সংসদ ভবনে চার ব্যক্তির হানা নিয়ে দেশ জুড়ে চর্চা তুঙ্গে। তারই মধ্যে সূত্রের খবর বলছে, দিল্লি পুলিশকে সংসদ ভবনের দায়িত্ব থেকে সরানো হতে পারে। সাংসদদের সুরক্ষার ভার এ বার চলে যেতে পারে অন্য সুরক্ষা বাহিনীর হাতে।
১৩ ডিসেম্বর অধিবেশন চলাকালীন আচমকা রংবোমার হানায় সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন সাংসদরা। নিউজ ১৮-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, গত বুধবারের এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সংসদ ভবন চত্বরের নিরাপত্তার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী (সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স বা সিআইএসএফ)-এর হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কেন্দ্র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে ১৩ ডিসেম্বরের ঘটনার পরেই সংসদ ভবনের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমীক্ষা এবং পর্যালোচনার কাজ চালানো হয়েছিল।
প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, সরকারি ভবন আইন অনুসরণ করে সংসদ ভবনের নিরাপত্তার দায়িত্ব সিআইএসএফের সুরক্ষা এবং অগ্নি নির্বাপণ সংক্রান্ত বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সম্মতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্ত্রক।
প্রসঙ্গত, দিল্লি পুলিশ এবং সিআইএসএফ দুই বাহিনীরই নিয়ন্ত্রক শাহের মন্ত্রক।
সাধারণ ভাবে সংসদ ভবন চত্বরের নিরাপত্তার মূল দায়িত্বে থাকে দিল্লি পুলিশের একটি বিশেষ দল।
সিআরপিএফ জওয়ানের একটি দল সংসদের বাইরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে। এ ছাড়াও আপৎকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য দমকল আর সিআইএসএফের ইউনিট থাকে সংসদ ভবন চত্বরে।
সংসদের সুরক্ষা সংক্রান্ত নজরদারির দায়িত্বে থাকে দিল্লি পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ইন্টেলিজেন্স উইং)।
সংসদ সচিবালয় সূত্রের খবর, লোকসভা এবং রাজ্যসভার অধিবেশন কক্ষের পথে মোট চারটি বলয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। সেই চার স্তরের নিরাপত্তা পেরিয়েই লোকসভায় ঢুকে দর্শক আসন থেকে ফ্লোরে ঝাঁপ মেরেছিলেন সাগর শর্মা এবং মনোরঞ্জন ডি। ছুড়েছিলেন রংবোমার সেল।
কিন্তু চার স্তরের নিরাপত্তা বলয়ের কোথাওই তাঁদের জুতোয় লুকিয়ে রাখা রংবোমার অস্তিত্ব ধরা পড়েনি। ঠিক একই সময় সংসদ ভবনের বাইরের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে ঢুকে রংবোমা নিয়ে ‘তানাশাহি নেহি চলেগা’ স্লোগান তুলেছিলেন অমল শিন্ডে এবং নীলম আজাদ।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের অনেকেই একে ‘সুরক্ষার গুরুতর গাফিলতি’ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। তাঁদের মতে, দিল্লি পুলিশের নিরাপত্তা বলয়ের ‘বজ্র আঁটুনি’ যে কার্যত ‘ফস্কা গেরো’, চার বিক্ষোভকারী তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন।
ক্যানিস্টার সেলের বদলে জুতোয় বিস্ফোরক লুকিয়ে ঢুকে পড়লেও দিল্লি পুলিশ তা ঠেকাতে পারত না বলে তাঁদের মত।
দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দর, সমুদ্র এবং নদীবন্দর এবং শিল্পক্ষেত্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ বাহিনীর নিরাপত্তা বলয় তুলনায় অনেক আঁটসাঁট বলেই তাঁদের মত। তা ছাড়া, আগুন নেভানোর বিশেষ প্রশিক্ষণ রয়েছে ওই কেন্দ্রীয় বাহিনীর।