Lok Sabha’s Speaker Post

তাঁর ভোটে পড়ে যায় এনডিএ সরকার! ২৫ বছরের পুরনো ঘটনা ফের চর্চায়, ভেসে উঠলেন সে দিনের ‘নায়ক’

৮০ বছর বয়সি এই নেতার সঙ্গে কংগ্রেস পরিবারের নিবিড় সম্পর্ক। তবে ২০১৫ সালে সেই সম্পর্কে ছেদ ঘটে। কংগ্রেসের ‘হাত’ ছাড়েন তিনি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২৪ ০৯:০৭
Share:
০১ ২৩
Giridhar Gamang, the MP whose vote led to thefall of the Vajpayee Government in 1999

নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে তৃতীয় বার দেশের সরকার চালানোর ভার পড়েছে এনডিএ-র কাঁধে। রবিবারই মোদী-সহ ৭২ জন সাংসদ মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছেন। সোমবার মন্ত্রক বণ্টনও শেষ হয়েছে। ৩০ জন পূর্ণমন্ত্রী, ৩৬ জন প্রতিমন্ত্রী এবং পাঁচ জন স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী মঙ্গলবার থেকেই নিজেদের কাজ শুরু করছেন। এই আবহে হঠাৎই আলোচনায় উঠে এলেন গিরিধর গামাং!

০২ ২৩
Giridhar Gamang, the MP whose vote led to thefall of the Vajpayee Government in 1999

কেন গিরিধরকে নিয়ে আলোচনা চলছে, সেই প্রসঙ্গে আসার আগে জেনে নেওয়া যাক রাজনীতিতে তাঁর প্রাসঙ্গিকতা। ৮০ বছর বয়সি এই নেতার সঙ্গে কংগ্রেস পরিবারের নিবিড় সম্পর্ক। তবে ২০১৫ সালে সেই সম্পর্কে ছেদ ঘটে। কংগ্রেসের ‘হাত’ ছাড়েন তিনি।

Advertisement
০৩ ২৩
Giridhar Gamang, the MP whose vote led to thefall of the Vajpayee Government in 1999

কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন গিরিধর। ঠিক তার আগের বছরই মনমোহন সিংহের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারকে গদিচ্যুত করে প্রথম বার ক্ষমতায় আসেন মোদী। পালাবদলের হাওয়ায় গা ভাসিয়ে বিজেপিতে যুক্ত হয়ে যান গিরিধর।

০৪ ২৩

তবে আট বছরেই বিজেপি সম্পর্কে মোহভঙ্গ হয় গিরিধরের। পদ্মশিবির ছেড়ে আবারও নিজের পুরনো দলে প্রত্যাবর্তন করেন তিনি। বিজেপি ত্যাগের সময় তাঁর মুখে শোনা গিয়েছিল ‘অভিমানের’ কথা। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, অপমানিত হয়েই দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

০৫ ২৩

ওড়িশার প্রবীণ রাজনীতিবিদদের মধ্যে অন্যতম নাম গিরিধর। শুধু ওড়িশা নয়, জাতীয় রাজনীতিতেও তাঁর প্রভাব কম ছিল না। এক সময়ে জাতীয় কংগ্রেসের প্রভাবশালী মুখ ছিলেন গিরিধর।

০৬ ২৩

কোরাপুট লোকসভা কেন্দ্র থেকে নজির গড়ে ন’বার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবেও কিছু দিন দায়িত্ব সামলেছেন এই প্রবীণ নেতা।

০৭ ২৩

ওড়িশার দিবিরিসিঙ্গি গ্রামে ১৯৪৩ সালের ৮ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন গিরিধর। পরিবার ছিল কংগ্রেসপন্থী। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ১৯৭২ সালে প্রথম বার লোকসভা ভোটে জেতেন গিরিধর।

০৮ ২৩

তার পর টানা ৩৭ বছর সাংসদ ছিলেন গিরিধর। তবে তার মধ্যেই তিনি ১০ মাসের জন্য ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীও হন। ১৯৯৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলান এই প্রবীণ নেতা।

০৯ ২৩

শুধু মুখ্যমন্ত্রী নন, এই সময়ে জাতীয় রাজনীতিতেও তিনি ছিলেন অন্যতম আলোচিত নাম। কারণ সংসদে তাঁর একটা ভোট বদলে দিয়েছিল জাতীয় রাজনীতির পটভূমি।

১০ ২৩

১৯৯৯ সাল। গিরিধর তখন ১২তম সংসদের সদস্য। সে সময় তাঁকে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার অনুরোধ করা হয়। তিনি সেই অনুরোধ রাখেন। কিন্তু সাংসদপদ ছাড়েননি। কেন্দ্রে তখন অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার।

