ডাকনামটা হঠাৎ বদলে গেছে

পাড়ায় তিনি আর রাখি নন। ‘দুর্গা’। সঙ্ঘমিত্রা তালুকদার-এর সঙ্গে কথা বললেন সুমনা দাশগুপ্ত রাস্তায় বেরোলেই লোকজনের কৌতূহলী প্রশ্ন, ‘‘আরে এ দুর্গা না?’’ প্রশ্ন শুনে আজকাল আর ঘাবড়ান না সঙ্ঘমিত্রা তালুকদার। আসলে টেলিভিশনে, সিরিয়ালের সংসারে প্রতিবাদের নতুন মুখ যে তিনি!

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share:

রাস্তায় বেরোলেই লোকজনের কৌতূহলী প্রশ্ন, ‘‘আরে এ দুর্গা না?’’

Advertisement

প্রশ্ন শুনে আজকাল আর ঘাবড়ান না সঙ্ঘমিত্রা তালুকদার। আসলে টেলিভিশনে, সিরিয়ালের সংসারে প্রতিবাদের নতুন মুখ যে তিনি!

সৌজন্যে তাঁর জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘আমার দুর্গা’। বছর দু’য়েক আগে ‘হয়তো তোমারই জন্য’ সিরিয়াল করেছিলেন। আর এ বার ‘আমার দুর্গা’। কোন চরিত্রের সঙ্গে নিজের মিল বেশি? প্রশ্নটা শুনে হেসে ফেললেন। ‘‘আমি আসলে বরাবর প্রতিবাদী। অন্যায় মানতে পারি না। (পাশ থেকে ইউনিটের একজন বলে উঠলেন, ও একটু বেশি মাত্রায় প্রতিবাদী।) ফলে এই চরিত্রটা আমার নেচারের সঙ্গে বেশ খাপ খায়। ভালই লাগছে।’’

Advertisement

মা চেয়েছিল টিচার হই

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এম এ পাশ সঙ্ঘমিত্রার সিভিতে এখনও পর্যন্ত তিনটে সিরিয়াল‌। ‘টাপুরটুপুর’ দিয়ে টলিপাড়ায় আসা। ২০১০ সালে। বোনের চরিত্রে প্রশংসা পেয়েছিলেন। তার পর মেগাসিরিয়াল ‘হয়তো তোমারই জন্য’য় রোম্যান্টিক আর প্রতিবাদী সত্তা মিলেমিশে ছিল। ‘আমার দুর্গা’য় ‌লিড রোলে তিনি এখন পুরোপুরি প্রতিবাদী।

রাস্তায় কেউ হেনস্থার শিকার হলে পর্দার ‘দুর্গা’কে কি পাব? ‘‘পাশ কাটিয়ে চলে যাব না এটা শিওর। তবে কী ভাবে প্রতিবাদ করব সেটা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে। বুদ্ধি দিয়েও কিন্তু ভালভাবে সিচুয়েশন ট্যাকল করা যায়,’’ এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে থামলেন ‘দুর্গা’।

মা চেয়েছিলেন মেয়ে টিচার হোক। সেই মেয়ে যখন বাড়িতে সিরিয়ালে অ্যাক্টিংয়ের কথা বললেন তখন সবাই অবাক। অভিনয়ের কিছু না জেনে কী করেই বা এগোবে, সে সব নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন বাবা-মা। ‘টাপুরটুপুর’য়ের প্রোমো দেখার পর বাড়ির সবাই দারুণ খুশি হয়েছিল।

ভালবাসি ক্রিকেট

কোনও দিন অ্যাক্টিং স্কুলে যাননি। প্রথম সিরিয়ালের পর দ্বিতীয় সিরিয়ালেও হিরোইনের রোল পেয়েছেন। পরপর দুটো সিরিয়ালে হিরোইন, দায়িত্ব কি বেড়ে গেল?

‘‘এটা ঈশ্বরের আশীর্বাদ। তবে হিরোইন হলাম কী হলাম না সেটা বড় কথা নয়। আমি চাই ভাল অভিনেত্রী হতে,’’ হেসে বললেন ‘দুর্গা’।

টালিগঞ্জের প্রিয় অভিনেতার কথা জিজ্ঞেস করতেই বললেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের নাম। তবে টলিউডে তাঁর আইডল উত্তমকুমার-সুচিত্রা সেন আর সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। সিরিয়ালের নায়িকা থেকে বড় পর্দায় কবে দেখতে পাব আপনাকে?

‘‘আমি তৈরি। এখন তো অনেক ভাল ভাল কাজ হচ্ছে। নিজেকে ভাঙতে চাই। তবে আমি চাইলেই তো আর হবে না। দেখি কবে সুযোগ আসে,’’ একটু যেন আনমনা।

নেটফ্লিক্স, ইউটিউবে গান শোনা, সিনেমা দেখার যুগে ‘দুর্গা’র মতো চরিত্রের দরকার কতটা?

‘‘দেখুন, গ্রামে আজও অনেকে মনে করেন মেয়ের আঠারো বছর বয়স হওয়া মানেই বিয়ে। কিন্তু অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে লড়তে গেলে শিক্ষা, বুদ্ধি, সহ্যশক্তি তিনটেই দরকার। আর সে কথাই তো বলে দুর্গা।’’

কাঁকিনাড়ায় তাঁর আদি বাড়ি। তবে শ্যুটিংয়ের চাপে আজকাল থেকে যান যাদবপুরের বিক্রমগড়ে। বাড়ি ছেড়ে বাইরে থাকলেও মায়ের ওপর নির্ভরশীলতা এখনও যায়নি। অ্যালার্ম নয়, ঘুম ভাঙে মায়ের ফোনে।

রুপোলি পর্দার বাইরে তাঁকে টানে আরও একটা জগৎ। মাঠ। তাঁর ড্রিমম্যান ‘মহারাজ’। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের খেলার মুহূর্তগুলোর জন্য মাঝেমধ্যেই চোখ রাখেন ইউটিউবে। আর ‘দাদাগিরি’-র কোনও সিজনই মিস করেননি।

অগুন্তি বয়ফ্রেন্ড

মেগার চক্করে দিনের প্রায় পুরো সময় কেটে যায় ফ্লোরে। বিশেষ মানুষটিকে কখন সময় দেন? প্রশ্ন শুনে চোখ গোল গোল করে তাকালেন। তার পর বললেন, ‘‘দেখুন আমার অগুন্তি বয়ফ্রেন্ড। সকলের সঙ্গে সহজে মিশতে পারি বলে সেটে অনেকেই খেপায়। তবে ‘বিশেষ’ কেউ নেই।’’

মধ্যরাতে বিশেষ পুরুষ কণ্ঠের ফোন আসে না বলছেন? ‘‘না। বিশ্বাস করুন।’’ তবে যে ইউনিটের এক জন এখনই বললেন আজ রাত দশটাতেই আপনার বয়ফ্রেন্ড এসে পড়বে। নামটা বলেই ফেলুন না। অস্বস্তিকর প্রশ্নটা কাটানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে বললেন, ‘‘আরে না, না। ও সবে কান দেবেন না। ও তো নিছক মজা,’’ বলেই হেসে উঠলেন সঙ্ঘমিত্রা।

সত্যিই কি নিছক মজা!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement