অনেকেই আজকাল অ্যাপল্-এর ফোন ব্যবহার করেন। উন্নতমানের সিকিউরিটি সিস্টেম এই ফোন পছন্দ করার অন্যতম কারণ।
গ্রাহকদের মধ্যেও অ্যাপ্ল সংস্থার সিকিউরিটি সিস্টেম নিয়ে সুনাম রয়েছে। এ বার সেই কারণেই কার্যত কেন্দ্রীয় সরকারের রোষের মুখে পড়তে হল অ্যাপ্লকে।
ঘটনার সূত্রপাত অক্টোবর মাসে। অ্যাপ্লের আইফোনে গ্রাহকদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা আসে— ‘আপনার ফোনটি রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রিত হ্যাকিংয়ের নিশানা হয়েছে’।
তার পরে পরীক্ষা করে দেখা যায় ফোনগুলিতে পেগাসাস নামের চর-সফ্টওয়্যার ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। পেগাসাস ইজ়রায়েলি একটি সংস্থা যা নিজেদের প্রযুক্তি কেবলমাত্র সরকারকেই বিক্রি করে বলে ঘোষণা করেছে।
ঘটনাটি চলতি বছরের অক্টোবরের। যাঁদের ফোনে এই সতর্কবার্তা এসেছিল, তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক অথবা বিরোধী দলের নেতা বা নেত্রী বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
ঘটনা এখানে শেষ নয়, বলা যায় ঘনঘটার শুরু। ওই সতর্কবার্তা এবং তার পরে ফোন পরীক্ষা করিয়ে চর-সফ্টওয়্যারের উপস্থিতি টের পেয়ে যাওয়ার পরে প্রথমে অ্যাপ্লের ভারতীয় কর্তাকে তলব করে কেন্দ্রীয় সরকার।
কেন ওই সতর্কবার্তা আইফোনের গ্রাহকদের পাঠানো হয়েছে, তার জবাবদিহি চাওয়া হয়। ওই কর্তা জানান, বিষয়টি আইফোনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার অঙ্গ।
গ্রাহককে এই পরিষেবা দেওয়া আমেরিকার সিলিকন ভ্যালির কোম্পানিটির ব্যবসায়িক নীতি, যা বদলানো তাঁর মতো আঞ্চলিক কর্তার পক্ষে অসম্ভব।
এর পরে অ্যাপ্লের সদর দফতরে তলব করে এক বড়কর্তাকে ডেকে আনা হয়। এমন কোনও সতর্কবার্তা ভারতীয় গ্রাহকদের না-দিতে চাপ দেওয়া হয়।
ওই কর্তা আমেরিকার একটি প্রভাবশালী সংবাদপত্রকে জানিয়েছেন, ভারত সরকারের প্রতিনিধিরা তাঁর সঙ্গে বৈঠকে ‘প্রচণ্ড রাগ দেখান, উচ্চকণ্ঠে নানা রকম ভয়ও দেখান’।
তাঁরা সাফ বলেন, রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত হ্যাকিং-এর কোনও সতর্কবার্তা গ্রাহকদের দেওয়া যাবে না। অ্যাপ্লের কর্তা জানিয়েছেন, তিনি ঠান্ডা মাথায় ধীরস্থির ভাবে কোম্পানির নীতি, গ্রাহকদের সাইবার নিরাপত্তার অধিকার এবং আইনি অধিকার সম্পর্কে নিজেদের অবস্থান সরকারের প্রতিনিধিদের জানান।
বিশ্বের ১৫০টি দেশে অ্যাপ্লের আইফোন ব্যবহার হয়, কোনও দেশের সরকার ওই বিষয়টি নিয়ে যে আপত্তি প্রকাশ করেনি, সে কথাও ভারত সরকারের প্রতিনিধিদের বলেন। তার পরেও তাঁকে উদ্দেশ করে হুমকি দেওয়া হয় বলেও জানিয়েছেন অ্যাপ্লের কর্তা