গজল ও টপ্পা ছাড়িয়েও

সুস্মিতা অনবদ্য অন্য গানেওমিনার্ভা থিয়েটারে অনুষ্ঠিত হল ‘সুরপিয়াসী’র ২৫ বছর পূর্তির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শুরুতেই ছিল সম্মেলক সঙ্গীত। কথা ও সুর সুস্মিতা গোস্বামী। এর পর সুস্মিতার একক অনুষ্ঠানের শুরু হয় উপনিষদের স্তোত্র, শোরীমিঞার টপ্পা, কীর্তন, গজল, মীরার ভজন, রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলগীতি থেকে আধুনিক বাংলা গান দিয়ে। এ দিন শুরুতেই শিল্পী একটি পঞ্জাবি টপ্পা শুনিয়ে তাঁর চর্চিত সুরেলা কণ্ঠের প্রমাণ দিলেন।

Advertisement

বিপ্লবকুমার ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:০৩
Share:

মিনার্ভা থিয়েটারে অনুষ্ঠিত হল ‘সুরপিয়াসী’র ২৫ বছর পূর্তির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শুরুতেই ছিল সম্মেলক সঙ্গীত। কথা ও সুর সুস্মিতা গোস্বামী। এর পর সুস্মিতার একক অনুষ্ঠানের শুরু হয় উপনিষদের স্তোত্র, শোরীমিঞার টপ্পা, কীর্তন, গজল, মীরার ভজন, রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলগীতি থেকে আধুনিক বাংলা গান দিয়ে। এ দিন শুরুতেই শিল্পী একটি পঞ্জাবি টপ্পা শুনিয়ে তাঁর চর্চিত সুরেলা কণ্ঠের প্রমাণ দিলেন। গজলের ক্ষেত্রেও তাই। তবে নজরুলের সৃষ্ট গজল ‘উচাটন মন ঘরে রয় না’ শুনে শ্রোতারা উচ্ছ্বসিত হন। মীরার ভজনেও সেই তেজ প্রতিফলিত হয়।
রবীন্দ্রনাথের টপ্পাঙ্গের গান ‘মেঘের পরে মেঘ’ এক সুরের আবহ তৈরি করে। সেই একই ধারা বজায় ছিল ঐশ্বরিক অনুভূতিতেও। যেমন বিদ্যাপতির কীর্তন ‘মাধবও বহুতো মিনতি’ পরিবেশনে।
এ দিন শিল্পী প্রত্যেকটি গানের আগে অনেক না জানা তথ্য শ্রোতাদের শুনিয়েছেন। ফলে পরিবেশিত গানগুলি এক অন্য মাত্রা ছুঁয়ে গিয়েছিল। শিল্পীর সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিলেন তবলা ও বাংলা ঢোলে বাবলু বিশ্বাস। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল শুধুই তালবাদ্য। ১৪ টি বাদ্যযন্ত্র নিয়ে বাবলু এক অসাধারণ পরিবেশ তৈরি করেছিলেন।

Advertisement

Advertisement

নৃত্য-ছন্দে দুর্গা বোধন

ইন্দ্রাণী দত্তের পরিচালনায়। লিখছেন চৈতি ঘোষ

সম্প্রতি ইন্দ্রাণী দত্তের পরিচালনায় বিড়লা সভাঘরে আয়োজিত হল কলা নিকেতনের ত্রয়োদশতম বার্ষিক অনুষ্ঠান। আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে সেদিন ইন্দ্রাণীর প্রথম উপস্থাপনা ছিল দুর্গাবন্দনা। ঢাক, ধুনুচির ব্যবহার, কাশফুলের সুন্দর মঞ্চসজ্জা ও অপূর্ব আলোকসজ্জার মাধ্যমে দেবী দুর্গার আবাহন প্রেক্ষাগৃহে স্বর্গীয় পরিবেশ তেরি করে। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ও চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। মূল পর্বের অনুষ্ঠানে সংস্থার বিভিন্ন শাখার শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্র-ছাত্রীদের মিলিত প্রয়াসে পরিবেশিত হল ভারতনাট্যম। এর পরে শাস্ত্রীয় নৃত্যের পাশাপাশি ছিল লোক-নৃত্য ও পাশ্চাত্য নৃত্য। শিল্পীরা ছিলেন নিবেদিতা চক্রবর্তী, শ্রেয়া হালদার, সুতপা মারিক, স্বর্ণাভ, সৌরভ নন্দী প্রমুখ।

নাচের ফাঁকে সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ‘এটা কোথায় লেগেছে’ নাটকটি বেশ উপভোগ্য।

তবে এ দিনের সেরা প্রাপ্তি ইন্দ্রাণী ও তাঁর সহশিল্পীদের ‘সৃষ্টি’ উপস্থাপনাটি। বিশেষ করে ‘ছাতা ধর’ গানটির সঙ্গে ইন্দ্রাণীর দেহ ভঙ্গিমা মুগ্ধ করে। শিল্পীর কন্যা রাজনন্দিনী এ দিন নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছে। সঞ্চালনায় ছিলেন মধুমন্তী মৈত্র।

শাওন গগনে ঘোর

শিশিরমঞ্চে ব্যারাকপুর ‘মুদ্রা’ আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছিল ‘শ্রাবণসন্ধ্যা’য় তিমির রায়ের কণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত। প্রথমে ‘শাওন গগনে ঘোর ঘনঘটা’ গানটির সঙ্গে নৃত্য পরিচালিকা মহুয়া মুখোপাধ্যায় গৌড়িয় নৃত্য ভঙ্গিমায়। ‘স্বপ্নে আমার মনে হল’, ‘তিমির অবগুণ্ঠনে’, নৃত্য পরিচালনায় অভয় পাল। ‘মনমোর মেঘের সঙ্গী’, ‘হৃদয় আমার নাচেরে’ নৃত্য পরিচালনা কাকলী বসু ওড়িষী নৃত্যে। সমবেত নৃত্যে উপভোগ্য ছিল নিজ নিজ দক্ষতায়।

