Sefest City of India

নিরাপদতম শহর কলকাতা, তবে রাজ্যের অবস্থা ততটা ভাল নয়, আর কী জানাচ্ছে কেন্দ্রের রিপোর্ট?

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের রিপোর্টেও এক নম্বরে ছিল কলকাতাই।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ১২:৫০
Share:
০১ ২০

ভারতের প্রধান মহানগরগুলির মধ্যে কলকাতা ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (এনসিআরবি) ২০২২ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী খেতাব জিতেছে দেশের সব থেকে নিরাপদ শহর হওয়ার। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালেও এই রিপোর্টের নিরীক্ষণে এই পদ কলকাতার আওতাতেই ছিল। বলাই বাহুল্য নিরাপত্তার নিরিখে রাজধানী দিল্লির থেকে কয়েক পা এগিয়েই রয়েছে কলকাতা শহর।

০২ ২০

তবে সার্বিক ভাবে মহিলাদের সঙ্গে হওয়া অপরাধমূলক ঘটনার আঙ্গিকে দেখতে গেলে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা যে খুব ভাল তা বলা যায় না। সেই নিরিখে দেশে উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও রাজস্থানের পরেই পশ্চিমবঙ্গ। অর্থাৎ, চতুর্থ স্থানে।

Advertisement
০৩ ২০

এ দিকে সার্বিক অপরাধের পাশাপাশি মহিলাদের সঙ্গে অপরাধের প্রশ্নেও চলতি বছরে দেশে শীর্ষস্থানে দিল্লি। মহিলাদের উপরে সব থেকে কম অপরাধের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে কোয়ম্বত্তূরে।

০৪ ২০

এনসিআরবি রিপোর্ট বলছে কলকাতায় ভারতীয় দণ্ডবিধি মাফিক অপরাধের সংখ্যা কমেছে। ২০২০ বা ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে কলকাতায় এই বিষয়ে বদল নজরে এসেছে। ২০২১ সালে যেখানে ১৩,০৬৭টি অপরাধের অভিযোগ নথিবদ্ধ হয়েছিল, সেখানে এ বার সেই সংখ্যা ১১,০৩৮।

০৫ ২০

দিল্লির ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ২ লক্ষ ৯৮ হাজার ৯৮৮টি। মুম্বইয়ে ৬৯,২৮৯টি এবং বেঙ্গালুরুতে ২৮,৬৬৬টি অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে। প্রতি লক্ষ জনসংখ্যায় অপরাধের গড় হার সব থেকে কম কলকাতাতেই (৭৮.২)।

০৬ ২০

জনসংখ্যার নিরিখে ছোট শহর আমদাবাদ, পুণে, কোয়ম্বত্তূর, সুরাতও অপরাধের হারে এগিয়ে। যেমন, রিপোর্ট অনুযায়ী, কলকাতার জনসংখ্যা ১৪.১১ কোটি। সেখানে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে ১১,০৩৮টি। অর্থাৎ, প্রতি এক লক্ষ জনসংখ্যায় কলকাতায় অপরাধ হয়েছে ৭৮.২টি।

০৭ ২০

কোয়ম্বত্তূরে সব থেকে কম অপরাধের ঘটনা (৪৫৪২টি) নথিবদ্ধ হলেও, ওই শহরের জনসংখ্যা মাত্র সাড়ে ২১ লক্ষ। অর্থাৎ, প্রতি লক্ষ জনসংখ্যায় অপরাধ কলকাতার প্রায় তিন গুণ। তবে চার্জশিট পেশের হারে কলকাতার (৮৮.১) থেকে এগিয়ে কোচি (৯৫.৯) ও কোঝিকোড় (৮৯.৪)।

০৮ ২০

এনসিআরবি-র রিপোর্টে অবশ্য স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে, শুধুমাত্র এই পরিসংখ্যান বা রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যের কিংবা শহরের সঙ্গে শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির তুলনা করা যুক্তিযুক্ত নয়। কারণ, এই রিপোর্ট তৈরি হয় মূলত থানায় দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে।

০৯ ২০

পুলিশ বহু ক্ষেত্রে অভিযোগ নথিভুক্তই করতে না চাইলে, অভিযোগের সংখ্যা নিরীক্ষণে কমই হবে। কিন্তু তা সেখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ঠিক প্রতিফলন হবে না। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ব্যাখ্যা, কিছু-কিছু রাজ্যে পুলিশ অভিযোগই গ্রহণ করতে চায় না।

