নব্বইয়ের দশকে বলিপাড়ায় কেরিয়ার শুরু করেন নাগমা। রাজ কুমার, বিনোদ খন্না, সলমন খান, অক্ষয় কুমারের সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। হিন্দি ফিল্মজগতের পাশাপাশি দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন নাগমা।
কেরিয়ারে তামিল, তেলুগু, মালয়ালম, কন্নড়, ভোজপুরি, পঞ্জাবি, মরাঠি এবং বাংলা ভাষার ছবিতেও অভিনয় করেন নাগমা। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ডাকসাইটে সুন্দরী নায়িকাদের তালিকায় প্রথম সারিতে নাম লিখিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বার বার বিবাহিত পুরুষদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোই নায়িকার জীবনে অন্ধকার ডেকে আনে।
২০০১ সালে অভিনেত্রী হিসাবে তখন যথেষ্ট জনপ্রিয় নাগমা। সেই সময় নাগমার নাম জড়িয়ে পড়ে ভারতীয় ক্রিকেট দলের এক প্রাক্তন অধিনায়কের সঙ্গে। কানাঘুষো শোনা যায় যে, নাগমার সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ওই ক্রিকেটার।
দু’জনের কেউই অবশ্য সম্পর্ক নিয়ে মুখ খোলেননি। তবে সেই সময় ক্রিকেটে ভারতের পারফরম্যান্স ভাল না হলে ক্রিকেটপ্রেমীরা নাগমাকে দোষ দিতেন। নাগমার সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন বলেই নাকি ওই ক্রিকেটার খেলায় মন দিতে পারছেন না, বলা হত এমনটাও।
বার বার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে থাকায় নাকি তাঁদের সম্পর্কে চিড় ধরে। এর পর দক্ষিণী অভিনেতা শরৎ কুমারের সঙ্গে নাম জড়ায় নাগমার।
অধিকাংশ দক্ষিণী ছবিতে শরতের বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা যেত নাগমাকে। কাজের সূত্রে দু’জনের বন্ধুত্ব হয়। সেই সম্পর্ক প্রেমে গড়াতে বেশি সময় নেয়নি।
কানাঘুষো শোনা যায় যে, নাগমার সঙ্গে শরৎ যখন সম্পর্কে আসেন, তখন তিনি বিবাহিত ছিলেন। দুই তারকা বহু দিন তাঁদের সম্পর্কের কথা গোপন রাখলেও শরতের স্ত্রী সে কথা জানতে পেরে যান।
স্বামী বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন জানতে পেরে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শরতের স্ত্রী। সেই সময় দক্ষিণী ফিল্মজগতে নাগমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসতে শুরু করে যে, তিনি অন্য তারকার ঘর ভেঙেছেন।
শরৎ কুমার নাকি নাগমাকে প্রাণে মারার হুমকিও দিতে শুরু করেন বলে কানাঘুষো শোনা যায়। এত মানসিক চাপ আর সহ্য করতে পারছিলেন না নাগমা। শরতের সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টেনে দক্ষিণী ফিল্মজগত থেকেই বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন নায়িকা।
দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি থেকে সরে আসার পর মুম্বই যান নাগমা। ভোজপুরি ছবিতেও অভিনয় শুরু করেন তিনি। সেই সময় ভোজপুরি সুপারস্টার রবি কিশানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন অভিনেত্রী।
নাগমা কোনও দিন তাঁর সঙ্গে রবির সম্পর্ক নিয়ে মুখ না খুললেও রবি জানান যে, তাঁর সঙ্গে নাগমার যে সম্পর্ক রয়েছে, সে বিষয়ে রবির পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে বন্ধুবান্ধব সকলেই অবগত। রবি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে, ‘‘নাগমা আমার জীবনের একটি সুন্দর অংশ। আমার স্ত্রী তা মেনেও নিয়েছে। আমি কখনও আমার স্ত্রীকে মিথ্যা বলি না। ও সব জানে।’’
রবি বলেন, ‘‘আমার স্ত্রী ভীষণ ভাল। ও বোঝে যে বিয়ের বাইরেও পুরুষ এবং মহিলার মধ্যে মধুর সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে। আমি এই জগতের প্রথম বা শেষ বিবাহিত পুরুষ নই, যার সঙ্গে কোনও মহিলার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।’’
রবি জানান যে, তাঁর স্ত্রী কখনও নাগমাকে তাঁদের সংসার ভাঙার কারণ হিসাবে দেখেননি। রবি যে কোনও দিন তাঁর স্ত্রী এবং সন্তানদের ছেড়ে কোথাও যাবেন না, তা মেনে নিয়েছিলেন নাগমাও।
রবি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘নাগমা মাঝেমধ্যেই আমার বাড়ি আসে। স্ত্রীর সঙ্গে রান্নাবান্নাও করে। নাগমার সঙ্গে কাজ করার জন্য আমার স্ত্রীই উৎসাহ দেয়।’’
তবে, রবির সঙ্গে নাগমার সম্পর্ক বেশি দিন টেকেনি। কানাঘুষো শোনা যায় যে, ২০০৬ সালে ‘বিগ বস্’ রিয়্যালিটি শোয়ে অংশগ্রহণ করার পর নাগমার সঙ্গে দূরত্ব বেড়ে যায় রবির। দূরত্ব ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকার কারণেই দুই তারকার সম্পর্ক ভেঙে যায়।
ভোজপুরি ইন্ডাস্ট্রিতে রবির প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন মনোজ তিওয়ারি। নাগমার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল বলেও গুঞ্জন শোনা যায়। তবে মনোজের সঙ্গে সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে অস্বীকার করেন নাগমা।
নাগমা বলেন যে, ‘‘একসঙ্গে কাজ করছি মানে এই নয় যে আমাদের সম্পর্ক রয়েছে। আমাকে এ বার রেহাই দিন। রবি এবং মনোজ দু’জনেই বিবাহিত।’’ বার বার বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে নাম জড়িয়ে পড়ার পরেও আজ সঙ্গীহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন নাগমা।
২০০৪ সালে অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতিও শুরু করেন নাগমা। ২০০৪ সালে কংগ্রেস দলে যুক্ত হন তিনি। বর্তমানে রাজনীতি নিয়েই নিজেকে ব্যস্ত রাখেন অভিনেত্রী।