Bollywood Gossip

মাদক পাচারকাণ্ড থেকে ধর্ষণের অভিযোগ, ‘কলঙ্ক’ লেগে কেরিয়ার শেষ হয় যে বলি তারকাদের

এক মহিলার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চেয়েছিলেন শক্তি। তার বিনিময়ে ওই মহিলাকে ছবিতে কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। শক্তির একটি ভিডিয়োও প্রকাশ্যে এসেছিল।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২৫ ১০:৫০
Share:
০১ ২২
Mamta Kulkarni and Shakti Kapoor

বড় পর্দায় অভিনয় করবেন বলে হাজারো স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলেন অনেকে। কিন্তু শুধুমাত্র পেশাগত জীবনেই যে পরিচিতি পেয়েছেন তা নয়, তাঁদের নামের সঙ্গে ‘কলঙ্ক’ এমনই ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে পড়েছিল যে, অভিনয় থেকেই দূরে সরে গিয়েছেন তাঁরা। বলি তারকাদের সেই তালিকায় রয়েছে মমতা কুলকার্নি থেকে শুরু করে শক্তি কপূরের নাম। কারও গোপন ভিডিয়ো ফাঁস হয়েছে। আবার কারও বিরুদ্ধে রয়েছে ধর্ষণের অভিযোগ।

০২ ২২
Mamta Kulkarni with Salman Khan

নব্বইয়ের দশকে ‘করণ অর্জুন’, ‘ঘাতক’, ‘তিরঙ্গা’র মতো বহু হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন মমতা কুলকার্নি। ইন্ডাস্ট্রিতে একের পর এক ব্লকবাস্টার ছবি উপহার দিয়ে জনপ্রিয় হয়েছিলেন মমতা। ২০০২ সালে ‘কভি তুম কভি হম’ ছবিতে শেষ বারের মতো অভিনয় করতে দেখা যায় মমতাকে। তার পর ইন্ডাস্ট্রি থেকে একেবারে উধাও হয়ে যান তিনি। চার বছর পর মমতার নাম উঠে আসে মাদক পাচারকাণ্ডে।

Advertisement
০৩ ২২
Mamta Kulkarni

বলিপাড়ার অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায়, ভিকি গোস্বামী নামে এক মাদক পাচারকারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন মমতা। দু’হাজার কোটি টাকার মাদক পাচারকাণ্ডের তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে যে, এই পরিকল্পনার সময় মমতাকে অন্য অভিযুক্তদের সঙ্গে একই হোটেলে দেখা গিয়েছিল।

০৪ ২২

মমতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হলে তিনি জানান যে, তাঁকে অকারণে ফাঁসানো হচ্ছে। এমনকি, ভিকির সঙ্গে সম্পর্কের কথাও অস্বীকার করেন তিনি। এর পর মুম্বই ছেড়ে ভিকি এবং মমতা দু’জনেই দুবাই চলে যান। ভিকির পাঁচ বছরের জেলের শাস্তি হয়। জেল থেকে ফিরে এলে মমতাকে নিয়ে কেনিয়ায় চলে যান ভিকি। শোনা যায় যে, ২০১৩ সালে দু’জনে বিয়ে করেন। যদিও বিয়ের কথা কখনও স্বীকার করেননি মমতা।

০৫ ২২

চলতি বছর মহাকুম্ভে কিন্নর আখড়ায় সন্ন্যাস গ্রহণ করতে দেখা যায় মমতাকে। আখড়া থেকে তাঁকে অপসারণ করা হলেও বর্তমানে সন্ন্যাসিনী হয়েই দিন কাটাচ্ছেন তিনি। অভিনয়ে আর ফেরার ইচ্ছা নেই, ঘোষণা করেছেন মমতা।

০৬ ২২

২০০৫ সালে ‘হাজারোঁ খোওয়াইশে অ্যায়সি’ ছবির মাধ্যমে বলিপাড়ায় কেরিয়ার শুরু করেছিলেন শাইনি আহুজা। ‘ভুল ভুলাইয়া’, ‘লাইফ ইন আ... মেট্রো’, ‘গ্যাংস্টার’-এর মতো একাধিক হিট ছবি দর্শককে উপহার দিয়েছেন শাইনি। কিন্তু বর্তমানে বলিপাড়া থেকে দূরে রয়েছেন অভিনেতা।

