর্থ মন্ত্রকের রিপোর্ট বলছে, গত বছর ইউপিআইয়ের মাধ্যমে লেনদেনের সময় প্রতারিত হয়েছেন ৯৫ হাজার মানুষ।
পেটিএম, গুগল পে, ফোন পে-র মতো ইউপিআই অ্যাপের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর সময়ই মানুষকে জালিয়াতদের খপ্পরে পড়তে হয়েছে বলেও ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে।
ঝুঁকি থাকলেও যে নগদের পাশাপাশি ইউপিআইয়ের মাধ্যমে লেনদেন ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা প্রমাণ করে ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া-র রিপোর্ট।