বলিউডের সিনেমায় শ্যুটিং এর স্থান নির্বাচন করা একটি কঠিন বিষয়। সিনেমার মূল গল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে প্রযোজক এবং পরিচালকদের শ্যুট করার জায়গা বাছতে হয়।
হিন্দি সিনেমায় এমন অনেক বিলাসবহুল বাড়ি অথবা প্রাকৃতিক দৃশ্য নজরে পড়ে, যা দেখে মনে হয় এ যেন ভারতের মধ্যেই কোনও জায়গায় শ্যুট করা।
কোনও কোনও ক্ষেত্রে ফিল্ম স্টুডিয়োতে কৃত্রিম ভাবে সিনেমার সেট তৈরি করলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রযোজকরা বাইরে গিয়ে শ্যুটিং করেন।
এর ফলে সিনেমাটি আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। এমনকি, দর্শকদের মনে এর ছাপ পড়ে।
কিন্তু এই পন্থা অবলম্বন করতে গিয়ে বহু প্রযোজকই দর্শকদের ভুল বুঝিয়েছেন।
এমনও হয়েছে, সিনেমার মূল গল্পে ভারতেরই কোনও জায়গার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু, সেই সিনেমাতে গানের শ্যুটিং-সহ সিনেমা শ্যুট করার জায়গা ভারতের কোনও প্রান্তেই নয়।
সেই ছবি হয়ত শ্যুট করা হয়েছে বিদেশের নানা জায়গায়। কিন্তু দর্শকদের দেখে মনে হয়েছে এই জায়গাগুলি ভারতেরই কোনও প্রান্তে।
কর্ণ জোহর থেকে শুরু করে যশরাজ প্রায় সকলের সিনেমাতেই এই ঘটনা ঘটেছে।
‘কভি খুশি কভি গম’ সিনেমায় ‘রায়চাঁদ ম্যানসন’-এর কথা মনে পড়ে? মূল গল্পটি ছিল দিল্লির এক বিত্তশালী পরিবারকে ঘিরে। এই বাড়ির সামনেই হেলিপ্যাড নামত।
আসলে দিল্লিতে এ রকম কোনও বাড়ি নেই। এই বাড়িটি আসলে ব্রিটেনে অবস্থিত। ওয়াদ্দেসডন ম্যানর-কেই ‘রায়চাঁদ ম্যানসন’ হিসাবে দেখানো হয়েছে।
‘মহব্বতে’ সিনেমায় ‘গুরুকুল’ এর কথা আজও সবার মনে রয়েছে। অমিতাভ বচ্চন ছিলেন এই গুরুকুলের প্রিন্সিপাল।
ভারতে নয়, ইংল্যান্ডের উইলটশায়ারে লংলিট হাউসেই এই সিনেমার শ্যুটিং হয়েছিল।
১৯৯৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ এখনও প্রিয় রোমান্টিক সিনেমার তালিকায় রয়েছে সকলের। মূল গল্পে মুম্বইয়ের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের উল্লেখ থাকলেও মুম্বইয়ে এ রকম কিছুর কোনও অস্তিত্ব নেই।
মরিশাসের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সিনেমার অধিকাংশ শ্যুটিং হয়। এমনকি, পোর্ট লুসিয়া ওয়াটারফ্রন্টের সামনেও একটি দৃশ্য শ্যুট করা হয়েছিল।
‘কহো না প্যায়ার হ্যায়’ ছবির শীর্ষ সঙ্গীত সেই সময় জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছেছিল। এই সিনেমাতেও মূল গল্প ভারতে একটি জুটির প্রেমকাহিনীর উপর নির্ভরশীল।
কিন্তু এই সিনেমার বিখ্যাত গানটি ভারতে নয়, শ্যুট করা হয়েছিল তাইল্যান্ডের বিভিন্ন দ্বীপে।
২০১৪ সালে মুক্তি পাওয়া ‘এক ভিলেন’ সিনেমাটির মূল গল্প গোয়া শহরকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়।
অঙ্কিত তিওয়ারির কণ্ঠে ‘গলিয়াঁ’ গানটি শ্রোতাদের যেমন মন কেড়েছিল, একই ভাবে গানের দৃশ্যগুলি মন কেড়েছিল দর্শকদের।
সমুদ্রের তীরে বায়োলুমিনিসেন্সের একটি অপূর্ব দৃশ্য রয়েছে এই গানটিতে। তবে, সিনেমার গল্প অনুযায়ী, গোয়ার সমুদ্র সৈকতে এর দেখা মেলেনি।
মলদ্বীপের অন্তর্গত ভাদু দ্বীপে এই দৃশ্যটি শ্যুট করা হয়। এ ছাড়াও এই গানটি মরিশাস ও মলদ্বীপের বিভিন্ন জায়গায় শ্যুট করা হয়েছে।