শুক্রবার মুকেশ অম্বানীর কনিষ্ঠ পুত্র অনন্ত অম্বানী তাঁর দীর্ঘকালীন প্রেমিকা রাধিকা মার্চেন্টের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন। তিন দিন ধরে মুম্বইয়ের জিয়ো ওয়ার্ল্ড কনভেশন সেন্টারে চলছে রাজকীয় অনুষ্ঠান।
দেশ-বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে রাজনীতিবিদ, শিল্পপতি এবং তারকাদের আসর জমেছে টিনসেল নগরীতে। তাঁদের জন্য অম্বানীদের তরফে এলাহি আয়োজন করা হয়েছে।
১২ জুলাই থেকে পর পর তিন দিন যেন মুম্বই শহরে শুধুমাত্র তারকাদেরই ঢল। সাধারণ মানুষের জন্য এই শহর যেন স্তব্ধ। অম্বানী-পুত্রের বিয়ে বলে কথা! অতিথিদের যেন যানজটের সমস্যায় না পড়তে হয়, সেই কারণে মুম্বইয়ের নানা সংস্থার তরফে সেখানকার কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার (ওয়ার্ক ফ্রম হোম) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ট্র্যাফিকের সমস্যা থেকে বাঁচতে মুম্বই পুলিশ সাধারণ মানুষের জন্য ঘুরপথে যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছে। শুধু তা-ই নয়, মুম্বইয়ের বিলাসবহুল হোটেলের ভাড়াও বেড়ে তিন-চার গুণ হয়ে গিয়েছে অম্বানীর পুত্রের বিয়ে উপলক্ষে।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, বান্দ্রা এলাকার দু’টি চোখধাঁধানো বিলাসবহুল হোটেল বুক করেছিলেন মুকেশ। সেই দু’টি হোটেলে অতিথিদের থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি।
কানাঘুষো শোনা যায়, মুকেশ অতিথিদের জন্য যে হোটেলগুলি তিন দিনের জন্য বুক করেছিলেন, সেই হোটেলগুলিতে এক রাতের জন্য থাকার খরচ কমপক্ষে এক লক্ষ টাকা।
দেশ-বিদেশ থেকে আসা অতিথিদের যাতায়াতে যেন কোনও অসুবিধা না হয়, তাই সড়কপথের পাশাপাশি আকাশপথেও নজর দিয়েছিলেন অম্বানী।
রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একটি চার্টার্ড বিমান সংস্থার সিইও রাজন মেহরা জানান, অতিথিদের জন্য তিনটি বিশেষ ধরনের বিমানের আয়োজন করেছিলেন মুকেশ অম্বানী।
রজন জানান, আকাশপথে অতিথিদের যাতায়াতের জন্য তিনটি ফ্যালকন-২০০০ জেট বিমান লিজ় নিয়েছেন অম্বানী। তিন দিনের জন্য বিমানগুলি লিজ় নিয়েছেন তিনি।
শুধু জেট বিমানই নয়, অতিথিরা যেন কোনও রকম সমস্যার মুখে না পড়েন, সে কারণে ১০০টিরও বেশি ব্যক্তিগত বিমান ভাড়া করেছেন অম্বানী।
রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজন বলেন, ‘‘অতিথিরা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুম্বইয়ে আসছেন। প্রতিটি বিমান বিভিন্ন দেশে একাধিক বার পাড়ি দেবে।’’
ইতিমধ্যেই অম্বানীর পুত্রের বিয়ের মেনুতে কী কী ছিল তার খবরাখবর ইতিউতি ঘোরাফেরা করতে শুরু করেছে। সম্পূর্ণ মেনুর খোঁজ না পাওয়া গেলেও অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিতদের জন্য যে সব মুখরোচকের আয়োজন করা হয়েছে, তা শুনলেই চমক লাগে।
ফুচকা থেকে হরেক রকমের চাট, দইবড়া, শিঙাড়া থেকে শুরু করে তালিকায় ছিল অনেক কিছু।
জানা যায়, বারাণসীর এক বিখ্যাত চাটের দোকান থেকেই নাকি সমস্ত মুখরোচক খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। বারাণসীর সেই দোকানের মালিক রাকেশ কেশরী সম্প্রতি এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, জুন মাসে মুকেশ-পত্নী নীতা অম্বানী তাঁর দোকানে খেতে গিয়েছিলেন। সেখানকার খাবার খেয়ে তিনি এতই মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন যে, অনন্তের বিয়ের জন্যও বরাত দিয়ে দেন।
রাকেশ বলেন, ‘‘২৪ জুন কাশীর বিশ্বনাথ মন্দিরে এসেছিলেন নীতা। তখন আমার দোকানে খেতে আসেন। টিকিয়া চাট, টম্যাটো চাট, পালং চাট এবং কুলফি ফালুদা খেয়েছিলেন তিনি। খাওয়ার পর তিনি খুব খুশি হয়েছিলেন। বারাণসীর চাট যে কত বিখ্যাত তা-ও বলছিলেন তিনি। অম্বানী পরিবারের জন্য এতটুকু করতে পেরে আমি ধন্য।’’
মুকেশ-পুত্রের বিয়ের তালিকায় কী কী মুখরোচকের আয়োজন করা হয়েছে তা সাক্ষাৎকারে জানান রাকেশ। তালিকায় রয়েছে বাঙালির প্রিয় ফুচকাও।
ফুচকা ছাড়া রয়েছে শিঙাড়া, দইবড়া, টম্যাটো চাট, পালং চাট, ভল্লা পাপড়ি, মিক্সড চাট, দই পুরি, চূড়া মটর, পাপড়ি চাট এবং চানা কচুরি।
মিষ্টিমুখের জন্য ছিল বারাণসীর দোকানের বিখ্যাত গুলাব জামুন এবং কুলফি ফালুদা।
ডেসার্টের তালিকায় ছিল তিরামিসুও। তার উপর সাজানো ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দামি মাছের ডিম ক্যাভিয়ার।