সাইবার প্রতারণার ফাঁদে এ বার এক বলিউড অভিনেত্রী। খোয়া গেল প্রায় ৬ লক্ষ টাকা। প্রতারিত অভিনেত্রী অঞ্জলি পাটিলের দাবি, মুম্বই পুলিশের আধিকারিক হিসাবে পরিচয় দিয়ে ফাঁদ পাতেন দুষ্কৃতীরা।
গত সপ্তাহে ‘ফেডএক্স’ ক্যুরিয়র সংস্থার প্রতিনিধি ‘দীপক শর্মা’ হিসাবে নিজের পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি আচমকা ফোন করেন অঞ্জলিকে।
ওই ব্যক্তি অভিনেত্রীকে জানান, তাঁর নামে তাইওয়ান অভিমুখী একটি পার্সেল থেকে মাদক পাওয়া গিয়েছে। পার্সেলটিকে আটক করেছেন শুল্ক আধিকারিকেরা।
নিজেকে ‘দীপক শর্মা’ হিসাবে পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি অভিনেত্রীকে আরও জানান, পার্সেলের মধ্যে তাঁর আধার কার্ডও মিলেছে। আধারে দেওয়া তথ্য বেহাত হওয়া রুখতে অঞ্জলিকে অতি দ্রুত এ নিয়ে মুম্বই পুলিশের সাইবার শাখায় যোগাযোগ করতে বলেন দীপক।
হঠাৎ এই রকম ঘটনায় ঘাবড়ে যান অঞ্জলি। কিছু ক্ষণের মধ্যেই অঞ্জলির কাছে স্কাইপে একটি ফোন আসে। তাতে নিজেকে ‘মিস্টার ব্যানার্জি’ বলে পরিচয় দেন এক ব্যক্তি।
ফোন করে সেই ভদ্রলোক জানান, তিনি মুম্বই পুলিশের সাইবার শাখায় আছেন। তিনি দাবি করেন, অঞ্জলির আধার কার্ডের সঙ্গে তিনটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংযুক্ত রয়েছে।
তিনি আরও জানান, এই অ্যাকাউন্টগুলি আর্থিক নয়ছয়ের সঙ্গে যুক্ত। অঞ্জলি যে সত্যিই এই অ্যাকাউন্টগুলি সম্পর্কে কিছুই জানেন না, তা নিশ্চিত করতে ওই ব্যক্তি ‘প্রসেসিং ফি’ বাবদ ৯৬,৫২৫ টাকা জমা করতে বলেন।
ভয়ের চোটে ওই ব্যক্তির কথা মতোই কাজ করেন বলিউড অভিনেত্রী। এর পর মামলা বন্ধ করতে ওই ব্যক্তি ৪ লক্ষ ৮৩ হাজার ২৯১ টাকা পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের একটি অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করতে বলেন। অঞ্জলি তা-ই করেন।
মাদক সংক্রান্ত বিষয়ে নাম জড়িয়ে যাওয়ার ভয়ে প্রাথমিক ভাবে প্রতারকের দাবির সত্য-মিথ্যা যাচাই না করে তিনি টাকা মিটিয়ে দেন। পরে যখন তাঁর হুঁশ ফেরে, তত ক্ষণে ৫ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকা গায়েব হয়ে যায় অভিনেত্রীর অ্যাকাউন্ট থেকে।
কিছু দিনের মধ্যেই অবশ্য সন্দেহ জাগে অঞ্জলির মনে। তিনি নিজের বাড়িওয়ালাকে গোটা ঘটনা খুলে বলেন।
এর পরে বাড়িওয়ালা সব শুনে তাঁকে জানান, প্রতারণার ফাঁদে পড়েছেন অঞ্জলি।
তৎক্ষণাৎ অঞ্জলি ডিএন নগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
যদিও এখনও পর্যন্ত সাইবার পুলিশের অফিসার পরিচয় দেওয়া ‘মিস্টার ব্যানার্জি’র কোনও খোঁজ পায়নি পুলিশ। উদ্ধার হয়নি অভিনেত্রীর খোয়া যাওয়া টাকাও।
সংশ্লিষ্ট ‘ফেডেক্স’ কুরিয়ার সংস্থা এই বিষয়ে জানিয়েছে যে, তারা কখনওই আচমকা কোনও ফোন করে, চিঠি পাঠিয়ে এমনকি ইমেল করেও কোনও গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য জানতে চায় না।
তারা এ-ও জানিয়েছে যে, সন্দেহজনক কোনও ফোন বা মেসেজ পেলে ব্যক্তিগত তথ্য কোনও অবস্থাতেই তা দেওয়া উচিত নয়। বরং সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা সাইবার ক্রাইম দফতরে যোগাযোগ করা দরকার।