বছর দুয়েক আগে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে আক্তান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন দু’জন। তারপরেও মহকুমা স্তরে ওই রোগ ঠেকাতে তেমন কোনও ব্যবস্থা গড়ে ওঠে নি। জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা সরাসরি স্বীকারই করে নিচ্ছেন যে, পরিকাঠামোর অভাবে এনসেফ্যলাইটিসের উপসর্গ ধরা পড়লেও মহকুমা স্তরে রোগীদের চিকিৎসার কোনও উপায় নেই। এমনকী শিবির করার মতো পরিকাঠামোও নেই বলেও কর্তাদের একাংশের দাবি।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া, কালনা মহকুমা হাসপাতাল তো বটেই প্রতিটি ব্লক ও গ্রামীণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেও জ্বর ও খিঁচুনি নিয়ে কতজন রোগী ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের অবস্থা জানিয়ে প্রতিদিন রিপোর্ট পাঠাতে বলেছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণবকুমার রায়। তবে কাটোয়া ও কালনা মহকুমা হাসপাতালের সুপারেরা জানিয়েছেন, জ্বর ও খিঁচুনি নিয়ে একাধিক রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফারও করা হয়েছে। কিন্তু কারও শরীরে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ মেলেনি বলে তাঁদের দাবি।
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশও রাজ্য জুড়ে এ হেন এনসেফ্যালাইটিসের পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ। তাঁরা বলেন, “কাটোয়া বা কালনা মহকুমা হাসপাতালে জাপানি এনসেফ্যোলাইটিসের উপসর্গ নিয়ে কেউ এলে তাঁকে বর্ধমানে রেফার করার নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্তারা। সেখানে ‘সেরিব্রো স্পাইনাল ফ্লুইড’ বা সিএসএফ পরীক্ষার পরেই জানা যাবে ওই রোগী জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত কি না।” কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা শুরু হতে দেরি হওয়ায় সম্ভবনা রয়েই যাচ্ছে বলে তাঁদের দাবি। তাই মহকুমা স্তরে অন্তত শিবির করার দাবি তুলেছেন তাঁরা। এতে রোগীদের হয়রানি কম হবে বলেও তাঁদের দাবি। কিন্তু মহকুমা স্তরে জাপানি এনসেফ্যালাইটিস নির্ণয় করার ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না কেন? জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের জবাব, “পরিকাঠামোর অভাবে ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। প্রয়োজনে শিবির করতে হলে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের অনুমতি নিতে হবে।” মহকুমা হাসপাতালগুলির প্যাথলজিক্যাল সেন্টারগুলিতে খোঁজ নিয়েও জানা যায়, এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নির্ণয়ে যে যন্ত্রের প্রয়োজন তা মহকুমা হাসপাতালে নেই। অভাব রয়েছে টেকনিশিয়ানেরও। ফলে ৭০ কিলোমিটার দূরের মেডিক্যাল কলেজই ভরসা রোগীদের।