Arakan Army

গুরুত্বপূর্ণ শহর ‘আরাকান আর্মি’র দখলে! পতনের মুখে ভারতের আর এক প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সরকার?

মংডো দখলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আরাকান আর্মির এক মুখপাত্র খাইং থুখা। পাশাপাশি জানিয়েছেন, সেনাঘাঁটি দখলের সময় ওই ফাঁড়ির কম্যান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনকে বন্দি করা হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:১৪
Share:
০১ ১৯

বড় সঙ্কটের মুখোমুখি হল মায়নামারের জুন্টা সরকার। মংডো শহরের শেষ সেনাঘাঁটি দখল করে নিল বিদ্রোহী আরাকান আর্মি। মায়ানমারের সবচেয়ে শক্তিশালী এবং সক্রিয় সশস্ত্র সেই জনজাতি বাহিনী মঙ্গলবার ওই সেনাঘাঁটির দখল নিয়েছে।

০২ ১৯

মায়ানমারের কৌশলগত পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মংডো দখল করে প্রতিবেশী বাংলাদেশের সঙ্গে ২৭১ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তও দখল করেছে আরাকান আর্মি।

Advertisement
০৩ ১৯

মংডো শহরের শেষ সেনাঘাঁটি দখলের মাধ্যমে বাংলাদেশের কক্সবাজার লাগোয়া মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের সম্পূর্ণ এলাকা নিয়ন্ত্রণে আনল সশস্ত্র সেই জনজাতি বাহিনী।

০৪ ১৯

মংডো দখলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইং থুখা। পাশাপাশি জানিয়েছেন, সেনাঘাঁটি দখলের সময় ওই ঘাঁটির কম্যান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনকে বন্দি করা হয়েছে। হামলার পর প্রাণ বাঁচাতে বেশ কিছু সেনা পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। তখনই জুন্টা সরকারের ওই সেনাকর্তাকে বন্দি করা হয় বলে খবর।

০৫ ১৯

আরাকান আর্মি রবিবার জানিয়েছে, তারা নাফ নদীর উপরে যে কোনও ধরনের পরিবহণ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। জুন্টা সরকারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত পুলিশ এবং স্থানীয় মুসলিমেরা নৌকায় করে বাংলাদেশে পালানোর চেষ্টা করছিল বলে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও তারা জানিয়েছে।

০৬ ১৯

কিন্তু কী এই আরাকান আর্মি? আরাকান আর্মি হল রাখাইন সম্প্রদায়ের সশস্ত্র বাহিনী। ২০০৯ সালে ছাত্রনেতা ত্বোয়ান মারত নাইং এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী তৈরি করেন এবং নেতৃত্ব দেন।

০৭ ১৯

জনজাতি বাহিনী প্রথমে জ়েড খনিতে কাজ করা পুরুষদের যোদ্ধা হিসাবে নিয়োগ করে। উত্তর মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মি’র কাছে বেশ কিছুটা সময় আশ্রয়ও নিয়েছিলেন তাঁরা।

০৮ ১৯

২০১৯ সালে রাখাইন প্রদেশের স্বাধীনতা দিবসে সেখানকার চারটি থানায় আক্রমণ চালিয়েছিল আরাকান বাহিনী। এর পরেই দেশের সেনাকে ‘সন্ত্রাসবাদী’দের গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন মায়ানমারের তৎকালীন গণতন্ত্রকামী নেত্রী সু চির সরকার। যদিও পরে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘাত বন্ধ হয়।

০৯ ১৯

কিন্তু কেন রাখাইন দখলে রাখতে এত মরিয়া আরাকান আর্মি? এর নেপথ্যে রয়েছে সেই প্রদেশের গুরুত্ব।

১০ ১৯

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সু চির দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি’র নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছিল মায়ানমার সেনা।

১১ ১৯

এর পরেই মায়ানমারের সেনা সরকারের বিরুদ্ধে একজোট হতে শুরু করে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলি। মায়ানমারের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী— ‘তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়্যান্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-র জোট ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ গত বছরের নভেম্বর থেকে সে দেশের সামরিক জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। ওই অভিযানের পোশাকি নাম ‘অপারেশন ১০২৭’।

১২ ১৯

পরবর্তী সময়ে জুন্টা-বিরোধী যুদ্ধে শামিল হয় ‘আরাকান আর্মি’, ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ), ‘চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স’ (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ)-এর মতো বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলি। জুন্টা বিরোধী রাজনৈতিক দল ‘শান স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি’ও বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল।

১৩ ১৯

সেই সময় থেকেই মায়ানমার জুড়ে চলা গৃহযুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে রাখাইন। বিদ্রোহীদের হামলার জেরে ইতিমধ্যেই সে দেশের অর্ধেকের বেশি এলাকা সরকারি সেনার হাতছাড়া হয়েছে। তার মধ্যেই আবার ম‌ংডো দখল। এই আবহেই প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি পতনের মুখে ভারতের আর এক প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সরকার?

১৪ ১৯

২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে রাখাইনের ১৭টি শহরের মধ্যে ১১টির নিয়ন্ত্রণ পেয়েছে আরাকান আর্মি।

১৫ ১৯

রাখাইন প্রদেশের অ্যান শহরে দেশের পশ্চিম অংশের তত্ত্বাবধানের জন্য কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সদর দফতর রয়েছে। সাম্প্রতিক হামলার পরে সেই সামরিক দফতরও পতনের মুখে বলে মনে হচ্ছে।

১৬ ১৯

রাখাইন প্রদেশের জুন্টা সেনা সরকার এবং বিদ্রোহীদের সংঘাতে ক্ষতির মুখে ভারতের ‘কালাদান মাল্টিমোডাল প্রকল্প’। প্রকল্পটি কলকাতা থেকে রাখাইনের সিতোই বন্দরের সঙ্গে যুক্ত।

১৭ ১৯

গোটা অঞ্চলটির আর্থ- সামাজিক উন্নতির জন্য এই যোগাযোগ প্রকল্পটির গুরুত্ব যথেষ্ট বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞেরা।

১৮ ১৯

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সড়ক এবং সামুদ্রিক সংযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যে ভারত এই প্রকল্পের সূচনা করেছিল। আরাকান আর্মি রাখাইনের পালেতওয়া শহর দখল করার পর থেকে বড় ধাক্কা খেয়েছে সেই প্রকল্প। কাজ বন্ধ হয়ে ‘মৃতপ্রায়’ অবস্থা প্রকল্পটির।

১৯ ১৯

যদিও আরাকান আর্মি এবং সেনা সরকার— উভয় পক্ষেরই দাবি, ভারতীয় প্রকল্প বন্ধ করিয়ে দেওয়ার বা কাজের জায়গায় গন্ডগোল বাধানোর কোনও ইচ্ছা তাদের নেই।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement