ভারতীয় ছবির মধ্যে দর্শকের দেখা সিনেমার তালিকায় ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’ এবং ‘বাহুবলী ২’র পরেই তৃতীয় স্থানে রয়েছে ‘গদর: এক প্রেম কথা’।
২০০১ সালে মুক্তির পর দুই দশক কেটে গেলেও ‘গদর’ ছবির প্রতি যে দর্শকের ভালবাসা অটুট, তার প্রমাণ ১১ অগস্ট মুক্তি পাওয়া ‘গদর’ ছবির দ্বিতীয় পর্ব। ‘গদর ২’ দেখতে প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের আসনে এখনও উপচে পড়ছে ভিড়।
‘গদর: এক প্রেম কথা’ ছবি যেন সানি দেওল এবং অমীশা পটেলের অভিনয় ছাড়া অসম্পূর্ণ থেকে যায়। দুই তারকা এত নিপুণ ভাবে তাঁদের চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছিলেন যে, দেখে মনে হয় চরিত্রদু’টি তাঁদের জন্যই বানানো। কিন্তু সানি অথবা অমীশা, সিনেমার জন্য কেউই পরিচালকের প্রথম পছন্দ ছিলেন না, তা জানেন কি?
‘গদর: এক প্রেম কথা’ ছবিটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন অনিল শর্মা। এমনকি ২২ বছর পর ‘গদর ২’-এর পরিচালনাও করেছেন তিনিই। কিন্তু তারা সিংহের চরিত্রে সানিকে প্রথম পছন্দ করেননি তিনি।
তারার চরিত্রের জন্য বলি অভিনেতা গোবিন্দকে চেয়েছিলেন অনিল। অভিনয়ের প্রস্তাবে যেন রাজি হয়ে যান, তার জন্য গোবিন্দকে অনুরোধও করেছিলেন অনিল।
অনিলের পরিচালনায় ১৯৯৮ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘মহারাজা’ ছবিটি। এই ছবিতে গোবিন্দের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন মণীশা কৈরালা।
‘মহারাজা’ ছবিটি মুক্তির পর তেমন ব্যবসা করতে পারেনি। বক্স অফিসে তা মুখ থুবড়ে পড়ে। সেই মুহূর্তেই সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেন অনিল।
তারার চরিত্রের জন্য নতুন মুখ খুঁজতে শুরু করেন অনিল। গোবিন্দের পর সানিকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন পরিচালক। অনিলের প্রস্তাবে সানি রাজি হয়ে যান।
সিদ্ধান্তে বদল হয়েছিল ছবির নায়িকা খোঁজার ক্ষেত্রেও। সাকিনার চরিত্রের জন্য অমীশাকে নয়, বরং কাজলকে চেয়েছিলেন অনিল।
কাজল তখন একই সঙ্গে প্রচুর ছবির কাজে ব্যস্ত ছিলেন। শত চেষ্টা করেও ‘গদর: এক প্রেম কথা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য সময় বার করতে পারেননি কাজল।
অনিলের প্রস্তাব কাজল খারিজ করে দেওয়ার পর সাকিনার চরিত্রের জন্য অডিশন নিতে শুরু করেন অনিল। বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, ৫০০ জনের অডিশন নিয়েছিলেন অনিল।
৫০০ জনের মধ্যে অমীশাকে বেছে নেন অনিল। তার পর সানি এবং অমীশাকে মুখ্যচরিত্রের জন্য চূড়ান্ত করে ‘গদর: এক প্রেম কথা’র শুটিং শুরু করেন পরিচালক।
‘গদর: এক প্রেম কথা’ ছবিতে শিশু অভিনেতা হিসাবে অভিনয় করতে দেখা যায় উৎকর্ষ শর্মাকে। সম্পর্কে অনিলের পুত্র উৎকর্ষ। সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ‘গদর ২’ ছবিতেও অভিনয় করেছেন উৎকর্ষ।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, ‘গদর: এক প্রেম কথা’ ছবির কাহিনি অনেকটাই সত্য। বুটা সিংহ নামে এক সেনার জীবনের কাহিনি ছবির গল্পের সঙ্গে মেলে।
বুটা নাকি দেশভাগের আগে এক তরুণীর প্রেমে পড়েন। পরে তাঁকে বিয়েও করেন। এক কন্যাসন্তানেরও জন্ম দেন তরুণী। কিন্তু দেশভাগের পর তরুণী পাকিস্তানে চলে যান।
কিন্তু বাস্তব তো আর বড় পর্দায় দেখানো সিনেমার মতো নয়। কানাঘুষো শোনা যায়, বুটা পরে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে সম্পর্ক ভেঙে দেন তরুণী। পরিবারের চাপেই নাকি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বুটার স্ত্রী। পরে আত্মহত্যা করেন বুটা।
‘গদর: এক প্রেম কথা’ ছবি বানাতে খরচ হয়েছিল সাড়ে ১৮ কোটি টাকা। মুক্তির পর ছবিটি বক্স অফিসে প্রায় ১৩৫ কোটি টাকার ব্যবসা করে। ইতিমধ্যেই ভাল ব্যবসার পথে হাঁটতে শুরু করেছে ‘গদর ২’। শেষ পর্যন্ত বক্স অফিসে কত উপার্জন করতে পারে সেটাই দেখার।