চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। রাত থেকেই সেখানে শুরু হয় ভাঙচুর, মারপিট। নিরাপত্তার দাবিতে আজ সকালে ধর্মঘটে বসেন হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তার ও পড়ুয়ারা। বন্ধ করে দেওয়া হয় বহির্বিভাগ। দুর্ভোগে পড়েন রোগীরা। বিকেলে জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারের আশ্বাসে ধর্মঘট ওঠে। ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শিলচর থানার আলিটিকরের এক প্রসূতির মৃত্যুর পরই ঝামেলা শুরু হয়। ২৮ ফেব্রুয়ারি এক সন্তানের জন্ম দেন ওই মহিলা। গতকাল সন্ধ্যায় তাঁর মত্যু হয়। মহিলার আত্মীয়দের অভিযোগ, চিকিৎসায় গাফিলতির জন্যই ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযোগ, উত্তেজিত পরিজনরা হাসপাতালের কয়েকটি বিভাগে ভাঙচুর চালায়। কয়েকজন চিকিৎসক, নার্স নিগৃহীত হন। খবর পেয়ে জুনিয়র ডাক্তার ও ছাত্ররা সেখানে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। জখম হন পাঁচজন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ঘটনার জড়িত অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় আজমল হোসেন বড়ভুইয়া ও আলি হোসেন মজুমদারকে। দু’জনই মৃতার আত্মীয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, নাসিমাকে সঙ্কটজনক অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল। প্রথমে অস্ত্রোপচারে আপত্তি জানিয়েছিলেন তাঁর আত্মীয়রা। পরে, রাজি হন। সুস্থ একটি শিশুর জন্ম হলেও, দেরি হওয়ায় প্রসূতির সমস্যা বেড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত তাঁর মৃত্যু হয়। চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি হয়নি।
মেডিক্যাল কলেজ ছাত্র সংসদের সভাপতি রাহুল আমিন চৌধুরী জানান, কয়েকদিন পরপরই রোগীর আত্মীয়দের হাতে তাঁদের আক্রান্ত হতে হচ্ছে। নিরস্ত্র বেসরকারি রক্ষীদের পক্ষে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই তাঁরা মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে একটি পুলিশ চৌকি তৈরির দাবি জানান। আজ বিকেলে জুনিয়র ডাক্তার ও ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন জেলাশাসক গোকুলমোহন হাজরিকা এবং পুলিশ সুুপার দিগন্ত বরা। তাঁরা জানান, কলেজের ১০০ মিটার দূরত্বে একটি পুলিশ চৌকি রয়েছে। সে কারণে কলেজ চত্বরে নতুন চৌকির অনুমতি মিলবে না। তবে রাতে পুলিশ হাসপাতালে টহল দেবে। গ্রামের মানুষের চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হবে।
রোগীর মৃত্যু, উত্তেজনা
রোগী মৃত্যুর ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। শনিবার সন্ধ্যায় সুরজিৎ সিংহ (১৮) নামে এক যুবকের মৃত্যুর পরে তাঁর পরিজনেরা চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তোলেন। সুরজিতের বাড়ি মেদিনীপুর শহরের শরৎপল্লিতে। এ দিন সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ মেডিক্যালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। তাঁর বমি হচ্ছিল। বিকেল চারটে নাগাদ মারা যান সুরজিৎ। তাঁর পরিবারের লোকেদের বক্তব্য, ঠিকমতো চিকিৎসা হলে মৃত্যু হত না। এরপর হাসপাতাল কর্মীদের সঙ্গে পরিবারের কয়েকজনের বচসা বাধে। সুরজিতের পরিজনেরা হাসপাতালের এক কর্মীর উপর চড়াও হন বলেও অভিযোগ। কার্তিক চক্রবর্তী নামে জখম ওই কর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। সন্ধ্যার মুখে উত্তেজনা বাড়লে মেডিক্যালে পৌঁছয় পুলিশ। আসেন হাসপাতালের সহকারী সুপার শ্যামল পট্টনায়েক। ক্রমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। সহকারী সুপার শ্যামলবাবু বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”