তৈরি হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম রেডিয়ো টেলিস্কোপ। সেই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্কয়ার কিলোমিটার অ্যারে অবজারভেটরি’ (এসকেএও)।
‘এসকেএও’ প্রকল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ভারতও।
বিশ্বের বৃহত্তম রেডিয়ো টেলিস্কোপ তৈরিতে হাত লাগিয়েছে মোট ১৬টি দেশ। তার মধ্যেই অন্যতম ভারত।
বৃহত্তম রেডিয়ো দূরবীক্ষণ যন্ত্রটি তৈরিতে বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন অর্থরাশি বিনিয়োগ করলেও, ভারত করছে ১২৫০ কোটি টাকা।
‘এসকেএও’ প্রকল্পের লক্ষ্য এক বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিশ্বের বৃহত্তম রেডিয়ো দূরবীক্ষণ যন্ত্র তৈরি করা।
মহাবিশ্বে সমস্ত দৃশ্যমান নক্ষত্রপুঞ্জ অধ্যয়ন করতে এবং গবেষণা করতে সাহায্য করবে এই দূরবীক্ষণ যন্ত্র। এ রকম কোনও দূরবীক্ষণ যন্ত্র এর আগে বানানো হয়নি।
তবে ‘স্কয়ার কিলোমিটার অ্যারে অবজারভেটরি’ কোনও একটিমাত্র দূরবীক্ষণ যন্ত্র নয়। অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিশাল দূরত্ব জুড়ে থাকা হাজার হাজার রেডিয়ো অ্যান্টেনার সমন্বয়।
‘স্কয়ার কিলোমিটার অ্যারে’ প্রকল্প সম্পূর্ণ হলে, এটি হবে পৃথিবীর বৃহত্তম এবং সবচেয়ে শক্তিশালী রেডিয়ো দূরবীক্ষণ যন্ত্র।
‘স্কয়ার কিলোমিটার অ্যারে’ দূরবীক্ষণ যন্ত্রটি দু’টি ধাপে তৈরি হবে। প্রথম পর্যায়ের কাজ ২০২২ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়েছিল৷ ২০২৯ সালের মধ্যে দু’টি ধাপের কাজই শেষ হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
২০২৯ সালের মধ্যেই পৃথিবীর বৃহত্তম দূরবীক্ষণ যন্ত্রটি কাজ করা শুরু করবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
ভারত ছাড়াও ‘স্কয়ার কিলোমিটার অ্যারে’ প্রকল্পে যে ১৫টি দেশ থাকবে। সেগুলি হল— অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, কানাডা, চিন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য, পর্তুগাল, স্পেন, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন এবং ইতালি। যদিও মূলত অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকাতেই দূরবীক্ষণ যন্ত্রটি তৈরি হবে।
‘স্কয়ার কিলোমিটার অ্যারে টেলিস্কোপ’ প্রকল্প কেন এত তাৎপর্যপূর্ণ? এর উদ্দেশ্যই বা কী?
‘স্কয়ার কিলোমিটার অ্যারে’ দূরবীক্ষণ যন্ত্রটি মহাবিশ্বকে মানুষের কাছে আরও সহজ করে তুলে ধরতে সাহায্য করবে। এই দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে মহাবিশ্বের অনেক জটিল ধাঁধার সমাধান হতে পারে বলেও মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীদের মতে, ‘স্কোয়ার কিলোমিটার অ্যারে’ রেডিয়ো দূরবীক্ষণ যন্ত্রটি অন্যান্য রেডিয়ো দূরবীক্ষণ যন্ত্রের তুলনায় ৫০ গুণ বেশি সংবেদনশীল হবে।
রেডিয়ো দূরবীক্ষণ যন্ত্রটির সাহায্যে গ্রহ এবং নক্ষত্র তথা সমগ্র মহাবিশ্ব নিয়ে আগের তুলনায় সহজে গবেষণা করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কী ভাবে প্রাচীনতম ছায়াপথগুলি কোটি কোটি বছর ধরে তৈরি এবং বিবর্তিত হয়েছে, তা নিয়েও বিজ্ঞানীদের মনে একটি স্বচ্ছ ধারণা তৈরি করতে সাহায্য করবে রেডিয়ো দূরবীক্ষণ যন্ত্রটি।
সমগ্র মহাবিশ্ব কোন সূত্রে একসঙ্গে গাঁথা রয়েছে, তা-ও বুঝতে ওই রেডিয়ো দূরবীক্ষণ যন্ত্রটি সাহায্য করবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।