আলোচনার শুরু গত বছর থেকেই। সমাজমাধ্যমে আমির কন্যা ইরা খানের বাগ্দানের ছবি দেখার পর থেকেই নেট নাগরিকদের একংশের মধ্যে বিয়ের দিনক্ষণ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। নতুন বছর পড়তে না পড়তেই ইরা খান গাঁটছড়া বাঁধলেন নিজের দীর্ঘ দিনের প্রেমিক নূপুর শিখরের সঙ্গে।
নতুন নতুন চমকের মধ্যেই ধুমধাম করে বিয়ে সারলেন তাঁরা। গত বছর নভেম্বর মাসে একে অপরের সঙ্গে আংটিবদল করে বাগ্দান সেরেছিলেন ইরা ও নূপুর। নতুন বছরে একসঙ্গে দাম্পত্য জীবনে পা রাখলেন তাঁরা।নতুন নতুন চমকের মধ্যেই ধুমধাম করে বিয়ে সারলেন তাঁরা। গত বছর নভেম্বর মাসে একে অপরের সঙ্গে আংটিবদল করে বাগ্দান সেরেছিলেন ইরা ও নূপুর। নতুন বছরে একসঙ্গে দাম্পত্য জীবনে পা রাখলেন তাঁরা।
এ দিকে বাবা বলিউডের তাবড় তারকা হলেও পেশাগত জীবনে সেই পথে হাঁটেননি ইরা। বলিপাড়ার আনাচে-কানাচে বেড়ে ওঠা সত্ত্বেও তিনি যে বেশ আলাদা, তার প্রমাণ ইরার সমাজমাধ্যমের পাতাই।
তাঁর বিয়েতেও যে একরাশ চমক থাকতে চলেছে, তার আভাস পাওয়া গিয়েছিল আগেই। হতাশ হননি নেটাগরিকরা। এখনও পর্যন্ত কী কী চমক দেখা গেল ইরার বিয়েতে?
১। বলিউডে অভিনেতা হিসাবে কর্মজীবনের একেবারে গোড়ার দিকেই রিনা দত্তকে বিয়ে করেছিলেন আমির। তখনও তারকা হিসাবে পরিচিতি তৈরি হয়নি আমিরের। ১৯৮৬ সালে রিনার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন আমির। রিনার সঙ্গে ১৬ বছরের সম্পর্কের পর বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন আমির। তাঁদের দুই সন্তান জুনেইদ খান এবং ইরা বড় হয়ে ওঠেন রিনার কাছেই।
রিনার সঙ্গে বিচ্ছেদের কয়েক বছর পরে ২০০৫ সালে ‘লগান’ ছবির সহকারী পরিচালক কিরণ রাওকে বিয়ে করেন আমির। সেই সম্পর্কে চিড় ধরে প্রায় ১৫ বছর পরে। ২০২১ সালে বিচ্ছেদ ঘোষণা করেন আমির এবং কিরণ। দু’বার বিয়ে করেছেন আমির, দু’বারই ভেঙেছে বিয়ে।
তবে প্রাক্তন দুই স্ত্রীর সঙ্গেই সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন ‘দঙ্গল’ খ্যাত অভিনেতা। মেয়ে ইরার বিয়েতেই মিলেছে তার প্রমাণ। ইরার গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে একই ধরনের ভিন্ন রঙের শাড়ি পরে আসতে দেখা গিয়েছিল রিনা আর কিরণকে। বিয়ের অনুষ্ঠানেও একসঙ্গে ছবি তুলতে দেখা গেল তাঁদের।
সদ্য নিজের দ্বিতীয় বিয়ের পর প্রাক্তন স্ত্রী মালাইকাকে সমাজমাধ্যমের পাতায় আনফলো করেছেন আরবাজ় খান। বলিপাড়ায় যেখানে এমন উদাহরণের কমতি নেই, সেখানে আমিরের দুই প্রাক্তন স্ত্রীর এক ফ্রেমে আসা চমকের চেয়ে কিছু কম নয়।
