নারীবিদ্বেষকে সন্ত্রাসবাদ এবং চরমপন্থা হিসাবে বিবেচনা করার এবং তা একই পদ্ধতিতে মোকাবিলা করার সিদ্ধান্ত নিল ব্রিটেন সরকার। সূত্রকে উদ্ধৃত করে তেমনটাই প্রকাশিত হয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ-এর প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রসচিব ইয়েভেট কুপার সরকারের নিয়মের ফাঁকফোকর খুঁজে বার করতে এবং মহিলাদের বিরুদ্ধে হওয়া অপরাধ দমনের জন্য চরমপন্থা বিরোধী কৌশল নিয়ে পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছেন৷
কুপারের দাবি, বছরের পর বছর ধরে যুব সমাজের মধ্যে বেড়ে চলা চরমপন্থাকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। উপরন্তু অনলাইনে যুব সমাজের মধ্যে মৌলবাদও বেড়ে চলেছে।
কুপারকে উদ্ধৃত করে টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, অনেক দিন ধরে সরকার অনলাইনে এবং বাস্তবে উগ্রবাদের রমরমা মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
কুপার আরও বলেন, ‘‘আমরা দেখেছি অনলাইনে দিনে দিনে মৌলবাদী তরুণদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘৃণাপূর্ণ উস্কানি আমাদের সমাজ এবং গণতন্ত্রের সমন্বয় নষ্ট করছে।’’
যদি সরকারের পরিকল্পনা কার্যকর হয়, তা হলে শিক্ষক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের আইনত এমন ব্যক্তিদের শনাক্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হবে, যাঁদের আচরণে চরম নারীবিদ্বেষ লক্ষ করা যায়।
দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি ব্রিটেন সরকার লক্ষ করেছে, সে দেশের কিশোরদের একাংশের মধ্যে মৌলবাদী চিন্তাভাবনা মজ্জায় মজ্জায় ঢুকে গিয়েছে। এবং তাঁদের বিপথে চালিত করার নেপথ্যে নাম রয়েছে নারীবিদ্বেষী প্রভাবশালীরা।
আর সেই কারণে চরম নারীবিদ্বেষকেও সন্ত্রাসবাদ হিসাবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রিটেন সরকার।
ব্রিটেন সরকারের সন্ত্রাসবিরোধী প্রকল্পের নাম ‘প্রিভেন্ট’। এই প্রকল্পর লক্ষ্য— সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করা বা সে পথে চালিত হওয়া থেকে মানুষকে বিরত রাখা। যাঁরা ইতিমধ্যে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত তাঁদের পুনর্বাসন এবং সঠিক পথে নিয়ে আসার কাজও করে ‘প্রিভেন্ট’।
এই একই প্রকল্প চরম নারীবিদ্বেষীদেরও চিহ্নিত করবে এবং সঠিক পথে চালিত করবে। তাঁদের সঠিক পথে আনার দায়িত্ব থাকবে শিক্ষক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের। কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়লে পুলিশ এবং প্রশাসনও পদক্ষেপ করতে পারে।
ব্রিটেনে মহিলাদের প্রতি হিংসা এবং নারীবিদ্বেষের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে বলে একাধিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। আর তা মোকাবিলা করতে উদ্যত হয়েছে সে দেশের সরকার।
এর আগে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার স্যর মার্ক রাউলি নারীদের উপর হওয়া হিংসা এবং অত্যাচারকে ‘জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকি’ হিসাবে উল্লেখ করেছিলেন।
ব্রিটেনের ‘ন্যাশনাল পুলিশ চিফস কাউন্সিল (এনপিসিস)’-ও এর আগে একটি রিপোর্টে মহিলাদের বিরুদ্ধে হিংসার ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। প্রতিবেদনে দেশে এই ধরনের অপরাধের মোকাবিলা করার পদ্ধতি সংশোধনেরও আহ্বান জানানো হয়েছিল।