প্রতীকী চিত্র
আজকাল ঋণ নিতে গেলে যে জিনিসটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তা হল ক্রেডিট স্কোর বা সিবিল স্কোর। ক্রেডিট স্কোর কম থাকলে বা পর্যাপ্ত না থাকলে অনেক সময়ে ঋণ দিতে অস্বীকার করে ব্যাঙ্ক বা অন্য কোনও আর্থিক সংস্থা। আবার অনেক ক্ষেত্রে ক্রেডিট স্কোর ভাল না হওয়ায় ঋণ পেলেও চড়া হারে সুদ দিতে হয় গ্রাহককে। তাই ক্রেডিট স্কোর ঠিক রাখাটা খুবই জরুরি। ক্রেডিট স্কোরের বিষয়ে সব সময়ে সচেতন থাকা প্রয়োজন। এর জন্য প্রয়োজন নিয়মিত কিস্তি শোধ থেকে শুরু করে আরও বেশ কয়েকটি নিয়ম মেনে চলা।
জানেন কি কেন কমে যায় ক্রেডিট স্কোর?
ক্রেডিট স্কোর নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে রয়েছে নানা ভ্রান্ত ধারণা। অনেকে মনে করেন, বারবার ক্রেডিট স্কোর দেখলে তা কমে যায়। অনেকে আবার মনে করেন ‘ক্রেডিট লিমিট’ বাড়ালে ক্রেডিট স্কোর কমে যেতে পারে। কিন্তু আদপে ক্রেডিট স্কোর কমে মূলত ৫টি কারণে।
১. সময়মতো ইএমআই না দিলে আপনার ক্রেডিট স্কোর কমতে বাধ্য। এতে আপনার ঋণ শোধের ইচ্ছা ও ক্ষমতা প্রশ্নের মুখে পড়ে যায়। তাই ভুলেও ইএমআই এড়িয়ে যাবেন না। সুযোগ থাকলেও পার্ট পেমেন্ট বা মিনিমাম ডিউ পেমেন্ট করবেন না।
২. বার বার ঋণের আবেদন করলে ক্রেডিট স্কোর কমতে পারে। কোনও ব্যাঙ্ক বা আর্থিক সংস্থায় ঋণের আবেদন করলে তারা ক্রেডিট ব্যুরোর কাছে আপনার ক্রেডিট স্কোর জানতে চায়। কিন্তু বারবার আপনি যদি ঋণ চান, তা হলে ক্রেডিট ব্যুরো মনে করে আপনার আর্থিক অবস্থা খারাপ। তাই আপনি বারবার ঋণের আবেদন করেছেন। তখন তারা ক্রেডিট স্কোর কমিয়ে দেয়। এই সমস্যা থেকে বাঁচতে বছরে ২ – ৩টির বেশি ক্রেডিট কার্ড বা ঋণের আবেদন না করাই ভাল।
৩. ক্রেডিট কার্ডে ক্রেডিট লিমিট বেশি ব্যবহার করলেও ক্রেডিট স্কোর কমে যায়। ধরা যাক, আপনার সমস্ত ক্রেডিট কার্ডের মোট ক্রেডিট লিমিট ৩ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে আপনার বকেয়া যদি ২ লক্ষ টাকা হয় তা হলে ক্রেডিট ব্যুরো মনে করে আপনার খারাপ সময় চলছে। তখন তারা ক্রেডিট লিমিট কমিয়ে দেয়। তাই কোনও অবস্থাতেই মোট ক্রেডিট লিমিটের ৫০ শতাংশের বেশি ব্যবহার করবেন না বা ঋণ নেবেন না।
৪. প্রচুর ঋণ নেওয়া থাকলে ক্রেডিট স্কোরে ক্রেডিট মিক্সের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনার কাছে যদি একাধিক ক্রেডিট কার্ড থাকে। নানা রকম ঋণ নেওয়া থাকে, যার কিস্তি আপনাকে প্রতি মাসে দিতে হয় তাহলে ক্রেডিট স্কোরে তার প্রভাব পড়তে পারে। নিজের মোট আয়ের একটা বড় অংশ যদি আপনাকে ঋণ শোধ করতে হয়, তা হলে ক্রেডিট স্কোর কমে যেতে পারে। তাই ঋণ নেওয়ার আগে ভেবেচিন্তে তার পরে ঋণ নিন। সস্তায় ঋণ পাওয়া গেলেই বা ‘নো কস্ট ইএমআই’-এর ফাঁদে পড়ে ঋণ নেবেন না।
৫. আপনার ঋণ পরিশোধের ইতিহাস কত পুরনো, তার প্রভাব পড়ে ক্রেডিট স্কোরে। ধরা যাক আপনার কাছে ৩টি ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। তার মধ্যে ১টি ১০ বছরের পুরনো। বাকিগুলি ২ থেকে ৩ বছরের পুরনো। কোনও কারণে আপনি ১০ বছরের পুরনো ক্রেডিট কার্ডটি বন্ধ করে দিলেন। তাহলে আপনার ক্রেডিট স্কোরে প্রভাব পড়তে পারে। যদি বন্ধ করতেই হয়, তা হলে নতুন নেওয়া ক্রেডিট কার্ডটি বন্ধ করা ভাল।
বিশেষজ্ঞদের কাছে সমাধান খুঁজতে সঞ্চয় নিয়ে আমাদের প্রশ্ন পাঠান — takatalk2023@abpdigital.in এই ঠিকানায় বা হোয়াটস অ্যাপ করুন এই নম্বরে — ৮৫৮৩৮৫৮৫৫২আপনার আয়, খরচ এবং সঞ্চয় জানাতে ভুলবেন না। পরিচয় গোপন রাখতে চাইলে অবশ্যই জানান।