২। বিয়ের সম্পর্ক টেকেনি বটে, তবে তাতে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান এবং ভালবাসা কমে যায়নি। এমন কথা বার বার বলেছেন আমির। তিনি যে এমন কথা স্রেফ বলার জন্য বলেননি, তার প্রমাণ মিলল তাঁর মেয়ে ইরার বিয়েতেই।
প্রথম স্ত্রী রিনার সঙ্গে অতিথিদের আপ্যায়ন করতে দেখা গেল আমিরকে। হাসিমুখে ছবিও তুললেন তাঁরা সবাই। অন্য দিকে, ক্যামেরার সামনেই দ্বিতীয় স্ত্রী কিরণের গালে এঁকে দিলেন চুম্বন। সেই ছবি এবং ভিডিয়ো এখন ভাইরাল সমাজমাধ্যমের পাতায়।
৩। আর পাঁচ জন তারকাসন্তানের চেয়ে বেশ কিছুটা আলাদা আমির-কন্যা ইরা। তাঁর বিয়ের অনুষ্ঠানেও যে সেই ছোঁয়া থাকবে, তা আঁচ করা গিয়েছিল আগেই। কয়েক মাস আগে নূপুরের সঙ্গে বাগ্দান সেরেছিলেন ইরা।
তবে বিয়ের জন্য সাবেকি সাজই বেছে নেন তিনি। আর পাঁচ জন কনের মতো লেহঙ্গা বা শাড়ি পরেননি আমির-কন্যা। বরং, ছক ভেঙে হারেম প্যান্ট, ব্লাউজ় এবং ওড়নায় সেজেছিলেন ইরা। এক ঢাল লালরঙা চুলে বেশ মানিয়েছিল তাঁকে। সঙ্গে কোনও হিল জুতো নয়, কালো কোলাপুরী চপ্পল পরে বিয়ের মঞ্চে উঠলেন ইরা।
৪। ইরার সাজপোশাকে চমক থাকলেও বিয়ের দিন সবচেয়ে বেশি নজর কাড়লেন তাঁর স্বামী নূপুর শিখরে। শেরওয়ানি, পঞ্জাবি নয়— কালো রঙের গেঞ্জি ও সাদা হাফপ্যান্ট পরে বিয়ের মঞ্চে এসে ওঠেন তিনি! শুধু তাই-ই নয়, ঘোড়ায় বা গাড়িতে চড়ে বরযাত্রীদের সঙ্গে নয়, আট কিলোমিটার দৌড়ে বিয়ের মঞ্চে পৌঁছন পেশায় ফিটনেস প্রশিক্ষক নূপুর।
তবে বিয়ের অনুষ্ঠানের গোটা সময়টা গেঞ্জি ও হাফপ্যান্ট পরে কাটাননি নূপুর। সমাজমাধ্যমের ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োয় ইরাকে বলতে শোনা গেল, ‘‘সইসাবুদ করার পরে এ বার নূপুর স্নান করতে যাবে!’’ ইরার কথা শুনে সইসাবুদ মেটার পর স্নান সেরে গাঢ় নীল রঙের শেরওয়ানিতে সেজে অতিথিদের সামনে আসেন নূপুর।
৫। এখানেই শেষ নয়। কয়েক দিন আগেই জানতে পারা যায়, নিজের বিয়েতে নাকি অতিথিদের কাছ থেকে কোনও উপহার গ্রহণ করতে রাজি নন ইরা। তাই বিয়েতে উপহার গ্রহণ করা নিয়ে বেশ কড়াকড়িও রয়েছে।
তবে মেয়ের বিয়েতে বাবা কোনও উপহার না দিয়ে পারেন! মেয়ের মন রাখতে তাই বিশেষ আয়োজন করেছেন আমির। মুম্বইয়ে সইসাবুদের পর উদয়পুরে বড় করে হতে চলেছে ইরা ও নূপুরের বিয়ের অনুষ্ঠান। সেখানে নাকি মেয়ের জন্য নিজেই গান গাইবেন আমির।
তারকার বোন নিখত হেগড়ে জানান, মেয়ের বিয়েতে সঙ্গীত পরিবেশনের জন্য নাকি বেশ কিছু দিন ধরে গানের মহড়াও দিয়েছেন আমির। মেয়ের বিয়ের জন্য কোন গান বাছলেন আমির, আপাতত তা জানতেই মুখিয়ে অনুরাগীরা।