কোভিডে প্রাণ হারালেন আরও এক তারকা। তামিল চলচ্চিত্র জগতে অন্যতম চেনা মুখ তথা রাজনীতিক বিজয়কান্ত প্রয়াত হলেন। গত কয়েক দিন ‘ভেন্টিলেটর সাপোর্ট সিস্টেম’-এ ছিলেন তিনি।
৭১ বছর বয়সি রাজনীতিক করোনাভাইরাস সংক্রমণে কাবু হয়ে পড়েছিলেন। চিকিৎসার জন্য তাঁকে ভর্তি করানো হয় চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে। সেখানে তিনি আবারও আক্রান্ত হয়ে পড়েন নিউমোনিয়াতে।
বৃহস্পতিবার সকালে ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডিএমডিকে-র প্রতিষ্ঠাতার মৃত্যু হয়।
অনুরাগীদের কাছে ‘ক্যাপ্টেন’ নামে পরিচিত ছিলেন বিজয়কান্ত। এর আগে গত নভেম্বরেও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
সে বার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু এ বার কোভিড আর নিউমোনিয়ার কাছে হেরে গেলেন তিনি।
সেলুলয়েডে তাঁর জনপ্রিয়তা দেখে নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় তামিলনাড়ুর চলচ্চিত্র জগৎ বিজয়কান্তের সঙ্গে তুলনা টেনেছিল প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী তথা এডিএমকে প্রতিষ্ঠাতা এম জি রামচন্দ্রনের সঙ্গে। নাম দিয়েছিল ‘শ্যামলা এমজিআর’। দেড়শোর বেশি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
ডিএমকে এবং এডিএমকে ‘দ্বিমেরু’তে বিভক্ত দ্রাবিড় রাজনীতিতে সফল ভাবে তৃতীয় ‘মেরু’ তৈরি করতে পেরেছিলেন বিজয়কান্ত। ২০০৫ সালে নয়া দল ডিএমডিকে গড়ে রাজনীতিতে তাঁর প্রবেশ।
২০০৬-এর বিধানসভা ভোটে মাত্র একটি আসন জিতলেও (কুড্ডালোরের বৃদ্ধাচলম কেন্দ্রে জেতেন বিজয়কান্ত নিজে) ৮ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়েছিল ডিএমডিকে।
২০১১-য় এডিএমকে নেত্রী জয়ললিতার হাত ধরে ২৯টি আসন জেতে ডিএমডিকে। বিজয়কান্ত জেতেন কল্লাকুরিচি জেলার ঋষিবন্দ্যয়ম কেন্দ্রে। এর পর জয়ললিতার সঙ্গে জোট ভাঙায় বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হন বিজয়কান্ত।
সূত্রের খবর, ‘আম্মা’ উপমুখ্যমন্ত্রিত্ব দিতে রাজি না-হওয়াতেই জোট ভেঙেছিলেন ‘ক্যাপ্টেন’।
২০১৪-র লোকসভা ভোটে বিজেপি এবং কয়েকটি ছোট দলের সঙ্গে জোট গড়েছিলেন বিজয়কান্ত। ওই নির্বাচনে করুনানিধির ডিএমকে-কে পিছনে ফেলে তামিলনাড়ুতে জয়ললিতার প্রধান প্রতিদ্বন্ধী হয়ে উঠেছিল ‘ক্যাপ্টেনের জোট’।
কিন্তু এর পরে স্ত্রী প্রেমলতার ‘পরামর্শে’ বিজয়কান্ত বিজেপি ছেড়ে বামেদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন বলে তাঁর অনুগামীদের দাবি। সেই ভোটে কার্যত ভরাডুবি হয়েছিল ডিএমডিকের।
প্রতিষ্ঠাতা-সহ দলের সব প্রার্থীই পরাজিত হয়েছিলেন। ভোটের হার নেমে গিয়েছিল আড়াই শতাংশে। চেষ্টা করেও এর পরে তামিল রাজনীতির মূল স্রোতে ফিরতে পারেননি ‘শ্যামলা এমজিআর’।