De-Dollarization

ডলারের দিন কি ফুরিয়ে এল? আন্তর্জাতিক বাজারে কি শীঘ্রই ছড়ি ঘোরাবে ভারতের টাকা! কী ভাবে?

গত ৮০ বছর ধরে আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেনের বাজারে একচ্ছত্র ভাবে ছড়ি ঘুরিয়েছে ডলার। ডলারের এই রাজত্বের দিন কি অদূর ভবিষ্যতে ফুরিয়ে যেতে পারে? কী হতে পারে ডলারের বিকল্প?

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:১৮
Share:
০১ ১৮
De-Dollarization may promote Indian Rupee for global trade.

আন্তর্জাতিক বাজারে আমেরিকার ডলারের একচ্ছত্র আধিপত্যের কথা কারও অজানা নয়। ডলারের মূল্যের সঙ্গে তুল্যমূল্য বিচারে অন্য দেশগুলির মুদ্রার মান বিচার করা হয়। তাদের অর্থনৈতিক দাঁড়িপাল্লার ভার অনেকাংশেই নির্ভর করে ডলারের উপর।

০২ ১৮
De-Dollarization may promote Indian Rupee for global trade.

আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাতেও ডলারেরই রমরমা। বেশির ভাগ কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক এই ডলারকেই বৈদেশিক লেনদেনের মাধ্যম হিসাবে সংরক্ষণ করে থাকে। পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে গিয়ে ডলারকে স্থানীয় মুদ্রায় বদলে নেওয়া যায় অনায়াসে।

Advertisement
০৩ ১৮
De-Dollarization may promote Indian Rupee for global trade.

গত ৮০ বছর ধরে আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেনের বাজারে একচ্ছত্র ভাবে ছড়ি ঘুরিয়েছে ডলার। অন্য কোনও দেশের মুদ্রা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এত প্রাধান্য পায়নি। ডলারের এই রাজত্বের দিন কি অদূর ভবিষ্যতে ফুরিয়ে যেতে পারে?

০৪ ১৮

সাম্প্রতিক সময়ে ভারত সরকারের কিছু পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক লেনদেনে প্রাধান্য পেয়েছে ভারতীয় মুদ্রা। আগামী দিনে কি টাকা হয়ে উঠতে পারে ডলারের বিকল্প? বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, কঠিন হলেও সেই পরিস্থিতি একেবারে অসম্ভব নয়।

০৫ ১৮

বেশ কয়েকটি দেশ সম্প্রতি নিজেদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যম হিসাবে অন্য মুদ্রা ব্যবহারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তার মধ্যে ভারতীয় মুদ্রাও রয়েছে। তাই মনে করা হচ্ছে, ডলারের যোগ্য বিকল্প আসতে আর বেশি দেরি নেই। সে ক্ষেত্রে ভারতের টাকাও ডলারকে চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করাতে পারে।

০৬ ১৮

বিশ্বের মোট ১৮টি দেশে ‘স্পেশাল রুপি ভস্ত্রো অ্যাকাউন্ট’ বা এসআরভিএ খোলায় সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই)। কোন কোন দেশ পেল আরবিআইয়ের সম্মতি? তাতে ভারতের কী লাভ হতে পারে?

০৭ ১৮

রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, বোৎসোয়ানা, জার্মানি, ব্রিটেন, ফিজি, গায়ানা, ইজ়রায়েল, কেনিয়া, মালয়েশিয়া, মরিশাস, মায়ানমার, নিউজ়িল্যান্ড, ওমান, তানজ়ানিয়া, উগান্ডার মতো মোট ১৮টি দেশ আরবিআইয়ের তালিকায় আছে। এই দেশগুলি নিজ নিজ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ডলারে আগ্রহ হারিয়েছে। ডলারের বিকল্প হিসাবে তারা ভারতীয় টাকায় উৎসাহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।

০৮ ১৮

আমেরিকায় সম্প্রতি ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার চূড়ান্ত সঙ্কট প্রকাশ্যে এসেছে সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের হাত ধরে। দেশের ষোড়শ বৃহত্তম ব্যাঙ্কটি দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার পর থেকে আরও বেশি করে ‘ডি-ডলারাইজ়েশন’-এর দিকে ঝুঁকতে চাইছে আন্তর্জাতিক অর্থনীতি।

