হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রে সেবির চেয়ারপার্সন মাধবী পুরী বুচ এবং তাঁর স্বামী ধবল বুচ। আদানি শিল্পগোষ্ঠীতে তাঁদের অংশীদারি রয়েছে এই অভিযোগ ওঠার পর থেকে জাতীয় রাজনীতিতে নতুন করে আলোড়ন শুরু হয়েছে।
রিপোর্টে উল্লিখিত আদানি-যোগের অভিযাগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবির কর্ণধার মাধবী এবং তাঁর স্বামী। তাঁদের ‘চরিত্রহনন’ করার জন্যই এমন অভিযোগ তোলা হচ্ছে বলে পাল্টা বিবৃতি দিয়েছেন দু’জনেই।
কে এই মাধবী পুরী ও এবং তাঁর স্বামী ধবল বুচ? আদানিদের সঙ্গে আর্থিক অনিয়মে কেনই বা নাম জড়িয়েছে সেবির এই শীর্ষকর্তা এবং তাঁর স্বামীর? হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, আদানিদের সঙ্গে বিদেশে বিপুল পরিমাণ শেয়ারের মালিকানা রয়েছে বুচ দম্পতির হাতে।
মাধবী পুরী বুচ ২০২২ সালের মার্চে সেবির চেয়ারপার্সন হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তার আগে তিনি সেবির নিয়ন্ত্রণ, বিনিয়োগ এবং তথ্যপ্রযুক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরগুলির তদারকির দায়িত্বে ছিলেন।
এ দেশের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে তিনি তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। ২০০৯ সালে সেই ব্যাঙ্কের এগ্জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর বোর্ডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদে উন্নীত হন মাধবী।
তবে সেবির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আগে সাংহাইয়ে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের কনসালট্যান্ট হিসাবে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর। বেসরকারি ইক্যুইটি ফার্ম গ্রেটার প্যাসিফিক ক্যাপিটালের সিঙ্গাপুর অফিসের শীর্ষপদে ছিলেন মাধবী।
১৯৬৬ সালের মুম্বইয়ে জন্ম মাধবী পুরীর। নয়াদিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে অঙ্কে স্নাতক হওয়ার পর আইআইএম আমদাবাদ থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
তাঁর স্বামী ধবল বুচ ১৯৮৪ সালে আইআইটি দিল্লি থেকে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। তিনি ব্ল্যাকস্টোন এবং আলভারেজ ও মার্শাল নামে একটি সংস্থার সিনিয়র অ্যাডভাইসার পদে নিযুক্ত।
সেই সঙ্গে তিনি গিন্ডান বোর্ডের নন এগ্জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর। এর আগে ধবল ভারতীয় একটি সংস্থার এগ্জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর এবং চিফ প্রোকিয়োরমেন্ট অফিসার পদেও দীর্ঘ দিন নিযুক্ত ছিলেন।
২০২০ সালের মার্চ মাসে সেবির চেয়ারপার্সন নিযুক্ত হন মাধবী। তার পরই ব্ল্যাকস্টোন নামে একটি সংস্থায় উপদেষ্টা হিসাবে যোগ দেন মাধবীর স্বামী ধবল বুচ। ব্ল্যাকস্টোনকে সুবিধা পাইয়ে দিতে আরআইআইটির বহু নিয়ম পাল্টে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে।
রিপোর্টে এ-ও দাবি করা হয়, সেবিতে সদস্যপদ পাওয়ার পর নজরদারি এড়াতে মাধবীর নামে থাকা সমস্ত বিদেশি বিনিয়োগ নিজের নামে করে নেন তাঁর স্বামী।
ডেকান হেরাল্ডের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সেবি কর্তা এবং তাঁর স্বামীর সম্পত্তির পরিমাণ ৮৩ কোটি টাকা।