যাঁদের বাইরে কাজ করতে হয়, সব সময়ে গা়ড়িতে চেপে যাতায়াত করার সুযোগ পান না... সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে অবহেলিত হয় তাঁদের পা জো়ড়া। অথচ ওই পায়ের উপরেই কিন্তু নির্ভর করে যাবতীয় চলাফেরা। তার উপরে শীতের মরসুমে ফাটা গোড়ালি তো বিরাট একটা সমস্যা! মুখের মতো পায়েরও চাই ক্লেনজ়িং-স্ক্রাবিং-ময়শ্চারাইজ়িং রুটিন। কী ভাবে পায়ের যত্ন নেবেন, তার একটা গাইডলাইন রইল।
পায়ের ঊষ্ণ স্নান
ফাটা গোড়ালির জন্য সবচেয়ে ভাল দাওয়াই কিন্তু গরম জল। তবে অত্যধিক গরম হলে কিন্তু পায়ের ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যাবে। একটা টাবে গরম জল ভরে তাতে শাওয়ার জেল কিংবা শ্যাম্পু তিন টেবিল চামচ মতো মিশিয়ে পা দুটো ডুবিয়ে রাখুন। অনেকেরই হাঁটাহাঁটি করলে পায়ে ব্যথা হয়, তাঁরা চাইলে গরম জলে এক-দু’চামচ এপসম সল্ট মিশিয়েও পা ডুবিয়ে রাখতে পারেন। দশ মিনিট মতো রাখলেই হবে। তার পরে পা আলতো করে মুছে ফেলুন। জোরে ঘষবেন না।
মৃত কোষ দূর হোক
গরম জলে পা ডোবানোর পরের ধাপ হল মৃত কোষ দূর করা। একটা নরম পিউমিস স্টোন কিনে রাখবেন। যে কোনও ভাল মানের ওষুধের দোকানে পেয়ে যাবেন। অনেকে মেটাল ফুট স্ক্রাবার ব্যবহার করেন। কিন্তু পা যদি বেশি ফাটে কিংবা রক্তাক্ত হয়, তাতে সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি থাকে। খুব সাবধানে প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রেখে পিউমিসে পা ঘষবেন। দেখবেন ডেড সেল সুন্দর উঠে আসছে।
ঘরেই ফুট স্ক্রাব
ঘরে বানানো এক্সফোলিয়্যান্ট দিয়ে পায়ের স্ক্রাবিং করুন। আধ কাপ অলিভ অয়েলের মধ্যে তিন টেবিল চামচ চিনি নিন। চাইলে তার মধ্যে কয়েক ফোঁটা মিন্ট কিংবা টি ট্রি এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিতে পারেন। সার্কুলার মোশনে স্ক্রাব করুন এই মিশ্রণ দিয়ে। তবে এ ক্ষেত্রেও বেশি জোরে ঘষবেন না। এতে পায়ের ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে। তার সঙ্গে ময়লাও দূর হবে।
ফুট মাস্কের কেরামতি
হাতে সময় থাকলে স্ক্রাবিংয়ের পরে একটা মাস্ক লাগাতে পারেন। একটা পাকা কলা চটকে মেখে নিন। তাতে আধখানা পাতিলেবুর রস মেশান। মাস্ক তৈরি হয়ে গেলে একটা শিট বা ম্যাট পেতে নিয়ে পায়ে লাগিয়ে ফয়েল পেপার দিয়ে পা মুড়ে রাখুন। তা হলে চারপাশটা নোংরা হবে না। দশ মিনিট রেখে ঈষদুষ্ণ গরম জলে পা ধুয়ে নিন।
আর্দ্রতাই শেষ কথা
ময়শ্চারাইজ়ার লাগিয়ে শেষ করুন গোটা পদ্ধতি। খুব ভাল হয়, যদি এই ঘরোয়া ফুট স্পা রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে করতে পারেন। বাজারে ভাল ব্র্যান্ডের বেশ কিছু ভারী ফুট ক্রিম পাওয়া যায়। শীতকালে সে রকম একটা কিনে রাখতে পারেন। সেটা দিয়ে ভাল করে গোটা পা মাসাজ করুন। প্রয়োজনের চেয়ে একটু বেশি পরিমাণে ক্রিম নেবেন। পায়ের ত্বক কিন্তু মুখের চেয়েও বেশি শুকিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ফুট ক্রিমের পরিবর্তে অ্যান্টিসেপ্টিক ক্রিম বা পেট্রোলিয়াম জেলিও লাগাতে পারেন। সব শেষে পুরনো মোজা পরে নিয়ে শুতে যান। সকালে দেখবেন, পা জোড়া আপনাকেই ধন্যবাদ জানাচ্ছে!