১৯৮৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ‘ইলজ়াম’ ছবিটি। এই ছবি থেকেই নাকি বাদ পড়ে যান মিঠুন চক্রবর্তী। তাঁর পরিবর্তে আসেন নতুন মুখ।
মিঠুনের বদলে যখন অভিনয় করছেন, তখন তো সেই নায়ক আর যেমন তেমন হবেন না। ছিলেনও না অবশ্য। অভিনয়ে, নাচে, কমেডিতে এমনকি অ্যাকশনেও দর্শকের মন জিতে নিয়েছিলেন তিনি, গোবিন্দ।
শশী কপূর, শত্রুঘ্ন সিংহ, প্রেম চোপড়া এবং নীলমের সঙ্গে ‘ইলজ়াম’ ছবিতে অভিনয় করে গোবিন্দ বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে, তিনি লম্বা রেসের ঘোড়া। এর আগে হাতেগোনা কয়েকটি ছবিতে কাজ করলেও অভিনেতা হিসাবে বিশেষ নামডাক হয়নি তাঁর।
‘ইলজ়াম’ ছবিটি যেন গোবিন্দের জীবনে মাইলফলক গড়ে তোলে। তবে এই ছবিতে সুযোগ পাওয়ার নেপথ্যে রয়েছে অন্য গল্প। গোবিন্দের বাড়ি মুম্বইয়ের জুহুতে।
গোবিন্দের বাড়ির কাছেই থাকতেন তাঁর মাসি। ফলে গোবিন্দের মা বেশির ভাগ সময় মাসির বাড়িতে গিয়ে থাকতেন। সেই সূত্রে যেতেন গোবিন্দও।
গোবিন্দের মাসির প্রতিবেশী ছিল তেজ সপ্রু। তেজের মায়ের সঙ্গে গোবিন্দের মা এবং মাসির বন্ধুত্ব ছিল। রাকেশ নাথেরও যাতায়াত ছিল তেজের বাড়িতে।
গোবিন্দ যখন তাঁর মাসির বাড়িতে গিয়েছিলেন, সেই সময় তেজের বাড়িতে ছিলেন রাকেশ। গোবিন্দকে দেখে এক নজরে পছন্দ হয়ে যায় রাকেশের।
রাকেশ মাঝেমধ্যেই গোবিন্দের মা এবং মাসিকে বলতেন, ‘‘তোমাদের ছেলে এক দিন খুব বড় অভিনেতা হবে।’’ গোবিন্দের মধ্যে তিনি কিছু একটা লক্ষ করেছিলেন যে কারণে তেজকেও একই কথা বলতেন। গোবিন্দকে একটি ছবিতে কাজ করার সুযোগ দিতে চাইতেন রাকেশ। সেই সুযোগও মেলে।
‘ইলজ়াম’ ছবির জন্য কাজ শুরু করেছিলেন পেহলাজ নিহালানি। এই ছবিতে কাজ করার কথা ছিল মিঠুনের। কিন্তু পরে মিঠুন সেই ছবি থেকে বাদ পড়ে যান। নায়কের ভূমিকায় নতুন মুখ খুঁজছিলেন পেহলাজ।
ছবির জন্য এমন এক জন নায়ককে খুঁজছিলেন পেহলাজ, যিনি অভিনয় ছাড়াও ভাল নাচ করতে পারেন। অল্পবয়সি নায়কের খোঁজে ছিলেন পেহলাজ।
গোবিন্দের কথা পেহলাজকে জানিয়েছিলেন রাকেশ। তিনি পেহলাজকে জানান যে, তিনি যেমন নায়ক খুঁজছেন, গোবিন্দ ঠিক তেমনই। তার পর গোবিন্দকে নিয়ে পেহলাজের সঙ্গে দেখা করতে চলে যান রাকেশ।
অবশ্য গোবিন্দকে আগে থেকে রাকেশ জানিয়ে রাখেন যে, তাঁকে হয়তো নেচে দেখাতে হতে পারে। তাই নিজের সঙ্গে গানের একটি ক্যাসেটও নিয়ে গিয়েছিলেন গোবিন্দ।
পেহলাজের বাড়িতেই অডিশন হয় গোবিন্দের। নায়কের মুখে কয়েকটি সংলাপ শোনার পর তাঁকে নাচ করে দেখাতে বলেন পেহলাজ। গোবিন্দও ক্যাসেট চালিয়ে নাচ করে দেখান। গোবিন্দের পারফরম্যান্স দেখে মুগ্ধ হন পেহলাজ। সেখানেই গোবিন্দকে ‘ইলজ়াম’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন গোবিন্দকে।
‘ইলজ়াম’ ছবিতে অভিনয় করার পর বলিউডে পরিচিতি তৈরি করে ফেলেন গোবিন্দ। তার পর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। একের পর এক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করে সেই গোবিন্দই হয়ে যান সকলের প্রিয় ‘চিচি’।