মার্চের মধ্যেই পরিষেবার আশ্বাস

২১ হাসপাতালে মিলবে বিমার সুবিধা

সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা প্রকল্প চালু হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ২১টি ব্লক ও গ্রামীণ হাসপাতালে। আগামী ৩১ মার্চের মধ্যেই এই সুবিধা পাওয়া যাবে বলে জানা গিয়েছে। বর্তমানে জেলার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, সব মহকুমা হাসপাতাল ও ৯টি গ্রামীণ হাসপাতালে স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা পাওয়া যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৫ ০২:২০
Share:

সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা প্রকল্প চালু হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ২১টি ব্লক ও গ্রামীণ হাসপাতালে। আগামী ৩১ মার্চের মধ্যেই এই সুবিধা পাওয়া যাবে বলে জানা গিয়েছে। বর্তমানে জেলার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, সব মহকুমা হাসপাতাল ও ৯টি গ্রামীণ হাসপাতালে স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা পাওয়া যায়।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে খবর, সাধারণ মানুষ যাতে বাড়ির কাছের হাসপাতালেই স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা পেতে পারেন, সে জন্যই এই ব্যবস্থা। এই প্রকল্প থেকে হাসপাতালের যা আয় হবে, সেই টাকায় সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিকাঠামো-সহ নানা উন্নয়ন কাজ করতে পারবে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “আগামী ৩১ মার্চের মধ্যেই জেলার বাকি ২১টি হাসপাতালে ওই প্রকল্প চালু হয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই তার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।” জেলার ঘাটাল, খড়্গপুর-১ ও মেদিনীপুর সদর ব্লক হাসপাতালে স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা চালু হচ্ছে। একইসঙ্গে বাকি ১৯টি গ্রামীণ হাসপাতালেও বিমা প্রকল্প চালু হবে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, কয়েক বছর আগে দারিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারী মানুষদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা প্রকল্প চালু করেছিল। এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে স্থানীয় পঞ্চায়েত বা পুরসভা থেকে ৩০ টাকা দিয়ে ফর্ম সংগ্রহ করে তা জমা দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে একটি কার্ড দেওয়া হবে। এক একটি কার্ডে যে কোনও পরিবারের পাঁচ জন চিকিৎসার জন্য বছরে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় পেতে পারেন। বিমার নিয়ম অনুযায়ী, ওই কার্ড নিয়ে কোনও রোগী ভর্তি হলে সংশ্লিষ্ট রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোনও টাকা খরচ হবে না। এ ক্ষেত্রে রোগীর যে কোনও পরীক্ষা, ছুটির পর ওষুধ কিনে দেওয়া, এমনকী বাড়ি যাওয়ার জন্য একশো টাকা দেওয়ার নিয়মও রয়েছে। আগে বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমগুলিতেই এই বিমার সুবিধা পাওয়া যেত। গত বছর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার একাধিক জেলা হাসপাতাল, মহকুমা হাসপাতাল ও গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে ওই প্রকল্প চালু হয়।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এ ক্ষেত্রে একটি জাতীয় বিমা সংস্থার সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের চুক্তি রয়েছে। ওই বিমা সংস্থা বিষয়টি দেখভালের জন্য বিভিন্ন রাজ্যেই একটি করে সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছে। তবে রোগীর পরিবারের লোকেদের একাংশের অভিযোগ, বেশির ভাগ সরকারি হাসপাতালে বিমার নিয়ম মানা হলেও বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে সব ক্ষেত্রে তা মানা হয় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার অভিযোগ, “যে সংস্থা এই প্রকল্পটি দেখভাল করছে-তাদের সঙ্গে বহু বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ গোপন আঁতাত করে দুর্নীতি করছে। তাই বিমার কার্ড থাকা সত্ত্বেও অনেকক্ষেত্রে রোগীর থেকে টাকা নেওয়ার ঘটনা ঘটছে। একই সঙ্গে রোগীর কার্ড থেকে নির্দিষ্ট রোগের জন্য বরাদ্দ টাকাও কেটে নেওয়া হচ্ছে।” তাঁর আরও অভিযোগ, “গ্রামের গরিব মানুষের জন্য সরকার এত সুবিধা চালু করলেও বহু উপভোক্তাই এই চক্র থেকে বেরতে পাচ্ছেন না” দুর্নীতি বন্ধে কড়া নজরদারি চালু করার বিষয়েও চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা।

সরকারি হাসপাতালগুলিতেও এই প্রকল্পের উপর নজরদারি চালু হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। অভিযোগ, বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল বিমা থেকে বহু টাকা আয় করলেও তাদের পরিষেবার মান খারাপ। ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালের সুপার অনুরাধা দেব বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই ২২ লক্ষ টাকা হাতে পেয়েছি। ওই টাকায় হাসপাতালের নানা সরঞ্জাম কেনা হয়েছে। এখনও বিমা যোজনা থেকে অনেক টাকা বকেয়া রয়েছে। তাই হাসপাতালে এ বার একটি ভবন তৈরির কাজ শুরুর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।”

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “ওই প্রকল্প থেকে সরকারি হাসপাতালগুলির যা আয় হেবে, সেই অর্থ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন উন্নয়নের কাজে লাগাতে পারবেন। ছোটোখাটো কাজের ক্ষেত্রে সরকারি বরাদ্দের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না।” তাঁর বক্তব্য, “এর ফলে গ্রামীণ ও ব্লক স্তরের হাসপাতালগুলির পরিকাঠামোর মানের উন্নয়নও হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement