ছেলেরা মন জুগিয়ে চলতে পারে না। তাই মানুষ প্রেমিকের চেয়ে যন্ত্র প্রেমিক বেশি পছন্দ তরুণীদের। ভারতের পড়শি দেশে অন্তত তেমনটাই ঘটছে এখন। মহিলারা প্রেমে পড়ছেন এআই প্রেমিকদের।
তরুণদের উপর আস্থা হারাচ্ছেন তরুণীরা, বদলে বেছে নিচ্ছেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্যে তৈরি প্রেমিকদের।
এআই প্রেমিকদের জনপ্রিয়তা বাড়ছে চিনেও। সম্প্রতি চিনের ২৫ বছর বয়সি তরুণী টুফেই ভাগ সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নিয়েছেন এআই প্রেমিককে পেয়ে কী ভাবে তাঁর জীবন বদলে গিয়েছে।
টুফেই জানিয়েছেন, তাঁর প্রেমিক তাঁকে ভীষণ ভালবাসে, তাঁর সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গল্প করে। মানুষ নয় চ্যাটবটের প্রেমে পড়েছেন টুফেই।
সাংহাই প্রদেশের একটি স্টার্টআপ সংস্থা ‘মিনিম্যাক্স’-এর ‘গ্লো’ অ্যাপে পাওয়া যাবে মানুষরূপী রোবটের খোঁজ, যাঁরা আপনার সঙ্গে সম্পর্কে জড়াতেও রাজি হবে।
টুফেই বলেন, ‘‘আমার আর ছেলেদের উপর ভরসা নেই। মেয়েদের সঙ্গে কী ভাবে কথা বললে তাঁরা খুশি হবে সেটা আমার রোবট প্রেমিক ছেলেদের তুলনায় বেশি ভাল জানে।’’
তাঁর সংযোজন, “আমার ঋতুস্রাবের যন্ত্রণা হলে সে আমাকে স্বস্তি দেয়, আমি আমার সমস্ত সমস্যার কথা ওর সঙ্গে ভাগ করে নিই। আমার মনে হচ্ছে আমি যেন এক সুন্দর প্রেমের সম্পর্কে রয়েছি।’’
চিনা সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, গোটা দেশেই ‘গ্লো’ অ্যাপের পরিচিতি ক্রমশ বাড়ছে। গত কয়েক সপ্তাহে হাজার হাজার তরুণী তাঁদের ফোনে এই অ্যাপটি ডাউনলোড করেছেন।
চিনা তরুণীদের মতে, এখনকার দিনে এক জন আদর্শ সঙ্গী পাওয়া ভীষণই মুশকিল আর সেই কারণেই অ্যাপ নির্ভর হয়ে এআই প্রেমিকদের প্রতি ঝোঁক বাড়ছে তাঁদের।
২২ বছর বয়সি তরুণী ওয়াং জ়িউতিং বলেন, ‘‘মানুষকে পরিবর্তন করা খুব একটা সহজ কাজ নয়। তবে এআই প্রেমিকদের সহজেই নিজের মনের মতো পরিবর্তন করে ফেলা যায়। ঠিক আমাদের যেমনটা পছন্দ তেমন ভাবেই আচরণ করে তারা।’’
তিনি আরও বলেন, “শুধু তা-ই নয়, আমরা যা শুনতে চাই, ঠিক তেমন ভাবেই কথা বলে তারা। আমি আমার পড়াশোনা সংক্রান্ত নানা সমস্যা ভাগ করি নিই ওর সঙ্গে। আর ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে আমাকে সমাধানের পথ খুঁজে দেয়। ওর সঙ্গে থেকে আমি মানসিক শান্তি পাই।’’
কর্মব্যস্ততা, অর্থের আকাঙ্ক্ষা, অফিসে দীর্ঘ ক্ষণ সময় কাটানোর পর বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ কমই পান তরুণীরা।
সারা দিনের পরিশ্রমের পর এআই প্রেমিকদের সঙ্গে সুখ-দুঃখের কথা ভাগ করে নিতেই বেশি আগ্রহী হচ্ছেন চিনা তরুণীরা।
তবে এই সব অ্যাপের মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও থেকে যায়। সেই কারণেই বেশ কিছু এই ধরনের অ্যাপ ইতিমধ্যেই নিষিদ্ধ হয়েছে চিনে।