রবীন্দ্র নৃত্যনাট্য চিত্রাঙ্গদা অবলম্বনে ‘রাজেন্দ্রনন্দিনী’ অর্জুনের ভূমিকায় ছিলেন পরিচালক তিমির রায়। তাঁর নৃত্যদক্ষতা এবং অভিনয়ে চরিত্রটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।

সুরুপা এবং কুরুপা পৌলমী বন্দ্যোপাধ্যায় ও মহুয়া মুখোপাধ্যায় প্রশংসনীয়। মদন যথাযত। সখিদ্বয় ও গ্রামবাসী পরিণত নৃত্যশৈলী দর্শনীয় হয়। ভাষ্যপাঠ সহ রবীন্দ্রসঙ্গীত-এ সুকৃতি মজুমদার।

একা মোর

সম্প্রতি জ্ঞানমঞ্চে অনুষ্ঠিত হল শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদারের একক সঙ্গীত সন্ধ্যা। সব ধরনের গানেই শিল্পী সাবলীল। একের পর এক গেয়ে চললেন অতুলপ্রসাদ, হেমাঙ্গ বিশ্বাসের গান থেকে রবীন্দ্রসঙ্গীত। সেই তালিকায় ছিল অসমিয়া লোকসঙ্গীতও। শিল্পী শোনালেন অতুলপ্রসাদের ‘একা মোর গানের তরী’। রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘যদি হায় জীবন পূরণ’, ‘আজি বিজন ঘরে’, ‘তার অন্ত নাই গো’, ‘চির সখা হে’। গানগুলি ছিল শ্রুতিমধুর। ‘বিমূর্ত এই রাত্রি মোর’ আসামের লোকগানে শিল্পী ছিলেন অসাধারণ। হেমাঙ্গ বিশ্বাসের ‘শঙ্খচিল’ গানটি স্ত্রী জয়িতা নন্দী মজুমদারের সঙ্গে যৌথ উপস্থাপন নজর কেড়েছে। এছাড়াও শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা ‘অবনী বাড়ি আছো’, জীবনান্দ দাশের ‘রূপসী বাংলা’ এবং কালিকা প্রসাদের ‘এপার বাংলা ওপার বাংলা’য় নিজের সুরের গানগুলি অনবদ্য। সঙ্গতে সুদীপ্ত চক্রবর্তী, শঙ্কর সোম, তরুণ চৌধুরী, সুমন দাস ও আশিস তপাদার যথাযথ। আলাপচারিতায় ছিলেন রত্না মিত্র।

প্রেম-বিরহ-একাকীত্ব

বর্ষার গানে

অরূপবীণায়

সম্প্রতি ব্রাক্ষ্ম সমাজ আয়োজন করেছিল রবীন্দ্রনাথের অধ্যাত্ম চেতনায় প্রেম বিরহ একাকীত্ব। গানে ছিলেন সুনন্দা ঘোষ ও পাঠে সতীনাথ মুখোেপাধ্যায়। শিল্পীর প্রথম গান ‘ভালবেসে সখী’। পরে ‘খেলাঘর বাঁধতে লেগেছি’ হাম্বীর রাগের উপর দাদরা তালের গানটি মন কাড়ে। ‘দিবস রজনী’ গানটি শিল্পীর কণ্ঠে অন্য মাত্রা পায়। শেষ নিবেদন ছিল ‘আহা তোমার সঙ্গে প্রাণের খেলা’ খাম্বাজ রাগে।

সম্প্রতি আইসিসিআর-এ বর্ষার গানের অনুষ্ঠানে তন্ময় মুখোপাধ্যায়ের পরিবেশন বেশ নজর কাড়ে। নির্ভুল স্বরলিপি, দরাজ কণ্ঠ, স্পষ্ট উচ্চারণ। ‘মনে হল যেন পেরিয়ে এলেম’ গানে শিল্পী অনবদ্য। ‘আমার দিন ফুরালো’ থেকে ‘বর্ষণমন্দ্রিত অন্ধকারে’ সবেতেই নিজস্বতা বজায় রেখে শ্রোতাদের মন জয় করলেন শিল্পী। ‘শেষ গানেরই রেশ নিয়ে যাও চলে’ এ দিনের সেরা প্রাপ্তি। গানটি শিল্পীর দরাজ ও পরিশীলিত কণ্ঠে এবং গায়নে শ্রোতাদের মুগ্ধ করে।

সম্প্রতি আইসিসিআর-এ এক সন্ধ্যায় রবীন্দ্রনাথের পূজা পর্যায়ের গান শোনালেন কাকলী দাস। তাঁর নির্বাচনে ছিল ‘আমার বিচার তুমি কর’, ‘বহে নিরন্তর অনন্ত আনন্দধারা’, ‘সদা থাকো আনন্দে’, ‘মহাবিশ্বে মহাকাশে’, ‘তাই তোমার আনন্দ’, ‘বাজে বাজে রম্যবীণা’, ‘তোমারি ঝর্ণাতলার নির্জনে’। শেষ করলেন তাঁর প্রিয় গান ‘ধায় যেন মোর সকল ভালবাসা’ গানটি দিয়ে। অনুষ্ঠানের আয়োজনে ছিল ‘অরূপবীণা’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement