বলিউডের ‘শাহেনশা’ বলে কথা! এক বলি অভিনেত্রীকে বিয়ে করেছেন। তবে তাঁর নাম জড়িয়েছিল বলিপাড়ার একাধিক নায়িকার সঙ্গে। তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনাও অবশ্য কম হয়নি। তবে অভিনয়জগতে পা রাখার আগে এক তরুণীর প্রেমে নাকি হাবুডুবু খেয়েছিলেন অমিতাভ বচ্চন।
হিন্দি ফিল্মবিশেষজ্ঞ হানিফ জাভেরি সম্প্রতি একটি পডকাস্ট শোয়ে অমিতাভের প্রেমজীবনের কিছু গোপন কথা তুলে ধরেছেন। অভিনেতা হওয়ার আগেই যে নায়কের মনে ভালবাসার রং লেগেছিল তা জানিয়েছেন হানিফ।
হানিফের কথায়, চলচ্চিত্রজগতে নিজের কেরিয়ার শুরু করার আগে কলকাতার এক সংস্থায় কাজ করতেন অমিতাভ। কর্মসূত্রে বেশ কিছু দিন কলকাতায় ছিলেন তিনি। সেই সময় অমিতাভের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল এক তরুণীর।
অমিতাভের সঙ্গে ক্রমশ সেই তরুণীর বন্ধুত্ব গাঢ় হয়ে উঠতে শুরু করে। হানিফের দাবি, ওই তরুণীর নাম মায়া। সেই সময় ব্রিটিশ এয়ারলাইন্স সংস্থায় চাকরি করতেন সেই তরুণী।
কলকাতায় থাকাকালীন মায়ার সঙ্গে অমিতাভের সম্পর্ক জমে উঠেছিল। কিন্তু সেই সম্পর্কে বাদ সেধেছিল অমিতাভের কেরিয়ার। হিন্দি ছবিতে অভিনয় করবেন বলে কলকাতার চাকরি ছেড়ে মুম্বই চলে গিয়েছিলেন অমিতাভ।
হানিফ জানান, মুম্বই গিয়ে অমিতাভ তাঁর মা তেজি বচ্চনের এক বান্ধবীর বাংলোয় গিয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, সেই বাংলোয় থাকলে মায়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা কঠিন হবে। কারণ, বাংলোর মালকিন অমিতাভের মায়ের বান্ধবী।
অমিতাভ মনে করেছিলেন যে, মুম্বইয়ের বাংলোয় থেকে মায়ার সঙ্গে যোগাযোগ করলে সে খবর বান্ধবীর মারফত তাঁর মায়ের কাছে পৌঁছে যেতে পারে। তাই ঠিকানা বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলি তারকা।
১৯৬৯ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘সাত হিন্দুস্তানি’। অমিতাভের পাশাপাশি সেই ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় বাঙালি অভিনেতা উৎপল দত্তকে। তা ছাড়া দেখা গিয়েছে বলি নায়ক মেহমুদ আলির ভাই আনওয়ার আলিকেও।
হানিফের দাবি, অমিতাভের সঙ্গে মায়ার সম্পর্ক নাকি ছিন্ন করেছিলেন আনওয়ার। থাকার জায়গা নিয়ে যে সমস্যা হচ্ছিল, সে কথা শুটিংয়ের সময় আনওয়ারকে জানিয়েছিলেন অমিতাভ।
আনওয়ার যখন সমস্যার কথা জানতে চেয়েছিলেন, তখন অমিতাভ তাঁকে মায়ার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা জানিয়েছিলেন। অমিতাভ জানিয়েছিলেন যে, তিনি অন্য কোনও জায়গায় থাকতে চান যেখানে থাকলে মায়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা যাবে।
অমিতাভের কথা শুনে তাঁকে থাকার জন্য নতুন ঠিকানার সন্ধান দিয়েছিলেন আনওয়ার। আনওয়ারের কথামতো বাংলো ছেড়ে নতুন বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন অমিতাভ। তার পর নাকি মায়ার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আরও পোক্ত হয়েছিল বলে জানান হানিফ।
তবে বেশি দিন মায়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে পারেননি অমিতাভ। যিনি বলি তারকার সম্পর্কের বাঁধন আরও মজবুত করতে হাত বাড়িয়েছিলেন, তিনিই তাঁদের সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বলে দাবি হানিফের।
হানিফ জানান, অমিতাভের সঙ্গে মায়ার কী রকম সম্পর্ক রয়েছে তা নাকি কাছ থেকে লক্ষ করেছিলেন আনওয়ার। অমিতাভের প্রেমিকা হিসাবে মায়াকে একদমই নাকি মনে ধরেনি আনওয়ারের। সে কথা অমিতাভকেও জানিয়েছিলেন তিনি।
আনওয়ার নাকি অমিতাভকে জানিয়েছিলেন যে, অমিতাভ এবং মায়ার সম্পর্ক সুখের হবে না। এমনটাই দাবি করেছিলেন হানিফ। কারণ, অমিতাভ এবং মায়া ছিলেন বিপরীত ব্যক্তিত্বের মানুষ। অমিতাভ লাজুক স্বভাবের মানুষ ছিলেন। সে তুলনায় মায়া ছিলেন অনেকটাই খোলামেলা।
আনওয়ারের কথা শুনে চিন্তা দানা বেঁধেছিল অমিতাভের মনে। ধীরে ধীরে মায়ার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়ে গিয়েছিল তাঁর। তার পর তরুণীর সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টেনেছিলেন অমিতাভ।