ডেস্কের উপরে ছড়ানো তাড়া তাড়া ফাইল... তারই মাঝে ইতিউতি উঁকি দিচ্ছে পেপার ক্লিপ, পেনসিল, প্যাড। সব ক’টাই রোজকার কাজের জন্য জরুরি। কিন্তু তাড়াহুড়োর মাঝে প্রায়ই গুলিয়ে যায় সব কিছু। চোখের সামনে থাকা সত্ত্বেও জিনিসগুলো যেন ঠিক চোখে পড়ে না। তাই ব্যক্তিগত ঘর যেমন আপনি গুছিয়ে রাখেন সুন্দর ভাবে, তেমনই জরুরি অফিসে নিজের পরিসরটুকু সাজিয়ে রাখা। ছোট্ট কিউবিকল হোক কিংবা ডেস্ক— সেটা আপনারই। অনেক সময়ে আমরা যতটা না সময় বাড়িতে কাটাই, তার চেয়ে অনেক বেশি সময় কাজের ব্যস্ততায় অফিসে কাটাতে বাধ্য হই। তাই যদি অফিসেই নিজের একচিলতে পরিসরকে মনের মতো করে সাজিয়ে রাখা যায়, তা হলে সেটা যেমন রুচির পরিচায়ক হবে, তেমনই কাজের জিনিস খুঁজে পেতেও হয়রানি হবে না।
• প্রথমেই দরকার সমস্ত জিনিস সরিয়ে ফেলে ডেস্ক গুছোনোর প্রয়াস করা। অফিসের ফাইল তো জমতে থাকবেই। তাই যদি সেগুলো বিষয়ভিত্তিক ভাবে অথবা বর্ণমালা অনুসারে সাজিয়ে রাখতে পারেন, খুঁজে পেতে সুবিধে হবে।
• ল্যান্ডফোনটার ঠিক পাশেই একটা ছোট্ট সুদৃশ্য ট্রে-র বন্দোবস্ত করতে পারেন। সেখানে থরে থরে সাজিয়ে রাখতে পারেন পেপার ক্লিপ, পেন, পেনসিল, প্যাড, স্টেপলার, কালারিং নোট পেপার ইত্যাদি। অথবা চটজলদি অনলাইন কিংবা দোকান থেকে কিনে আনতে পারেন ডেস্ক অর্গানাইজার। ফোনে কথা বলতে বলতে দরকারি তথ্য লেখার জন্য কাগজ-পেন খুঁজতে আর অন্যত্র হাতড়াতে হবে না।
• নিজের কিউবিকলে কৃত্রিম বোর্ড লাগিয়ে অন্য রঙে রাঙানোর ব্যবস্থা থাকলে বেছে নিতে পারেন কোনও থিম রং। কালো-হলুদ কিংবা ধূসর-গোলাপি রঙে সাজাতে পারেন ডেস্ক। কিন্তু সেই ব্যবস্থা না থাকলে কালারিং টেপ কিংবা ওয়াশি টেপ লাগিয়ে নিতে পারেন ডেস্কের ধারগুলোয়। তাতেও ডেস্কের বেস এক থাকা সত্ত্বেও বদলে যাবে কিউবিকলের চেহারা।
• ডেস্কের সঙ্গে মানানসই কোনও চেয়ার আনতে পারেন। নানা ধরনের রিভলভিং কিংবা কাঠের চেয়ারের রং বাছতে পারেন ডেস্কের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে।
• অনেক অফিসেই কাজ করতে হয় বেশ রাত্তির অবধি। আবার কাজের চাপ থাকলে কাউকে থাকতে হয় আরও বেশ খানিকক্ষণ। ডেস্কে পছন্দ মতো আলো বা ল্যাম্পশেডের ব্যবস্থা রাখতে পারেন। চাপের সঙ্গে সঙ্গে চোখকে আরাম দেওয়ার জন্য সেই আলোই যথেষ্ট।
• একটানা অনেকক্ষণ এক জায়গায় বসে কাজ করতে গিয়ে ঘন ঘন চা-কফি খাওয়ার অভ্যেস ধরে গিয়েছে নিশ্চয়ই। সে ক্ষেত্রে ডেস্কে রাখার জন্য ব্যক্তিগত কফিমাগ রাখা জরুরি। ক্যামেরার লেন্স কিংবা কার্টুনের মুখের আকারে কফিমাগ বা কাচের জলের বোতল— এগুলোর নির্বাচন হোক আপনার রুচি মেনেই।
• প্রায় প্রতি ডেস্কের পাশেই একটা করে বড় বোর্ড রাখা থাকে। জরুরি তথ্য লিখে রাখার পাশাপাশি সেই বোর্ডকে সাজাতে পারেন নতুন ভাবে। কালার পেনসিল কিংবা রঙিন টাসল ঝুলিয়ে রাখতে পারেন বোর্ডে। অনুপ্রাণিত করার মতো কোনও উদ্ধৃতি যোগ করতে পারেন সেই তালিকায়।
• এক পাশে এঁটে দিতে পারেন ছোট্ট একটা ডার্ট বোর্ড। বিরক্তির সময়ে সেই ডার্ট বোর্ড কিংবা স্ট্রেস রিলিফ বল আপনাকে কাজের স্রোত ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে।
• এক টুকরো সবুজের ছোঁয়াও অফিসের ডেস্কে রাখা জরুরি। লিথপ, ক্যাকটাস অথবা ছোট কোনও গাছ রাখতেই পারেন নিজের ডেস্কে।
• অনেকেরই কাজ করতে করতে টুকিটাকি খাওয়ার অভ্যেস থাকে। তার জন্য ছোট ছোট মেসন জারে ড্রাই ফ্রুটস রেখে দিতে পারেন ডেস্কের একপাশে। এতে যেমন খিদে মিটবে, তেমনই স্বাস্থ্যের দিকে নজরও রাখা হবে।
• স্টিকি নোটে মজাদার কথা, রোজকার রুটিন লাগিয়ে সেঁটে দিতে পারেন কিউবিকলের দেওয়ালে। আবার ল্যান্ডফোন বা অন্যত্র গুগলি আই লাগিয়ে সেগুলোকে দিতে পারেন মজার চেহারা।
যে জায়গাটায় বসে কাজের সূত্রে দিনের প্রায় ১০-১২ ঘণ্টাই কেটে যায়, সেই জায়গাটাতেও রাখতে পারেন নিজের হাতের শৈল্পিক ছোঁয়া। মন ভাল তো থাকবেই, অফিসে কাজের মানও ভাল হবে।