গোড়ার কথা
সুন্দর ত্বক কে না চায়? কিন্তু ত্বককে উজ্জ্বল, দাগছোপহীন রাখতে যে বাড়তি নজর দেওয়া দরকার, সেটাই আর খেয়াল থাকে না কারও। দিনভর কাজের চাপে আর পরিশ্রমে ইচ্ছেও করে না যে, সপ্তাহে এক বার পার্লারে গিয়ে ক্লিন আপ করে আসবেন। অথচ নিয়মিত পরিষ্কার না রাখলে মৃত কোষ আর রোজকার ময়লা জমে জমে ত্বক হয়ে উঠবে প্রাণহীন। সুরাহা একটাই। ডিপ ক্লেনজ়িং। অতিরিক্ত আর্দ্রতা, দূষণ, চারপাশের ধুলোবালি এবং মেকআপের উপাদান থেকে ত্বকের যা ক্ষয়ক্ষতি হয়, তাকে ভিতর থেকে পরিষ্কার করার পদ্ধতিই হল ডিপ ক্লেনজ়িং।
যৎসামান্য যত্ন
মাসে এক-দু’বার ডিপ ক্লেনজ়িং ফেশিয়াল কিন্তু ত্বকে অনেকখানি পরিবর্তন আনতে পারে। হাইড্রোফেশিয়াল, অক্সিজেন ইনফিউজ়়ড ফেশিয়াল, বিভিন্ন এনজাইম সমৃদ্ধ ফেশিয়াল এ ক্ষেত্রে খুব উপকারী। দুটো ফেশিয়ালের মাঝের সময়টায় সপ্তাহে অন্তত তিন থেকে চার দিন যদি কয়েকটা ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করে চলতে পারেন, তা হলে দেখবেন, চোখ ফেরানো যাবে না আপনার ত্বক থেকে! ডিপ ক্লেনজ়িংয়ের ফলে ব্রণ, ফুসকুড়ি, দাগছোপ, ব্ল্যাকহেডস— এ সবের থেকেই পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। ত্বকের মধ্যেকার ক্রমাগত ক্ষয় হতে থাকা কোলাজেনের স্তরও নিয়মিত যত্নে অমলিন থাকবে। তবে ত্বকে যদি কোষগত কোনও সমস্যা থাকে, তা হলে নির্দিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াটা জরুরি।
ঘরোয়া উপায়
বাড়িতে ত্বক পরিষ্কার রাখতে হলে হাতের কাছে কয়েকটা জিনিস মজুত রাখলেই চলবে। পোর ক্লেনজ়িং ফেস ওয়াশ, ডিপ ক্লিনিং ক্লেনজ়িং মিল্ক বা জেল (ত্বকের ধরন অনুযায়ী), ভাল ব্র্যান্ডের ফেশিয়াল স্ক্রাব এবং ফেস প্যাক। সপ্তাহে দু’দিন বাড়ি ফিরে আগে ফেস ওয়াশ দিয়ে মুখটা ধুয়ে নিয়ে মেকআপ তুলে ফেলুন। তার পর ক্লেনজ়ার ব্যবহার করে ত্বক পরিষ্কার করে নিন। ঘরোয়া পদ্ধতি চাইলে ঠান্ডা দুধ দিয়েও মুখ পরিষ্কার করতে পারেন। তার পর পাঁচ মিনিট স্টিম নিন।
স্টিম নেওয়ার সময় গরম জলে একটা ভিটামিন ই ক্যাপসুল ঢেলে নিতে পারেন। এতে ত্বকের রোমকূপ খুলে গিয়ে মুখে ঔজ্জ্বল্য আসবে। তার পর এক্সফোলিয়্যান্ট বা স্ক্রাব লাগিয়ে ভাল করে মাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। একদম শেষে ফেস প্যাক লাগিয়ে ২০ মিনিট রিল্যাক্স করুন। ধোওয়ার পর টোনিং আর ময়শ্চারাইজ়িং। বাজারচলতি টোনার ব্যবহার না করতে চাইলে শসার রস আর গোলাপজল মিশিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন ঘরোয়া মিশ্রণ। ক্লেনজ়িং-টোনিং-ময়শ্চারাইজ়িংয়ের পুরো পদ্ধতিটার পরে দেখবেন, ঝকঝক করছে ত্বক!
খেয়াল রাখবেন
ডিপ ক্লেনজ়িংয়ের পর কিন্তু ময়শ্চারাইজ়িং খুব জরুরি। ভিটামিন ই সমৃদ্ধ ময়শ্চারাইজ়ার ব্যবহার করুন। আর এমন ক্লেনজ়ার ব্যবহার করবেন, যাতে অ্যালকোহল না থাকে। যদি ত্বকে ব্রণ-ফুসকুড়ির আধিক্য থাকে, তা হলে এমন কোনও লোশন ব্যবহার করুন, যাতে বেনজ়য়েল পেরোক্সাইড থাকে। অনেক সময় গরম কালে ক্রিম-ময়শ্চারাইজ়ার ব্যবহার করতে চান না অনেকে। তাঁরা বরং হাইড্রেটিং ফেস প্যাক ব্যবহার করে টোনার লাগিয়ে নিতে পারেন। টোনারে ত্বকের পিএইচ ব্যালান্স ঠিক থাকে।
আর ফেস প্যাকে যদি কলা, টম্যাটো বা পাকা পেঁপে রাখতে পারেন, তা হলে ত্বকের আর্দ্রতাও বজায় থাকবে। যাঁদের ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত, তাঁরা ফেসপ্যাকে মুলতানি মাটি রাখুন। এর মতো প্রাকৃতিক ডিপ ক্লিনিং উপাদান কমই রয়েছে। শুষ্ক ত্বকের সমস্যা থাকলে চন্দনের গুঁড়ো আর গোলাপজলেই মুখ ভাল ভাবে পরিষ্কার হয়ে যাবে।
মডেল: অন্বেষা
মেকআপ ও হেয়ার: উজ্জ্বল দত্ত
ছবি: অমিত দাস
পোশাক: ইমে়জ অ্যান্ড স্টাইল, গড়িয়াহাট