০৭ ২২

২০০৯ সালের জুন মাসে শাইনির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, ১৯ বছর বয়সি পরিচারিকাকে ধর্ষণ করেছিলেন অভিনেতা। ২০১১ সালে আদালতের তরফে শাইনিকে সাত বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। অভিনেতাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে অবশ্য জামিনে ছাড়া পেয়ে যান তিনি। কিন্তু বড় পর্দায় নিজের কেরিয়ার পুনর্নির্মাণ করতে পারেননি শাইনি। ২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ওয়েলকাম ব্যাক’ ছবিতে শেষ অভিনয় দেখা গিয়েছে তাঁর।

০৮ ২২

হিন্দি ফিল্মজগতে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করে রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন শক্তি কপূর। অভিনেতার কেরিয়ারে রয়েছে ২০০টিরও বেশি ছবি। ২০১১ সালে ‘বিগ বস্’ রিয়্যালিটি শোয়ের পঞ্চম পর্বে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। তবে অভিনেতার জীবনে বিতর্ক কম নয়।

০৯ ২২

বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, এক মহিলার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চেয়েছিলেন শক্তি। তার বিনিময়ে ওই মহিলাকে ছবিতে কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। শক্তির একটি ভিডিয়োও প্রকাশ্যে এসেছিল। সেই ভিডিয়োয় অশালীন মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছিল শক্তিকে। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।

১০ ২২

ভিডিয়োয় এক মহিলার উদ্দেশে শক্তিকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘তুমি যদি অভিনয়ে নামতে চাও তা হলে আমি যা বলব তোমাকে তা-ই করতে হবে। তোমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে চাই আমি।’’ শক্তি স্বীকার করেছিলেন যে, তিনি তিন জন বলি অভিনেত্রীর সঙ্গেও শারীরিক ভাবে ঘনিষ্ঠ হয়েছিলেন। শক্তির ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে এলে তাঁকে বলিপাড়া থেকে প্রায় বহিষ্কৃত করা হয়েছিল।

১১ ২২

শক্তি দাবি করেছিলেন যে ভিডিয়োটি অসত্য। ওই মহিলাই নাকি বার বার শক্তিকে হুমকি দিচ্ছিলেন বলে দাবি করেন অভিনেতা। হোটেলের ঘরে এই মহিলার সঙ্গে দেখা করতে না গেলে নাকি তিনি আত্মহত্যার ভয় দেখাতেন বলেও দাবি করেছিলেন শক্তি। পরে অবশ্য অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় শক্তির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা সরে যায়। তবে এর ফলে কেরিয়ারে বড় ক্ষতি হয় শক্তির।

১২ ২২

২০১৯ সালে ‘লুসিফার’ নামের মালয়ালম ভাষার একটি ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় শক্তিকে। তার পর আর বড় পর্দায় অভিনয় দেখা যায়নি তাঁর। ২০২২ সালে ওটিটির পর্দায় মুক্তি পাওয়া ‘গিল্টি মাইন্ডস’ নামের একটি ওয়েব সিরিজ়ে ছোটখাটো একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি।

১৩ ২২

প্রয়াত অভিনেতা ফিরোজ় খানের পুত্র ফারদিন খান বলিপাড়ায় পা রেখেছিলেন ১৯৯৮ সালে। কিন্তু কেরিয়ার শুরুর তিন বছরের মধ্যেই মাদক মামলায় নাম জড়িয়ে পড়ে ফারদিনের। নাসির আব্দুল করিম নামে এক মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ন’গ্রাম কোকেন বিক্রির অভিযোগ ওঠে। সেই সূত্রে ফারদিনের নাম প্রকাশ্যে এসেছিল।

১৪ ২২

২০০১ সালে জুহু পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন ফারদিন। কিন্তু অভিনেতা জানিয়েছিলেন যে, তিনি মাদক পাচারকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত নন। তিনি এক মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এক গ্রাম কোকেন কিনেছিলেন। মাদককাণ্ডের সঙ্গে ফারদিনের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় তাঁর কেরিয়ারের রেখচিত্র ক্রমশ নিম্নমুখী হতে শুরু করে। বহু বছর অভিনয়জগৎ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখেন তিনি। দীর্ঘ বিরতির পর ‘হীরামন্ডি’ নামের ওয়েব সিরিজ়ের হাত ধরে অভিনয়ের দুনিয়ায় ফিরে আসেন তিনি।

