হাসপাতালে সাংসদ রেণুকা সিংহ। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।
শিশু দিবসের দিন হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের হাল দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন কোচবিহারের তৃণমূল সাংসদ রেণুকা সিংহ। শুক্রবার দুপুরে তিনি কোচবিহার জেলা হাসপাতালে পরিদর্শনে যান। শিশুদের হাতে ফল তুলে দেওয়া তাঁর কর্মসূচি ছিল। ওয়ার্ডের হাল দেখে প্রকাশ্যে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সাংসদ। তিনি জানান, ওয়ার্ডে শিশুরা কেউ জ্বর, কেউ শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি রয়েছেন। সেখানে চারদিকে নোংরা পড়ে রয়েছে। খাবারের অংশ, প্লাস্টিক দিয়ে সবগুলি জানালা ভর্তি হয়ে আছে। ওয়ার্ডের পাশে একটি খোলা জায়গায় আবর্জনা স্তূপ! কী হচ্ছে এখানে। এর পরেই তিনি সুপার জয়দেব বর্মনকে ডেকে পাঠান।
সুপার আসার পর তিনি এই অবস্থার কারণ জানতে চান। সুপার জানিয়ে দেন, সাফাই কর্মীর সংখ্যা কম। সেই জন্য ঠিক মতো পরিস্কার করা যায়নি। সাংসদ সুপারের উত্তরে সন্তুষ্ট হননি। পরে তিনি বলেন, “সাফাই কর্মী কম থাকার অজুহাত দিয়ে শিশুদের ওয়ার্ড নোংরা করে রাখা হবে, এটা মানা যায় না। এই দায়িত্ব সুপার এড়াতে পারেন না। যা অবস্থা তাতে শিশুদের যে কোনও সংক্রমণও হতে পারে।”
সাংসদ জানান, মহারাজার নামে থাকা ওই হাসপাতালের মান নষ্ট করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমি জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলব। প্রয়োজনে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলব। সাংসদের অভিযোগ, “শিশু ওয়ার্ডে চিকিত্সার সামান্য পরিকাঠামো নেই। সামান্য অসুখেই শিশুদের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হচ্ছে।” পরে সাংসদ কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান দীপক ভট্টাচার্যকে অনুরোধ করেন হাসপাতাল চত্বরের নোংরা পরিস্কার করার জন্য। চেয়ারম্যান তাঁকে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
এদিনের ঘটনাটিকে ঘিরে তৃণমূলের কোচবিহারের নেতানেত্রীদের মধ্যে মতানৈক্য প্রকাশ্যে এসেছে। হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও হাসপাতালের সুপার জয়দেব বর্মন সাংসদের পাল্টা সমালোচনা করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, “সাংসদ সব কিছু না জেনেই কথা বলেছেন। সাংসদ লোকজনকে নিয়ে যেভাবে শিশু ওয়ার্ডে গিয়েছেন সেটাও ঠিক হয়নি।”
রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “সাংসদের অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি না জেনে নানা কিছু বলে বসেছেন। আগের থেকে হাসপাতালের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। পরিস্কার, পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি পরিকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে। সাংসদ লোকজন নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে হইহই করে ঠিক করেননি।” এদিন সুপার জানান, হাসপাতালে সাফাই কর্মীর ৩০টি পদ ফাঁকা রয়েছে। তাই প্রতিদিন সবওয়ার্ড নিখুঁতভাবে হয়ত পরিস্কার হয়। তা ছাড়া শিশু ওয়ার্ডের সংস্কারের কাজ চলছে। তাই ওই ওয়ার্ডে শিশুদের অস্থায়ীভাবে রাখা হয়েছে।