আরিনা রোডিওনোভা। অস্ট্রেলিয়ান টেনিস তারকা খেলা ছাড়়াও সাহসী মন্তব্য করার জন্যও সমান পরিচিত।
২০২১ সালে কোভিড-১৯ অতিমারির আবহে নিভৃতবাস নিয়ম নিয়ে সহ-খেলোয়াড়দের কটাক্ষ করা থেকে শুরু করে কেরিয়ার বদলানো নিয়ে মজা করা— সব বিষয়ে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি।
তবে এ বার তিনি জড়ালেন অন্য এক বিতর্কে। দুষ্টু ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট খুলে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন বিশ্বের ১৮৩ নম্বর টেনিস তারকা।
অবিশ্বাস্য মনে হলেও তেমনটাই ঘটেছে। দুষ্টু কন্টেন্টের পরিচিত ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট খুলেছেন আরিনা।
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের বাছাই পর্ব থেকে তাড়াতাড়ি প্রস্থানের পরেই প্রাপ্তবয়স্কদের ওয়েবসাইটে প্রবেশের ঘোষণা করেন ৩৫ বছর বয়সি আরিনা।
সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে অনুরাগীদের উদ্দেশে আরিনা লিখেছেন, ‘‘যাঁরা বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসা করছিলেন তাঁদের জন্য সুসংবাদ। আমার ওনলি ফ্যান অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়েছে। এ বার দেখা যাক কী হয়।’’
আরিনার ওই ঘোষণার পরেই তাঁর অনুরাগীদের পাশাপাশি টেনিস মহলেও হইচই পড়েছে। এর পাশাপাশি সমাজমাধ্যমে আরও একটি বোমা ফাটিয়েছেন তিনি।
আরিনা জানিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ফুটবলার টাই ভিকারির সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদের আগে তাঁরা প্রায় এক বছর ধরে আলাদা থাকছিলেন বলেও জানিয়েছেন আরিনা।
১৯৮৯ সালে রাশিয়ায় জন্ম আরিনার। পরে তিনি অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব নেন। সম্প্রতি পেশাদার টেনিসে আরিনার সময় খুব একটা ভাল যাচ্ছিল না। ২০২২ সালে কব্জিতে আঘাত পেয়ে আট মাসের জন্য মাঠের বাইরে ছিলেন আরিনা।
সেই সময় বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের তালিকায় আরিনার নাম পৌঁছে যায় ৩০০ নম্বরে। কিন্তু আট মাস পর চোট সারিয়ে আবার টেনিসের কোর্টে প্রত্যাবর্তন হয় তাঁর। পরের মরসুমে ৭৯টি ম্যাচ এবং আন্তর্জাতিক টেনিস ফেডারেশনের সাতটি টুর্নামেন্ট জেতেন।
সিঙ্গল্স খেলে কখনও গ্র্যান্ড স্ল্যামের তৃতীয় রাউন্ডের বাধা পেরোননি আরিনা। তবে ডাবল্স খেলায় তাঁর খ্যাতি তৈরি হয়। ডাবল্সে একসময় তাঁর বিশ্ব র্যাঙ্ক ছিল ৪১।
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালেও উঠেছিলেন আরিনা। তবে বেশ কিছু সময় ধরেই তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক খারাপ যাচ্ছিল। প্রাক্তন ফুটবলার স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদও হয়ে যায়। আর তার পরেই দুষ্টু ওয়েবসাইটে নাম তোলার কথা জানান আরিনা।
তবে আরিনাই প্রথম নন। এর আগেও একাধিক টেনিস খেলোয়াড়কে দুষ্টু ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট খুলতে দেখা গিয়েছিল।
প্রাক্তন টেনিস তারকা অ্যাশলে হারক্লেরোড ২০২২ সালে কিছু সময়ের জন্য ওই ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। আমেরিকার খেলোয়াড় সাচিয়া ভিকারিও এ বছরের শুরুতে অ্যাকাউন্ট খোলেন ওই ওয়েবসাইটে।
পিছিয়ে নেয় পুরুষ খেলোয়াড়েরাও। উইম্বলডনের ফাইনালিস্ট নিক কিরগিওস এবং ফ্রান্সের টেনিস তারকা আলেকজান্দ্রে মুলারও অনুরাগীদের সঙ্গে ‘যোগাযোগ’ বজায় রাখতে ওই ওয়েবসাইটে নাম দিয়েছিলেন।
টেনিসের বাইরের জগতের খেলোয়াড়দেরও ওই ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট খুলতে দেখা গিয়েছে অতীতে। তাঁদের মধ্যে সাঁতারু জ্যাক লাফার এবং পোল ভল্টার অ্যালিশা নিউম্যান, প্রাক্তন ইউএফসি ফাইটার পেজ ভ্যানজান্ট এবং ফুটবলার ম্যাডেলিন রাইটের মতো খেলোয়াড়ও রয়েছেন।
মূলত প্রাপ্তবয়স্কদের বিষয়বস্তু প্রদর্শনের জন্যই জনপ্রিয় ওই ওয়েবসাইট। যদিও মুলার এবং কিরগিওসের মতো ক্রীড়াবিদেরা জোর দিয়েছেন যে, তাঁরা খেলাধুলা সংক্রান্ত বিষয়বস্তু শেয়ার করার জন্য ওই মাধ্যম ব্যবহার করেন।
গত বছর রোমে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে মুলার বলেছিলেন, ‘‘ওনলি ফ্যানস হল অন্য যে কোনও সমাজমাধ্যমের মতোই একটি সমাজমাধ্যম। টেনিস এবং আমার জীবন সম্পর্কে কথা বলার জন্য আমি সেটি ব্যবহার করি।’’
এখন আরিনা তাঁর অ্যাকাউন্ট কী ধরনের বিষয়বস্তু শেয়ার করার জন্য ব্যবহার করছেন, সে দিকেই নজর তাঁর তামাম ভক্তকুলের।