১৫ ২২

ছোট পর্দায় অভিনয়ের পাশাপাশি সঞ্চালনা করেছেন। অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছেন বড় পর্দায়ও। সেই অমন বর্মা জড়িয়ে পড়েছিলেন ‘কাস্টিং কাউচ’ বিতর্কেও। ২০০৫ সালে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োয় (সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) দেখা গিয়েছিল যে, অমন এক উঠতি অভিনেত্রীকে হিন্দি ছবিতে একটি চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার পরিবর্তে যৌন সম্পর্কের প্রস্তাব দিচ্ছেন। এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর অমনের কেরিয়ারে প্রভাব পড়ে। কানাঘুষো শোনা যায়, সেই কারণেই নাকি অভিনয়ের প্রস্তাব খুব একটা পান না অমন।

১৬ ২২

পিতা আদিত্য পাঞ্চোলি এবং মাতা জ়ারিনা ওয়াহাব— দু’জনেই বলিপাড়ার সঙ্গে যুক্ত। বাবা-মা দু’জনেই অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকায় তাঁদের পুত্র সুরজ পাঞ্চোলিও বলিপাড়ায় কেরিয়ার গড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর প্রেমিকার আত্মহত্যার মামলায় নাম জড়িয়ে পড়েছিল সুরজের।

১৭ ২২

২০১৩ সালের ৩ জুন মুম্বইয়ে নিজের ফ্ল্যাটে আত্মহত্যা করেন ‘নিঃশব্দ’ ছবির অভিনেত্রী জিয়া খান। বলিপাড়া সূত্রে খবর, সুরজের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন অভিনেত্রী। তাই অভিযোগের আঙুল উঠেছিল সুরজের দিকে।

১৮ ২২

২০১৪ সাল থেকে জিয়া খানের আত্মহত্যা মামলায় অভিযুক্ত হন সুরজ। ১০ বছর পর মামলার নিষ্পত্তি হয়। আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হন তিনি। কিন্তু এর ফলে কেরিয়ারে প্রভাব পড়ে সুরজের। ২০১৫ সালে ‘হিরো’ ছবির হাত ধরে বলিউডে পা রাখলেও তাঁর কেরিয়ার ঝুলি এক রকম ফাঁকাই পড়ে রয়েছে।

১৯ ২২

রুপোলি পর্দায় এক সময় সলমন খান, সঞ্জয় দত্ত, সুনীল শেট্টিদের মতো সুপারস্টারদের সঙ্গে অভিনয় করেছেন নব্বইয়ের দশকের অভিনেত্রী মণিকা বেদী। তবে এক গ্যাংস্টারের প্রেমে পড়ার কারণে তাঁকে হাজতবাসও করতে হয়েছিল। কানাঘুষো শোনা যায়, মুম্বইয়ের ডন আবু সালেমের সঙ্গে একসময় ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল অভিনেত্রীর।

২০ ২২

১৯৯৮ সালের শেষের দিকে দুবাইয়ে একটি শোয়ে আবু সালেমের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল মণিকার। আবু নাকি তখন অন্য নামে নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন। মুম্বইয়ে ফেরার পরও তাঁদের মধ্যে যোগাযোগ থেকে গিয়েছিল। প্রায়ই ফোনে কথা হত তাঁদের। এই ভাবেই বন্ধুত্ব ক্রমশ গাঢ় হয়ে ওঠে।

২১ ২২

টানা ন’মাস ফোনালাপের পর আবু সালেমকে ভালবেসে ফেলেছিলেন মণিকা। মনের মানুষের সঙ্গে দেখা করতে দুবাই উড়ে গিয়েছিলেন মণিকা। সেখানে গিয়েই সত্য জানতে পেরেছিলেন তিনি। সেই সময় পর্তুগালে গিয়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন আবু সালেম। তখনও তাঁর সঙ্গী হয়েছিলেন মণিকা।

২২ ২২

২০০৫ সালে পর্তুগালের রাজধানী লিসবনের বিমানবন্দরে আবু সালেমের সঙ্গে নকল পাসপোর্ট নিয়ে ধরা পড়েছিলেন মণিকা। বিচারে তাঁর তিন বছরের হাজতবাস হয়‌েছিল। পর্তুগালের জেলে তিন বছর কাটানোর পর ভারতে ফিরে আসেন তিনি। এখানেও তাঁর জেল হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একই অপরাধে দু’দেশেই যেন তাঁকে জেল খাটতে না হয় সে বিষয়ে আবেদন জানান তিনি। তাঁর আবেদন মঞ্জুর হয়। কিন্তু অভিনয়জগতে আর নিজের জায়গা তৈরি করতে পারেননি মণিকা।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement