কয়েক হাজার কোটি টাকা আবর্জনায় পড়ে রয়েছে গত ১০ বছর ধরে! আর তা খুঁজে পেতে মরিয়া হয়ে একের পর এক রাস্তা খুঁজে চলেছেন ব্রিটিশ যুবক। ২০১৩ সাল থেকে লাগাতার চেষ্টার পরও উদ্ধার করা যায়নি কুবেরের ধন।
গুপ্তধন উদ্ধারে কাজে লাগানো হতে পারে রোবট কুকুর, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এমনটাই পরিকল্পনা করছেন হারিয়ে যাওয়া সম্পদের মালিক ব্রিটেনের সাউথ ওয়েলশের নিউপোর্ট শহরের বাসিন্দা জেমস হাওয়েলস।
ঘটনাটি রূপকথার গল্পের মতো মনে হলেও আদতে এই সম্পদ কোনও নগদ টাকা নয়। সবচেয়ে পুরনো এবং সবচেয়ে মূল্যবান ক্রিপ্টো সম্পদ বিটকয়েনের।
কী ভাবে এই বিপুল সম্পদ হাতছাড়া হল? জানতে গেলে ফিরে যেতে হবে এক দশক আগে।
জেমস হাওয়েলস নামের এই ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ার সাড়ে সাত হাজার বিটকয়েন কেনেন। ২০১৩ সালে ঘর পরিষ্কার করতে গিয়ে ভুলবশত তাঁর ল্যাপটপের একটি হার্ডড্রাইভ আবর্জনায় ফেলে দিয়েছিলেন। তাতে ওই বিট কয়েনগুলির তথ্য জমা ছিল।
২০১৩ সালে বিটকয়েন কার্যত মূল্যহীন ছিল। সংবাদ সংস্থা এএফপির মতে, ২০২০ থেকে ভার্চুয়াল কারেন্সি বছরে ৪০০ শতাংশেরও বেশি হারে বৃদ্ধি পেতে পেতে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছে।
২০০৯ সালে কেনা ৭৫০০ বিটকয়েনের মূল্য ২০২৩ সালের শেষে এসে দাঁড়ায় ১ হাজার ৮১৮ কোটি টাকায়!
সেই থেকেই হাওয়েলস তাঁর বিটকয়েনগুলি পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করছেন। এই সম্পদ তাঁর ভাগ্য ঘুরিয়ে দিতে পারে, তাঁকে রাতারাতি ধনকুবের বানিয়ে দিতে পারে!
তাই নিউপোর্ট শহরের প্রশাসনকে অনেক বার আবেদন জানিয়েছেন হাওয়েলস। শহরের আবর্জনা যেখানে জমা হয়, সেখানে খননকার্য চালাবার অনুমতি চেয়েও পাননি তিনি। হারিয়ে যাওয়া হার্ড ড্রাইভটি সেখানেই রয়েছে বলে বিশ্বাস করেন তিনি।
এত বছর পরেও সেই বিটকয়েন পুনরুদ্ধার করতে পারবেন বলে আত্মবিশ্বাসী হাওয়েলস।
টাকা উদ্ধার হলে সিটি কাউন্সিলকে মোট বিটকয়েনের ২৫ শতাংশ থেকে অনুদান দেওয়ারও প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি। কিন্তু তাতেও মন গলেনি কাউন্সিল প্রশাসনের। তারা বলছে, ওই ভাগাড়ে খননকাজ চালানোর অনুমতি তাদেরও নেই।
বিবিসিকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে জেমস হাওয়েলস জানিয়েছিলেন, তিনি পেশাদার লোকদের দিয়ে খননের কাজ করাবেন। ফলে সহজেই সেটি পাওয়া পাওয়া যাবে বলে বিশ্বাস রাখেন তিনি। খননের সব ব্যয়ভার বহন করবেন জেমসই।
বিটকয়েন উদ্ধারে ক্রিপ্টোকারেন্সি বিশেষজ্ঞ, পরিবেশগত স্বাস্থ্য এবং তথ্য পুনরুদ্ধার বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি দলও তৈরি করেছেন জেমস।
পরিকল্পনার অংশ হিসাবে তাঁর দল আবর্জনার ঢিবি থেকে হার্ড ড্রাইভটি উদ্ধার করতে একটি যান্ত্রিক হাতকে কাজে লাগাবে। এর জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার করবে দলটি।
‘দ্য সান’ থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, ‘অনট্র্যাক’ নামের একটি সংস্থাকে দিয়ে এই খননের কাজ করাতে চান জেমস। এমন একটি সংস্থা, যা মহাকাশযান কলম্বিয়া বিধ্বস্ত হওয়ার পরে নাসাকে সেখান থেকে একটি হার্ড ড্রাইভ খুঁজে পেতে সহায়তা করেছিল।
সংবাদমাধ্যমকে ‘অনট্র্যাক’ জানিয়েছিল, হার্ড ড্রাইভ অক্ষত থাকলে হাওয়েলের বিটকয়েন সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৯০ শতাংশ। তবে এখনও পর্যন্ত সেই খননকার্য শুরু হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।