Jio

সস্তার অভ্যাস করিয়ে ‘বাধ্য’ করা হচ্ছে পরিষেবা ব্যবহারে! কী ভাবে টেলিকম বাজারের ‘দাদা’ হয়ে উঠল জিয়ো

বুধবার থেকেই পরিষেবা ব্যবহারের খরচ বাড়িয়েছে জিয়ো-সহ একাধিক ভারতীয় টেলিকম সংস্থা। মুকেশ অম্বানীর সংস্থা এক ধাক্কায় পরিষেবা শুল্ক বৃদ্ধি করেছে ২৫ শতাংশ অবধি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪ ১০:০৫
Share:
০১ ২৩
How Jio captures the market of Telecom sector in India

বুধবার থেকেই পরিষেবা ব্যবহারের খরচ বাড়িয়েছে জিয়ো-সহ একাধিক ভারতীয় টেলিকম সংস্থা। মুকেশ অম্বানীর সংস্থা এক ধাক্কায় পরিষেবা শুল্ক বৃদ্ধি করেছে ২৫ শতাংশ অবধি। যার ফলে আগে ২৩৯ টাকায় যে রিচার্জ হত, তা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯৯ টাকা।

০২ ২৩
How Jio captures the market of Telecom sector in India

একই সঙ্গে ৩৯৫ এবং ১৫৫৯ টাকার জনপ্রিয় দু’টি প্রিপেড প্ল্যানের খরচও বাড়িয়ে দিয়েছে তারা। ৩৯৫ টাকার বদলে গ্রাহকদের এখন গুনতে হবে ৪৭৯ টাকা। ১৫৫৯ টাকার প্ল্যান হয়েছে ১৮৯৯ টাকা।

Advertisement
০৩ ২৩
How Jio captures the market of Telecom sector in India

এর পরেই একাধিক অভিযোগ উঠে আসছে অম্বানীদের বিরুদ্ধে। কেউ কেউ দাবি করছেন, টেলিকম বাজারে একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করে এ বার পরিষেবা মূল্য বাড়াচ্ছে জিয়ো। এবং ভবিষ্যতে তারা নিজেদের পরিষেবা মূল্য আরও বাড়াবে।

০৪ ২৩

অনেকের অভিযোগ, সস্তার অভ্যাস করিয়ে পরিষেবা ব্যবহারে ‘বাধ্য’ করার কৌশল গ্রহণ করেছে জিয়ো। কিন্তু কী ভাবে টেলিকম বাজারের ‘দাদা’ হয়ে উঠল এই সংস্থা?

০৫ ২৩

জিয়োর দাবি, ভারতীয় ইন্টারনেটে ‘বিপ্লব’ এনেছে তাদের সংস্থা। এবং এ কথা সত্যি বলে মনে করেন অনেকেই।

০৬ ২৩

২০১৬ সালে ভারতীয় বাজারে প্রবেশ করে জিয়ো। তার আগে গ্রাহকদের ফোন এবং ইন্টারনেটের জন্য আলাদা আলাদা পরিষেবা মূল্য দিতে হত। কিন্তু জিয়ো এই প্রথা ভেঙে দেয়। বিনামূল্যে ফোন এবং ইন্টারনেট পরিষেবা তুলে দেয় মানুষের হাতে। যার ফলে প্রাথমিক ভাবে ক্ষতির মুখও দেখে তারা।

০৭ ২৩

যদিও বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, ভবিষ্যতে নিজেদের আধিপত্য কায়েম করতেই তখন সেই পদক্ষেপ করেছিল জিয়ো।

০৮ ২৩

২০১০ সাল নাগাদ জিয়ো নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেন মুকেশ অম্বানী। ২০১৫ সালে রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর কর্মীদের হাতে জিয়োর সিম তুলে দেওয়া হয়। পরিষেবা নিয়ে তাঁদের মতামতও জানতে চাওয়া হয়।

০৯ ২৩

এর পর ২০১৬ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে আত্মপ্রকাশ করে জিয়ো। অম্বানী ঘোষণা করেন, ফোন এবং ইন্টারনেটের জন্য আলাদা টাকা নেবে না তাঁর সংস্থা। সেই সময় ফোন করা এবং ইন্টারনেটের জন্য আলাদা আলাদা টাকা নিত বাকি ভারতীয় টেলিকম সংস্থাগুলি।

১০ ২৩

জিয়োর তরফে ঘোষণা করা হয়, জিয়ো সিম নিলে প্রথম তিন মাস ফোন এবং ইন্টারনেটের জন্য কোনও টাকা দিতে হবে না গ্রাহকদের।