১১ ২৩

১৯৯৯ সালে সংসদে চাপে পড়ে বাজপেয়ী সরকার। বিরোধীরা সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসে। সরকার টিকিয়ে রাখতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতেই হত বাজপেয়ীকে।

১২ ২৩

অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটাভুটিতে হেরে যায় বাজপেয়ী সরকার। প্রস্তাবের পক্ষে ২৭০ ভোট পড়ে। বিপক্ষে ২৬৯। একটি ভোট কম পড়ায় সরকারের পতন ঘটে। সে সময়ই আলোচনা শুরু হয় গিরিধরকে নিয়ে।

১৩ ২৩

সাংসদপদ না ছাড়ায় অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটাভুটিতে অংশ নিয়েছিলেন গিরিধর। কংগ্রেসের সাংসদ হওয়ায় অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষেই তাঁর ভোট পড়ে। ওই একটি ভোটই ব্যবধান তৈরি করে দেয়।

১৪ ২৩

গিরিধরের ভোট নিয়ে আপত্তি তুলেছিল এনডিএর শরিক দলগুলি। তাদের দাবি ছিল, মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর কেন তিনি সাংসদপদ ছাড়লেন না? এটা কি নীতিবিরুদ্ধ নয়? যদিও সেই সব যুক্তি তখন ধোপে টেকেনি। ১৩ মাসে বাজপেয়ী সরকারের পতন ঘটে।

১৫ ২৩

যদিও পরের বছর আবারও লোকসভা নির্বাচনে জিতে পুনরায় ক্ষমতা দখল করেন বাজপেয়ী। কিন্তু তার পরেও গিরিধরের ভোট নিয়ে বিতর্কের আগুন নেভেনি।

১৬ ২৩

গিরিধর যদি সে সময় ভোটদান থেকে বিরত থাকতেন, তবে ছবিটা অন্য রকম হলেও হতে পারত। নিয়ম অনুযায়ী, কোনও প্রস্তাবের পক্ষে-বিপক্ষে সমপরিমাণ ভোট পড়লে সংসদের অধ্যক্ষ তাঁর ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। কারণ তাঁর ভোটই নির্ণায়ক ভোট হয়ে দাঁড়ায়।

১৭ ২৩

১৯৯৮ সালে লোকসভা ভোটের সময় এনডিএ-র সঙ্গে ছিল চন্দ্রবাবু নায়ডুর দল তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি)। বাজপেয়ী সরকারকে সমর্থন জানালেও টিডিপি মন্ত্রিসভায় কোনও পদ দাবি করেনি। তবে স্পিকারের পদের দাবি জানান চন্দ্রবাবু।

১৮ ২৩

স্পিকার পদের জন্য চন্দ্রবাবুর মনোনীত প্রার্থী ছিলেন জিএমসি বালযোগী। টিডিপির দাবি মেনে নিয়েছিলেন বাজপেয়ী। স্পিকার পদ ছেড়ে দেওয়া হয় টিডিপিকে। বাজপেয়ীর প্রথম জমানায় সংসদের অধ্যক্ষ হন বালযোগী।

১৯ ২৩

গিরিধর যদি ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকতেন, তবে বালযোগী ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পেতেন। অনেকের মতে, সে সময় পরিস্থিতি অনুযায়ী বালযোগীর ভোট অনাস্থা প্রস্তাবের বিপক্ষে পড়ত। সরকারের পতন ঘটত না।

২০ ২৩

স্পিকার পদের গুরুত্ব কতটা, তা অজানা নয় চন্দ্রবাবুর। তাই প্রথম থেকেই সেই পদের দাবি জানিয়ে আসছেন তিনি। বিজেপি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় টিডিপিকে বিমান মন্ত্রক ছেড়ে দিলেও চন্দ্রবাবু এখনও লোকসভার স্পিকারের পদের দাবিতে অনড়।

২১ ২৩

রবিবার চন্দ্রবাবু নায়ডুর তেলুগু দেশম পার্টির দুই সাংসদ মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। রামমোহন নায়ডু পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। চন্দ্রশেখর পেম্মাসানি শপথ নেন প্রতিমন্ত্রী হিসাবে।

২২ ২৩

তেলুগু দেশমের দাবি ছিল পরিকাঠামো সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক। সেই দাবি মেনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় তেলুগু দেশমকে বিমান মন্ত্রক ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। চন্দ্রশেখর পেম্মাসানিকে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক ও যোগাযোগ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। কিন্তু তার পরও স্পিকার পদের দাবি থেকে সরতে নারাজ চন্দ্রবাবু।

২৩ ২৩

স্পিকার পদের গুরুত্ব নিয়ে যখন আলোচনা চলছে, তখনই জাতীয় রাজনীতে ভেসে উঠলেন গিরিধর, চর্চায় উঠে এল তাঁর সেই ‘বিতর্কিত’ ভোটের প্রসঙ্গ।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement