বাবা হিন্দি চলচ্চিত্রজগতের জনপ্রিয় অভিনেতা। ছোটবেলা থেকে তিনিও অভিনয়জগতের চারপাশে ঘোরাফেরা করতেন। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে তিনিও বলিপাড়ায় পা রাখেন। আশির দশকে প্রথম ছবি মুক্তি পায় ধর্মেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ পুত্র সানি দেওলের। তাঁর কেরিয়ারের প্রথম ছবিতে সানির ছেলেবেলা ফুটিয়ে তুলেছিলেন এক শিশু অভিনেতা। বর্তমানে তিনি বলিউডের শীর্ষে থাকা সঙ্গীতশিল্পী।
১৯৮৩ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘বেতাব’। বর্ষীয়ান অভিনেত্রী অমৃতা সিংহের সঙ্গে এই ছবিতে জুটি বেঁধে অভিনয় করতে দেখা যায় সানিকে। এটিই ধর্মেন্দ্র-পুত্রের কেরিয়ারের প্রথম ছবি।
সম্প্রতি গানের রিয়্যালিটি শোয়ে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সানি। সেই অনুষ্ঠানে ‘বেতাব’ ছবির গান গেয়েছিলেন এক প্রতিযোগী। সেই গান শুনে স্মৃতির সমুদ্রে ভেসে গিয়েছিলেন সানি। গানের প্রসঙ্গে ছবি নিয়েও কথা তুলেছিলেন সানি।
সানি বলেছিলেন, ‘‘তুমি যে গানটি গাইলে তার শুটিং করতে বহু দিন লেগেছিল। বার বার আবহাওয়া বদলে যাওয়ার কারণে টানা শুটিং করা যাচ্ছিল না। অপেক্ষা করতে হচ্ছিল। তবে মজাও করেছিলাম সকলে মিলে। মনে হয়েছিল আমরা সকলে বনভোজন সারতে গিয়েছিলাম।’’
সানি আরও জানিয়েছিলেন যে, ‘বেতাব’ ছবিতে তিনি যে চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সেই চরিত্রের ছেলেবেলাও সিনেমায় দেখানো হয়েছিল। বড় পর্দায় সানির ছোটবেলার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন এক শিশু অভিনেতা। বর্তমানে অবশ্য সঙ্গীতের ক্ষেত্রে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি। সেই শিশু অভিনেতা ছিলেন সোনু নিগম।
অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন সানি শৈশব থেকেই দেখতেন কি না তা জিজ্ঞাসা করা হলে অভিনেতা বলেন, ‘‘আমি ছোটবেলায় এ সব কিছু বুঝতাম না। অভিনয় মনে হয় আমার রক্তে ছিল। আমি বাবার সব ছবি দেখতাম কিন্তু কখনও ভাবিনি যে আমিও একই রাস্তায় হাঁটব।’’
সানি বলেছিলেন, ‘‘ছোটবেলায় আমি পড়াশোনা নিয়ে বেশি চিন্তাভাবনা করতাম না। খেলাধুলা করেই বেড়াতাম। স্কুলের গণ্ডি পার করার পর ভাবতে হয়েছিল যে আমি জীবনে কী করতে চাই। তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, আমি অভিনেতা হব।’’
ধর্মেন্দ্র-পুত্রের কথায়, ‘‘তখন আমার ১৯-২০ বছর বয়স। খুব লাজুক স্বভাব ছিল আমার। আমায় যে সুরক্ষার কবচ থেকে বেরিয়ে বাইরের দুনিয়ায় পা রাখতে হবে তা বুঝতে পেরেছিলাম। আমি বিদেশে গিয়েছিলাম। নাটকের দলে যুক্ত হয়েছিলাম। সেখানে আমায় কেউ চিনতেন না। সেখান থেকেই আমার আত্মবিশ্বাস জন্মায়। তার পর ফিরে এসে অভিনয় শুরু করি।’’
‘বেতাব’ ছবিতে সোনুকে অভিনয় করতে দেখা গেলেও সেটি তাঁর প্রথম ছবি নয়। তার আগেও বেশ কয়েকটি হিন্দি ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল সোনুকে।
আশির দশকে ‘প্যারা দুশমন’, ‘উস্তাদি উস্তাদ সে’, ‘কামচোর’ নামের একাধিক হিন্দি ছবিতে শিশু অভিনেতা হিসাবে অভিনয় করেছিলেন সোনু। পরে সঙ্গীতের ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তা অর্জন করলেও অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ মুছে যায়নি সোনুর।
১৯৮৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বেতাব’ ছবিতে শেষ বার শিশু অভিনেতা হিসাবে অভিনয় করেছিলেন সোনু। তার পর ১৯ বছর বিরতির পর আবার বড় পর্দায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে।
২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জানি দুশমন: এক আনোখি কহানি’ ছবির মাধ্যমে আবার বলিপাড়ায় পা রেখেছিলেন সোনু। তার পর ‘কাশ আপ হমারে হোতে’, ‘লভ ইন নেপাল’-এর মতো একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
২০০৫ সাল থেকে একাধিক ছবির গানের দৃশ্যে অতিথি শিল্পী হিসাবে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল সোনুকে। কিন্তু গায়ক হিসাবে তিনি যতটা খ্যাতি পেতে শুরু করেছিলেন, অভিনেতা হিসাবে তার এক শতাংশও পাননি বলা চলে।
২০১৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘স্পটলেস’ নামের স্বল্পদৈর্ঘ্যের একটি ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন সোনু। কিন্তু বড় পর্দায় আর দেখা যায়নি বলি গায়ককে।
২০২৪ সালে মুক্তি পাওয়া একটি মরাঠি ছবির গানের দৃশ্যে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল সোনুকে। আশির দশকের সেই শিশু অভিনেতা বড় পর্দায় তাঁর কেরিয়ার গড়তে পারেননি।