১১ ২৩

এ ছাড়াও এইচডি ভিডিয়ো কল-সহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়ার কথাও জানিয়েছিল অম্বানীর সংস্থা। সব মিলিয়ে জিয়োকে নিয়ে সারা বিশ্বে হইচই পড়ে যায়।

১২ ২৩

এর পরে বিনামূল্যে ইন্টারনেট এবং ফোন করার বৈধতা আরও ছ’মাস পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এই সময় প্রায় ৩২ কোটি টাকার ক্ষতি হয় অম্বানীর সংস্থার।

১৩ ২৩

ছ’মাস শেষে জিয়ো জানায়, ফোন করার জন্য গ্রাহকদের কোনও টাকা না দিতে হলেও ইন্টারনেটের জন্য ন্যূনতম টাকা দিতে হবে তাঁদের। অনেকের মতে, ওই সময় থেকেই জিয়োর ‘দাদাগিরি’ শুরু।

১৪ ২৩

যে সংস্থা ছ’মাস বিনামূল্যে ইন্টারনেট এবং ফোন করার সুবিধা দিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছিল, ন্যূনতম পরিষেবা মূল্য চালু করতেই প্রায় ২৫০ কোটির লাভ করে তারা। কারণ সেই ছ’মাসের মধ্যে জিয়োর গ্রাহকসংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল।

১৫ ২৩

২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে জিয়োর গ্রাহকসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয় প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি। চালু হওয়ার দু’বছরের মধ্যে প্রায় পাঁচ কোটি জিয়ো ফোনও বিক্রি করে অম্বানীর সংস্থা। তাতেও ব্যাপক মুনাফা হয়।

১৬ ২৩

এর পর ২০১৮ সালে আবার পরিষেবা মূল্য বৃদ্ধি করে জিয়ো। প্ল্যানগুলির দাম বেশ কিছুটা বৃদ্ধি পায়।

১৭ ২৩

পরিষেবা মূল্য বৃদ্ধির পর জিয়ো গিগা ফাইবার পরিষেবা শুরু করে টেলিকম সংস্থা। কেব্‌লের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া শুরু করে।

১৮ ২৩

এ ছাড়াও গান, সিনেমার অ্যাপ থেকে শুরু করে ই-কমার্স সংস্থা শুরু করে জিয়ো। বাজারে আধিপত্য তৈরি করতে শুরু করে। জিয়োর মাধ্যমে অম্বানীদের সম্পত্তির পরিমাণও বৃদ্ধি পায় উল্লেখযোগ্য ভাবে। এর মধ্যেই ৩ জুলাই থেকে আবার পরিষেবা মূল্য বৃদ্ধি করল জিয়ো।

১৯ ২৩

বিশেষজ্ঞদের দাবি, বাজারে আধিপত্য তৈরির পাশাপাশি বাকি প্রতিদ্বন্দ্বীদের ধীরে ধীরে বাজার থেকে সরিয়ে দিয়েছে জিয়ো।

২০ ২৩

জিয়ো শুরুর আগে ভারতীয় বাজারে প্রায় ১০টি টেলিকম সংস্থা ছিল। বর্তমানে রয়েছে মোটে চারটি। যার মধ্যে একটি বিএসএনএল। জিয়ো ছাড়া এয়ারটেল এবং ভোডাফোন বেসরকারি। বর্তমানে ভারতের প্রায় ৮২ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। এর মধ্যে ৪৫ কোটি জিয়োর গ্রাহক।

২১ ২৩

দাবি উঠেছে, জিয়ো বিনামূল্যে পরিষেবা শুরুই করেছিল বাকি প্রতিদ্বন্দ্বীদের বাজার থেকে সরাতে। হয়েওছিল তাই। বহু সংস্থা গ্রাহকের অভাবে ক্ষতির মুখে পড়ে সংস্থা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়।

২২ ২৩

বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, গ্রাহকদের প্রাথমিক ভাবে বিনামূল্যে এবং সস্তায় পরিষেবা দিয়ে বাজার দখল করে নেয় জিয়ো। বর্তমানে বাকি যে টেলিকম সংস্থাগুলি টিকে রয়েছে, তারাও জিয়োর সঙ্গেই পরিষেবা মূল্য বৃদ্ধি করেছে।

২৩ ২৩

প্রথম দিকে, বিনামূল্যে এবং সস্তায় পরিষেবা দিলেও বর্তমানে প্রতিদ্বন্দ্বী দুর্বল হয়ে পড়ায় জিয়ো এখন ইচ্ছামতো নিজেদের পরিষেবা মূল্য বৃদ্ধি করছে বলেই দাবি অনেকের।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement