অধিকাংশ বাবা-মা-ই আজকাল ব্যস্ত। বাচ্চার সঙ্গে খেলাধুলো বা তাকে মাঠে খেলতে নিয়ে যাওয়া, নিছক দুষ্টুমি করার মতো সময় ক’জন মা কিংবা বাবার আছে! তাই পরিবারের খুদে সদস্যটিকে এনগেজড রাখার জন্য অনেকেই ‘টোপ’ হিসেবে ব্যবহার করেন কার্টুন চ্যানেল বা অ্যানিমেটেড ছবি। নতুন-নতুন জিনিস শিখছে। উপরি পাওনা গড়গড় করে ইংরেজি বলা! কিন্তু এই ফাঁদে পা দিয়ে বাবা-মায়েরা সন্তানের যে ক্ষতিটা করছেন, সে ব্যাপারে তাঁরা কি ওয়াকিবহাল?
টিভি হল ইউনিডায়রেকশনাল কমিউনিকেশন। বাচ্চাটি যখন টিভি দেখে চলেছে, তখন তার কাছে কেউ কিছু জানতে চাইছে না এবং তাকে কোনও উত্তরও দিতে হচ্ছে না। ফলে তাকে এক ধরনের কুঁড়েমি গ্রাস করে। কোনও কিছু করার ইচ্ছে থাকে না। ক্রমশ তাদের অনুপ্রাণিত হয়ে কিছু করার প্রবণতা কমতে থাকে। তাই বাচ্চারা সব সময় এমন কিছু দেখবে বা করবে, যেখানে উলটো দিক থেকে প্রশ্ন আসে এবং বাচ্চাটিকে তার উত্তর দিতে হয়।
যেমন, খেলার সময় তাকে রেসপন্স করতে হচ্ছে। ফলে খেলার সঙ্গে তার যোগাযোগ তৈরি হল। আবার অবসর সময়ে গল্পের বই পড়ে সে মনের মধ্যে চরিত্রগুলো নির্মাণ করছে। তার কল্পনাও পাখা মেলছে। কিন্তু টিভি দেখলে ভাবনা স্থবির হয়ে যায় কারণ, গল্প বা পছন্দের চরিত্রটা সে দেখতেই পাচ্ছে। ফলে ভাবনার জায়গা নেই, যা ছোট্ট দুষ্টুটির কনসেনট্রেশন কমিয়ে দিচ্ছে, তার সৃজনশীলতায় থাবা বসাচ্ছে। তার কাছে পড়াশোনা অনেক বেশি পরিশ্রমসাধ্য মনে হচ্ছে।
অনেক বাবা-মায়ের অভিযোগ, বাচ্চা যখন কার্টুন দেখছে, তখন সে কাউকে অন্য কিছু দেখতে দেবে না। এর কারণ, বাচ্চাটির এখনও নৈতিকতার বোধ জন্মায়নি। এই সমস্যাটা হয়তো আগেও ছিল, কিন্তু তখন পরিবারের সদস্যসংখ্যা বেশি হওয়ায়, ভাগ করে নেওয়ার জায়গাটা বেশি ছিল। এখন সবেধন নীলমণির উপর সকলের নজর, তাই তার বায়নাও বেশি।
বাবা-মায়েদের জন্য পরামর্শ, সন্তানের সঙ্গে প্রচুর কথা বলুন, আঁকুন, খেলুন... দেখবেন কত প্রশ্ন জন্মাচ্ছে। আর আপনার ছোট্ট সোনা, দুষ্টুমির সঙ্গে-সঙ্গে পড়াশোনা, আঁকা, গান, খেলাধুলো সব কিছুতে তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছে।
অনুলিখন: পারমিতা সাহা
মডেল: ঐশীকি
মেকআপ: অভিজিৎ পাল
লোকেশন: অওরিস
ফোটো: শুভজিৎ শীল
শুটিং কো-অর্ডিনেটর: ঈপ্সিতা বসু