মডেল: ত্বরিতা, মেকআপ: অভিজিৎ পাল, ছবি: অমিত দাস, লোকেশন: হোটেল হলিডে ইন
রোজকার একঘেয়ে ইঁদুর দৌড়ের জীবনে অনুষ্ঠানে যাওয়ার নিমন্ত্রণ পেলে মন্দ লাগে না। অনুষ্ঠান বা পার্টিতেই তো দেখা হয় আপনজনের সঙ্গে, কড়া ডায়েটকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অন্য রকম খাওয়াদাওয়ার সুযোগ হয়। আলমারিতে জমে থাকা ‘ভাল’ পোশাকগুলোর হয় সদ্গতি। কিন্তু সব অনুষ্ঠান তো আর ছুটির দিনে নয় বা অনুষ্ঠানে যাব বললেই তো সব সময় কর্মক্ষেত্রে ছুটি পাওয়া যায় না। তা ছাড়া অফিস টাইমে যানজট, ভিড় পেরিয়ে পোশাক-গয়না ভর্তি ঢাউস ব্যাগ বয়ে নিয়ে যাওয়া এবং অফিসের ওয়াশরুমে দাঁড়িয়ে তৈরি হওয়া— কম ঝক্কি! এই চিন্তাতেই অফিস থেকে কোথাও যাওয়ার উৎসাহ প্রাaয় চলে যায়। কিন্তু সত্যিই কি তাই?
না! স্রেফ কিছু ছোট অথচ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার মাথায় রাখলেই অফিস ওয়াশরুমেই সেরে ফেলতে পারেন তাক লাগানো সাজ।
পোশাক: শাড়ি পরবেন ঠিক করলে, সিল্ক বা শিফন শাড়িই সেরা। এগুলো চট করে পরে ফেলা যায়, প্লিট এবং কুচি করতে সময় বেশি লাগে না। সালোয়ার-কামিজ পরলে কামিজ বা কুর্তির নীচে চুড়িদার পাজামার বদলে পরতে পারেন পালাজ়ো। বাঁধাধরা পোশাকের বাইরে ফিউশন মন্দ লাগবে না। লং মলমল স্কার্টের সঙ্গে পরতে পারেন এথনিক টপ। সঙ্গে মানানসই সিল্কের ওড়না। জিন্সের সঙ্গে সলিড রঙের টপের সঙ্গে কটনের স্লিভলেস হাফকোট দেখায় ভাল। গরমে জিন্স এড়িয়ে ইক্কত বা সম্বলপুরি কটন কাপড়ের উজ্জ্বল পালাজ়োর সঙ্গে সলিড রঙের শর্ট কুর্তি মন্দ লাগবে না। এই ধরনের পোশাক পরতে যেমন সময় লাগে না, তেমনই স্বল্প পরিসরে দাঁড়িয়েও পরে ফেলা যায়। শাড়ি পরবেন ঠিক করলে, তার জন্য মানানসই ব্লাউজ় ও পেটিকোট বাড়ি থেকেই পরে আসুন অন্য শাড়ির সঙ্গে। ঠিক এ ভাবেই স্কার্ট, র্যাপার, জিন্স বা পালাজ়ো পরে আসুন অন্য টপ দিয়ে। এতে পোশাক বয়ে আনার ঝামেলাও কমবে।
গয়না: ভারী গয়নার চেয়ে হালকা গয়না পরার ফ্যাশন এখন ইন। সিল্ক বা শিফনের সঙ্গে মুক্তোর গয়না বা হালকা সোনার গয়না পরতে পারেন। কানের দুল ছোট হলে বা পাতলা চেন, চুড়ি, বালা পরার পরিকল্পনা থাকলে সেটা বাড়ি থেকেই পরে আসুন। অবশ্যই দেখে নেবেন অফিসের পোশাকের সঙ্গে তা মানাচ্ছে কি না।
মেকআপ: অফিসে সারা দিনের কাজের পর চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ থাকবেই। সময় নিয়ে মেকআপ করার অবসরও নেই। তাই প্রথমেই ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে ময়শ্চারাইজ়ার ভাল করে লাগিয়ে নিন। এতে অনেকটাই ফ্রেশ দেখতে লাগবে। এ বার একটু সিসি ক্রিম লাগিয়ে নিন। তার উপর কমপ্যাক্ট কেক বা পাউডার লাগিয়ে নিন। চোখে গা়ঢ় কাজল ও আইলাইনার। মাসকারা লাগান চোখের পাতায়। ঠোঁটে দিন গাঢ় রঙের লিপস্টিক। চোখ ও ঠোঁটের মেকআপ আপনার মুখের ক্লান্তি লুকোতে সাহায্য করবে। চুল বাঁধার সময়ও কম। চুল খোলা রাখলে ভাল করে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার করে শুকিয়ে নিয়ে মাথার উপর পেঁচিয়ে সারা দিন বেঁধে রাখুন। বেরনোর আগে পুরো চুল উল্টো করে নিয়ে, ভাল করে আঁচড়ে নিন। এতে চুলের ভলিউম বেশি দেখায়। সিঁথি বদলে নিলে লুকটাও চেঞ্জ হবে। গরমে চুল খোলা না রাখতে চাইলে, উঁচু করে পনিটেল বা টপনট কিংবা সামনের দিকটা মেসি করে সাইডে একটা বিনুনি করে নিতে পারেন। হাতখোঁপা করে সুন্দর ক্লাচারও লাগিয়ে নিতে পারেন।
মনে রাখুন: পোশাক নেওয়ার সময় যতটা পারেন ছোট করে ভাঁজ করুন। খেয়াল রাখবেন, কুঁচকে না যায়। অফিসে কিন্তু আয়রন করার সুযোগ পাবেন না। কোনও শাড়ি অনেক দিন না পরে থাকলে, সেটা নেওয়ার আগে দেখে নিন আলমারিতে থেকে ভাঁজে ভাঁজে ফেঁসে যায়নি তো! ব্লাউজ় ও কুর্তির ক্ষেত্রে পরে দেখে নিন। অনেক দিন ব্যবহার না করলে মুক্তো খুলে যায় বা রুপো কালো হয়ে যায়। তাই গয়না ব্যাগে ঢোকানোর আগে দেখে নিন। যে জুতো পরবেন ঠিক করেছেন সেটা দীর্ঘ দিন না পরে থাকলে এক বার পরে হেঁটে নিন। শাড়ি, গয়না, জুতো সব আলাদা আলাদা প্যাকেটে ভরে একটা ব্যাগে নিয়ে নিন। পোশাকের সঙ্গে মানানসই ব্যাগ নিন। বড় ব্যাগ রেখে দিন অফিসের আলমারিতে। ফিনিশিং টাচ দেওয়ার আগে সুগন্ধী লাগাতে ভুলবেন না। ওয়াইল্ড ফ্লাওয়ার, চন্দন, ল্যাভেন্ডার বা পাইনের সুন্দর গন্ধ সারা দিনের ক্লান্তি কাটাতে সাহায্য করে।