২০২৩ সালের আইপিএলের ৩৯তম ম্যাচ চলছে। গুজরাত টাইটানস বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্স। টান টান উত্তেজনা। এর মধ্যেই দর্শকাসনে চলে যায় ক্যামেরা। সেখানে বসে গুজরাত দলের হয়ে চিৎকার করছেন এক তরুণী। ঘন কালো ভ্রুযুগল। টানা টানা চোখ। চোখে রহস্য। কে সেই রহস্যময়ী?
সেই ছবি দেখার পর থেকেই খোঁজ শুরু হয় তরুণীর। অনেকেই বলতে থাকেন, এ মেয়ে বেশ চেনা চেনা। সমাজমাধ্যম ঘেঁটে দেখা যায়, তরুণীর নাম সাহিবা শেরনি। সেখানে তাঁর বেশ নামডাকও রয়েছে।
সমাজমাধ্যম থেকেই জানা গিয়েছে, সাহিবা পেশায় মডেল হওয়ার পাশাপাশি এক জন ফ্যাশন ডিজ়াইনারও। জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো এমটিভি রোডিজ-এও অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি।
সাহিবা আদতে মোহালির বাসিন্দা। আসল নাম সাহিবা কউর। তাঁর জন্ম মোহালিতে নয়। হরিয়ানার গুরুগ্রামে। সমাজমাধ্যমে তিনি জনপ্রিয় সাহিবা শেরনি নামে।
এই নাম পেলেন কী ভাবে? তিনি নিজেই জানিয়েছেন একটি সাক্ষাৎকারে। সাহিবা জানিয়েছেন, এমটিভি রোডিজে যখন অংশগ্রহণ করেছিলেন, তখন ভিজে রণবিজয় সিংঘা তাঁকে এই নাম দিয়েছিলেন। তার পরেই সেই নাম নিজের শরীরে ট্যাটু করিয়ে নেন সাহিবা।
১৯৯০ সালের ১৩ মে গুরুগ্রামে সাহিবার জন্ম। মায়ের নাম গুরবিন্দর কউর শেঠি। বাবার নাম দেবীন্দ্র সিংহ শেঠি। সাহিবার এক বোনও রয়েছে। নাম আসিত কউর।
দিল্লিতে পড়াশোনা করেছেন সাহিবা। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পড়াশোনা শেষ করে পোশাক নকশা করার কাজে যোগ দেন সাহিবা।
মা গুরবিন্দরের সঙ্গে মিলে ডিজ়াইনার স্টুডিয়ো তৈরি করেন সাহিবা। এক সাক্ষাৎকারে সাহিবা জানিয়েছিলেন, পোশাকের নকশা করা তাঁর ভালবাসা, আবেগ। সেই প্যাশন থেকেই নকশা করেন তিনি। ক্রেতারাও দারুণ পছন্দ করেন মা-মেয়ের দোকানের পোশাক।
এমটিভি রোডিজ রিয়্যাল হিরো দিয়ে টিভির পর্দায় হাতেখড়ি সাহিবার। ২০২০ সালে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। তার পর ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন সমাজমাধ্যমে।
ইনস্টাগ্রামে সাহিবার অনুরাগীর সংখ্যা এক লক্ষ ২৮ হাজার। প্রায়ই নিজের ছবি পোস্ট করেন তিনি। আইপিএল ম্যাচে তাঁর একটি ছবি ভাইরাল। বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে পার্টি করতে খুব ভালোবাসেন সাহিবা। সেই ছবিও প্রায়ই দেন সমাজমাধ্যমে।
সমাজমাধ্যমে পোস্ট করা ছবি থেকেই জানা গিয়েছে, ট্যাটুর প্রতি দারুণ দুর্বল সাহিবা। সারা শরীরে রয়েছে একাধিক ট্যাটু। সেই নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়।
সাহিবার বয়স ২৬ বছর। তাঁর সারা শরীরে ২৭টি ট্যাটু রয়েছে। কোনওটি ছবি, কোনওটি আবার লিপি। পঞ্জাবি ভাষায় ‘পঞ্জাব’ও লেখা রয়েছে তাঁর শরীরে।
কেন এত ট্যাটু করেন সাহিবা? তিনি বলেন, ‘‘প্রতিটি ট্যাটু আমার ভাবনা, বিশ্বাস, যা আমি ভালবাসি, তার প্রতিফলন।’’
সাহিবা জানান, চার বছর আগে প্রথম বার ট্যাটু করিয়েছিলেন তিনি। তখন নেহাতই শখে আর সাজের জন্য করিয়েছিলেন। কিন্তু ক্রমে তা আর সাজের অঙ্গ হয়ে থাকেনি। তিনি জানান, যা বিশ্বাস করেন, তা-ই নিজের হাতে লিখে রাখেন।
গত বছর পঞ্জাবে খুন হন পপ তারকা সিধু মুসেওয়ালা। তাঁকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়ে হাতে ‘২৯৫’ উল্কি আঁকিয়েছিলেন সাহিবা। তিনি জানান, এই ট্যাটু তাঁকে জীবনে সব কিছু সহ্য করার শক্তিও জোগায়।