০৯ ১৮

‘ডি-ডলারাইজ়েশন’ এমন একটি পদ্ধতি, যার মাধ্যমে আমেরিকার মুদ্রাকে আন্তর্জাতিক অর্থনীতির সিংহাসন থেকে সরিয়ে তার গুরুত্ব, মান কমিয়ে আনা যায়। এই প্রক্রিয়ায় সামিল হতে আগ্রহী অনেক দেশই। চিন, রাশিয়া, ইরানের মতো দেশগুলি আন্তর্জাতিক বাজারে ইতিমধ্যে নিজস্ব মুদ্রার প্রচার করতে শুরু করে দিয়েছে।

১০ ১৮

অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ডলার নিজেই নিজের পায়ে কুড়ুল মেরেছে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০০০ সালে বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলিতে যে ডলারের শেয়ার ছিল ৭১ শতাংশ, তা বর্তমানে কমে এসেছে ৫৯ শতাংশে। ডলারের শেয়ার কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ ইউরো এবং চিনা ইউয়ানের শেয়ার বৃদ্ধি।

১১ ১৮

ইদানীং ডলারের পরিবর্তে চিন, রাশিয়া, জাপান, সৌদি আরবের মুদ্রায় আন্তর্জাতিক বাজারে লেনদেন শুরু হয়ে গিয়েছে। ভারতও এখন তার নিজস্ব টাকায় ৪৪টির বেশি দেশের সঙ্গে বাণিজ্য করে থাকে।

১২ ১৮

আমেরিকা তথা পশ্চিমের দেশগুলি আন্তর্জাতিক যে কোনও সমস্যায় প্রায়ই সংশ্লিষ্ট দেশের উপর বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা জারি করে থাকে। অনেকের মতে, নিষেধাজ্ঞায় ওই দেশগুলি সাময়িক ধাক্কা খেলেও ডলারের বিকল্প বাণিজ্যের তৎপরতা শুরু করে দেয় তারাও। ফলে হিতে বিপরীত হয়।

১৩ ১৮

আমেরিকা বরাবর তাদের ডলারকে অন্য দেশগুলিকে দমিয়ে দেওয়ার অস্ত্র হিসাবে দেখে এসেছে। এই পন্থাই ডলারের পতনের সূচনা করেছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। আগামী দিনে ডলারের মূল্য, গুরুত্ব যত কমবে, তত অন্যদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে বলেও মনে করছেন তাঁরা।

১৪ ১৮

২০২২ সালের জুলাই মাসে আরবিআই ‘ইন্টারন্যাশানাল সেটেলমেন্ট অফ ট্রেড ইন ইন্ডিয়ান রুপি’ নামের একটি পদ্ধতি চালু করেছে। যার মাধ্যমে ওই বছরের ডিসেম্বরে রাশিয়ার সঙ্গে ভারত প্রথম ভারতীয় টাকায় বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পন্ন করে।

১৫ ১৮

ধীরে ধীরে রাশিয়া ছাড়া আরও অনেক দেশ ভারতের এই বাণিজ্যিক পদ্ধতিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যে সব দেশে ডলারের সংরক্ষণ কম, অথবা যে সব দেশ পশ্চিমি নিষেধাজ্ঞার কারণে ডলার ব্যবহার করতে পারে না, তাদের কাছে ভারতের টাকা সেরা বিকল্প হিসাবে উঠে আসছে।

১৬ ১৮

কিন্তু ভারতের বৈদেশিক ভান্ডার দুর্বল। ডলারের সাপেক্ষে দিন দিন টাকার দাম কমে আসছে। যা অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডলারের পরিবর্তে ভারতের টাকা যদি বিভিন্ন দেশের বাণিজ্যিক লেনদেনের মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে, তবে টাকার গুরুত্ব আবার বৃদ্ধি পাবে।

১৭ ১৮

বিদেশে টাকার প্রচার এবং আগ্রহ বৃদ্ধির জন্যই ‘স্পেশাল রুপি ভস্ত্রো অ্যাকাউন্ট’-এর বন্দোবস্ত করেছে আরবিআই। এর মাধ্যমে বৈদেশিক বাণিজ্য ভারতীয় মুদ্রায় করা সম্ভব। ডলারের চেয়ে সেই পদ্ধতিও তুলনামূলক সহজ।

১৮ ১৮

ভস্ত্রো অ্যাকাউন্ট বিদেশের ব্যাঙ্কে খোলা হয়। কিন্তু তা পরিচালনা করে দেশীয় ব্যাঙ্কগুলিই। আরবিআইয়ের তত্ত্বাবধানে ১৮টি দেশে এই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার এবং ভারতীয় মুদ্রায় বাণিজ্যিক লেনদেন শুরু হয়ে গিয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement