ছবি: সন্দীপ দাস (মডেলরা সেজেছেন তরুণ তাহিলিয়ানির পোশাকে)
অফিস পার্টি হোক বা অনুষ্ঠানবাড়ি, নিজের বেশভূষায় স্বতন্ত্র হয়ে উঠতে কে না চায়? কিন্তু স্বতন্ত্র হতে গিয়ে অনেকেই নিজের কমফর্ট জ়োন থেকে বেরিয়ে আসেন। ফলে সাজে অস্বস্তি ধরা পড়ে। সেই সাজ কি সর্বাঙ্গসুন্দর হতে পারে? এমন পোশাক বাছতে হবে যাতে আপনাকে সুন্দর লাগবে, আবার একই সঙ্গে সেই পোশাকে আপনি স্বস্তিও পাবেন। কলকাতায় এসে কী বললেন ফ্যাশন ডিজ়াইনার তরুণ তাহিলিয়ানি?
বুননে-বসনে
কাশ্মীরি, বাঙালি, গুজরাতি, পঞ্জাবি—
এই দেশে জায়গাভেদে কত রকমের স্টিচ হয়। ব্লাউজ়ের হাতে বা পিঠে, শাড়ির আঁচলে, টপের সামনে, কুর্তির কলারে সে রকম কিছু স্টিচ করিয়ে নিতে পারেন। সেলাইয়ের নকশা বাছতে পারেন পছন্দ মতো। একটা সুচের ফোঁড়ই কিন্তু আপনার পোশাককে আলাদা করে দেবে অন্যদের চেয়ে। তরুণের মতে, ‘‘এমব্রয়ডারি নিজেই সম্পূর্ণ ও স্বতন্ত্র। প্রত্যেক পোশাককে সে নিজস্বতা দেয়।’’
ভাঁজে ধরা থাকুক ঐতিহ্য
শাড়ির কুঁচি বা ধুতির কোঁচাতেই চিরকাল অভ্যস্ত বাঙালি। কিন্তু এখন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনেকেই পশ্চিমি পোশাকে সাবলীল। তবে অনুষ্ঠানবাড়িতে নজর কাড়তে পারে এই কুঁচি। শাড়ির কুঁচি, আঁচলের ধরনে বদলে যায় লুক। শাড়ি পরতে না চাইলে প্লিটেড ড্রেস বেছে নিতে পারেন। এই ধরনের পোশাকে শরীরের মেদও কিন্তু ঢাকা পড়ে যায়। তরুণের মতে, ‘‘বাঙালিদের শাড়ি পরার ধরন, ধুতির কোঁচা থেকে আমি অনুপ্রেরণা পেয়েছি। সেখান থেকেই আমার পোশাকে উঠে এসেছে প্লিটের ব্যবহার। একটা সময় পর্যন্ত এই প্লিটই কিন্তু বাঙালিদের স্বতন্ত্র ফ্যাশন তৈরি করেছিল। পরে পশ্চিমি অনুসরণে স্ট্রাকচার্ড প্যাটার্ন আসে। তাই আমার মতে স্ট্রাকচারের মধ্যে প্লিট ধরে রাখলে সবচেয়ে সুন্দর দেখায়।’’ প্লিটেড ড্রেসে এক দিকে থাকে স্ট্রাকচার, অন্য দিকে ভাঁজে ধরা থাকে ঐতিহ্য।
ওজনে নয়, দর্শনে ভারী
বিশেষত বিয়েবাড়িতে সাজপোশাক বাছার সময়ে লুকের দিকে নজর দিতে গিয়ে পোশাকের ওজন খেয়াল করা হয় না। ফলে জারদৌসি কাজ করা, পাথরকুচি বসানো ভারী শাড়ি বা লহেঙ্গা বেছে ফেলেন অনেকেই। কিন্তু পরে বেশির ভাগ সময়ে তা আলমারিতেই বন্দি থাকে। ডিজ়াইনারের মতে, ‘‘এমন পোশাক পরলেন যে, আয়নার সামনে দু’মিনিট দাঁড়িয়ে দারুণ দেখাল। পরে কোমর ব্যথায় সেই পোশাক নিয়ে চলতে ফিরতে না পেরে এক জায়গায় বসে রইলেন। সেটা কি আদৌ ভাল লাগবে? জীবনে আর ও রকম পোশাক পরতেই ইচ্ছে করবে না। তার চেয়ে বরং এমন পোশাক বাছুন যার ওজন কম, কিন্তু দেখতে সুন্দর।’’ সে ক্ষেত্রে ভাল রং, এমব্রয়ডারি বা নকশা বেছে নিতে পারেন। আর অফিসপার্টির ক্ষেত্রে হালকা কিন্তু ভাল ফ্যাব্রিকে জোর দিন।
পোশাক নির্বাচনে ফ্যাব্রিকও গুরুত্বপূর্ণ। ভয়েল, রেশম, ক্রেপের মতো ফ্যাব্রিক বেশ আরামদায়ক। আর মনে রাখবেন নিজের সাধ্যের মধ্যেও সুন্দর দেখতে পোশাকটা কিনে নেওয়া যায়। ‘‘ডিজ়াইনার কপি না কিনে বরং ভাল পোশাক কিনুন,’’ পরামর্শ তরুণের। নিজের ওয়ার্ড্রোব আলো করে না হয় নিজের কালেকশনই থাকুক, যা আপনার ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক।