প্রতীকী চিত্র
আপনি কি চটজলদি বড়লোক হওয়ার উপায় খুঁজতে বাজারে নেমেছেন? অথচ আপনার কোনও অভিজ্ঞতা নেই বিনিয়োগের। কিন্তু ফেসবুকে দেখছেন। ইউটিউবে দেখছেন আর হয়তো সহকর্মীদের কাছেও শুনছেন। তাই আর লোভ সামলাতে না পেরে বাজারে নেমে পড়েছেন।
আগে অবশ্য এত সুবিধা ছিল না। কিন্তু এখন তো একটা ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলে, মোবাইলে বোতাম টিপলেই শেয়ার আপনার ঘরে। তার পর আপনি নিদ্রাহীন। এই গেল গেল অবস্থা, তো তার পরেই রসগোল্পা কিনে বাড়ি ফেরার মুহূর্ত! অনেক সময়ে দিনের শেষে শেয়ারের দাম দেখার বদলে সময় পেলেই পোর্টফোলিওর দিকে নজর।
পাশের বাড়ির বাবলুদা সারা দিন বাড়িতে বসে শেয়ার বেচা-কেনা করেই সংসার চালায়। গাড়ি-বাড়ি ছেলের স্কুল, সবই নাকি শেয়ারের টাকায়!
আর এ সব দেখেই আপনি নেমে পড়েছেন চটজলদি বড়লোক হওয়ার পথে। তার মানে এই নয় যে, আপনিও অন্যদের মতো শেয়ারে বিনিয়োগ করে লাভবান হবেন না। তার মানে এই নয় যে, আপনি শেয়ারে টাকা ঢালার পথে হাঁটবেন না। নিশ্চয়ই হাঁটবেন। কিন্তু তার আগে নিজেক প্রস্তুত করে নিতে পারেন।
বাজারে দাঁও মারার পিছনে কিন্তু মন্ত্র একটাই। ঠিক শেয়ার চিনে নেওয়া। মনে হতেই পারে এটা আর নতুন কী! আসলে অন্যের জন্য যে শেয়ার ঠিক, আপনার জন্য তা ঠিক না-ও হতে পারে। যেমন, আপনি হয়তো বিনিয়োগ করে মূলধন হারানোর ঝুঁকি যতটা পারেন কম রাখতে চান। আবার অন্য কেউ ঝুঁকির পরোয়া না করেই বাজি ধরতে চান। তাই আপনাদের দু'জনের কিন্তু একই ধরনের শেয়ারে বিনিয়োগ করা উচিত হবে না।
তাই ঠিক করে নিন বাজারে বিনিয়োগ করে কতটা ঝুঁকি আপনি নেবেন।
দেখুন মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে যেমন, ঠিক তেমনই শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আপনার বিনিয়োগের লক্ষ্য স্থির করা কিন্তু জরুরি। আপনি যদি কম দিনের জন্য বিনিয়োগ করে বেশি লাভ করতে চান, তাহলে এক ধরনের শেয়ার। আবার দীর্ঘকালীন বিনিয়োগের জন্য আর এক ধরনের শেয়ার পছন্দ করতে হবে।
বাজারে কিছু শেয়ার আছে, যাতে খুব ওঠা-নামা দেখা যায়। বাজারে বিন্দুমাত্র বিপদের আঁচ পেলেই এগুলোর দামে ধস নামে। আবার কিছু শেয়ার আছে, যারা হিমালয়ের মতো অবিচল। বাজারে বিরাট কিছু নড়াচড়া হলেই তবেই তাদের দামে হেরফের হয়। এর কারণ একাধিক হতে পারে। তবে একটা বিষয় নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই। আর তা হল এই সংস্থাগুলির আর্থিক অবস্থা শুধু ভালই নয়, তাদের ব্যবসার বাজারেও তারা রাজা।
যে শেয়ার বাজারের নড়া-চড়ায় তুলনামূলক ভাবে অনড় থাকে, সে সব শেয়ারে বিনিয়োগের ঝুঁকি কম। দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের জন্য অবশ্যই এরা পুষ্টিকর।
এ সব নিয়ে আরও গভীরে পরে আলোচনা করা যাবে। তবে বাজারে নামার আগে বুঝে নিন:
• আপনার ঝুঁকি নেওয়ার দৌড়
• যে টাকা ঢালছেন, তা কেন ঢালছেন (অর্থাৎ আপনার লক্ষ্য কী)
• সে লক্ষ্য কত দিনে পূরণ করতে চান
• যে সংস্থার শেয়ারে টাকা ঢালছেন, সেই সংস্থার ব্যবসা সম্পর্কে আপনার কোনও সংশয় আছে কি না
• সংস্থার ব্যবসা টেকসই কি না।
এ ছাড়াও আরও কিছু দিক দেখার থাকে। কিন্তু এই দিকগুলো দেখে পা ফেলা বাধ্যতামূলক। তবে এটাও ঠিক, বাজারে বিনিয়োগ মহাকাশ বিজ্ঞান নয়। এটা আয়ত্ত করতে লাগে অধ্যবসায়। আর চোখ-কান খোলা রাখা। ব্যস।
বিশেষজ্ঞদের কাছে সমাধান খুঁজতে সঞ্চয় নিয়ে আমাদের প্রশ্ন পাঠান — takatalk2023@abpdigital.in এই ঠিকানায় বা হোয়াটস অ্যাপ করুন এই নম্বরে — ৮৫৮৩৮৫৮৫৫২আপনার আয়, খরচ এবং সঞ্চয় জানাতে ভুলবেন না। পরিচয় গোপন রাখতে চাইলে অবশ্যই জানান।