১০ ২০

ফলে স্বাভাবিক ভাবেই সেই সমস্ত রাজ্যের প্রকৃত অপরাধের পরিসংখ্যান সামনে আসে না। আবার অনেক রাজ্যে অপরাধ নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে পুলিশ অনেক বেশি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়ে থাকে। তাই অপরাধের সংখ্যা বেশি মানেই সেখানে অপরাধপ্রবণতা বেশি, এমনটি ভাবা ঠিক নয়।

১১ ২০

এ বার দেশের ১৯টি প্রধান শহরে (যেগুলির জনসংখ্যা অন্তত ২০ লক্ষ) অপরাধের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করা হয়েছে। অপরাধে শীর্ষে রাজধানী দিল্লি। সব থেকে মলিন সেখানে মহিলাদের নিরাপত্তার ছবিও।

১২ ২০

শুধু দিল্লিতেই মহিলাদের উপরে অপরাধের সংখ্যা ১৪,১৫৮টি। যার মধ্যে ধর্ষণের ঘটনা ১২০৪। শুধু তা-ই নয়, রিপোর্ট অনুযায়ী, সারা দেশেই মহিলাদের উপরে সার্বিক অপরাধের ঘটনা ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে প্রায় ৪ শতাংশ বেড়েছে।

১৩ ২০

২০২১ সালে দেশে মহিলাদের উপরে অত্যাচারের ৪,২৮,২৭৮টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছিল। তা বেড়ে হয়েছে ৪,৪৫,২৫৬টি। দেখা যাচ্ছে, মহিলাদের উপরে নির্যাতনের এক বড় অংশ গার্হস্থ্য হিংসা (৩১.৪%)।

১৪ ২০

দেশে ২০২২ সালে ধর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে ২৮,৫৪৫টি। আগের বারের তুলনায় প্রায় আড়াই হাজার বেশি। সব থেকে বেশি ধর্ষণের ঘটনা (৫,৩৯৯) নথিভুক্ত হয়েছে রাজস্থানে। দ্বিতীয় উত্তরপ্রদেশ।

১৫ ২০

উদ্বেগজনক ভাবে দেখা যাচ্ছে, সারা দেশে প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ৫১টি করে অভিযোগ দায়ের হচ্ছে শুধুমাত্র মহিলাদের সঙ্গে হওয়া অপরাধের কারণে। ২০২২ সালে কলকাতায় ধর্ষণের ১১টি ঘটনা ঘটেছে বলে নথিতে প্রকাশ। ধর্ষণের হারও সব থেকে কম।

১৬ ২০

দিল্লি (১২০৪), জয়পুর (৪৯৭), ইন্দোরের (১৭৪) মতো শহরে ধর্ষণ ও ধর্ষণের হার অনেক বেশি। ধর্ষণের হারে দিল্লিকেও ছাপিয়ে গিয়েছে ইন্দোর ও জয়পুর।

১৭ ২০

সদ্য প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশেষ এবং স্থানীয় আইনে অপরাধের সংখ্যাও কলকাতায় তুলনায় কম। ২০২২ সালে কলকাতায় খুন হয়েছেন ৩৪ জন। যা অন্য শহরের তুলনায় কম।

১৮ ২০

দুর্ঘটনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ২১৭ জনের। দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার ১.৫ শতাংশ, তা-ও অন্য শহরগুলির থেকে কম। ভ্রূণ বা শিশুহত্যার মতো অপরাধ কলকাতায় নথিভুক্ত হয়নি।দিল্লি, মুম্বইয়ে এমন ঘটনা যথাক্রমে ৩২টি এবং ১৮টি।

১৯ ২০

তবে মেয়েদের উপরে হামলার ঘটনা চেন্নাই, আমদাবাদের থেকে কলকাতায় বেশি। আবার দিল্লি, মুম্বইয়ের তুলনায় কম।

২০ ২০

অপহরণের মতো অপরাধও দিল্লি, মুম্বইয়ের তুলনায় কলকাতায় নগণ্য। তবে এই নথিতে প্রধান শহরগুলিতে গোষ্ঠী বা সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের নথিতে সর্বত্র শূন্য লেখা। অর্থাৎ, এমন সংঘর্ষ কোথাও ঘটেনি বা নথিবদ্ধ হয়নি বলেই নথিতে দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement