আধিকারিক নেই। স্থায়ী কর্মী নেই। যে কোনও রিপোর্ট আনতে ছুটতে হয় বর্ধমানে। স্বাস্থ্য জেলা হিসেবে ঘোষণা হয়েছে বছরখানেক আগে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তার মাস দুয়েক পরে। তার পরে মাসের পর মাস কেটে গেলেও পরিকাঠামো ও কর্মী সমস্যায় ভুগছে আসানসোল স্বাস্থ্য জেলার দফতর।
২০১৩ সালের মার্চ মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসানসোলকে স্বাস্থ্য জেলা হিসেবে ঘোষণা করেন। ওই বছরের মে মাসে স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা (সিএমওএইচ) হিসেবে দায়িত্ব নেন মণিকাঞ্চন সাহা। কিন্তু তার পরে স্বাস্থ্য দফতরের অন্য আধিকারিকের পদগুলি ফাঁকাই থেকে গিয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন স্বাস্থ্য জেলার জন্য ১৫টি পদ অনুমোদন করা হলেও বর্তমানে দফতরে স্থায়ী কর্মী হিসেবে রয়েছেন একজন ডিস্ট্রিট পাবলিক হেলথ অ্যান্ড নার্সিং অফিসার (ডিপিএইচএনও) ও এক জন স্টোরকিপার। ফাঁকা পড়ে রয়েছে ডেপুটি সিএমওএইচের তিনটি পদ। নেই জেলা শিশু স্বাস্থ্য আধিকারিক, হিসেবরক্ষক ও করণিক। এ ছাড়া সাফাইকর্মীর পদ এখনও অনুমোদনই হয়নি। আপাতত মহকুমা স্বাস্থ্য দফতরের বিভিন্ন ব্লকের কর্মীদের নিয়েই আসানসোলের নার্সিং ট্রেনিং সেন্টার চত্বরে জোড়াতালি দিয়ে চলছে স্বাস্থ্য জেলার কাজ।
শুধু কর্মী নয়, সমস্যা রয়েছে কাজের পদ্ধতিতেও। স্বাস্থ্য জেলার ডিস্ট্রিট পাবলিক হেলথ এ্যন্ড নার্সিং অফিসারের জন্য নেই কোনও গাড়ির ব্যবস্থা। কিন্তু এখনও আসানসোল মহকুমার বিভিন্ন ব্লক থেকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রথমে বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য ভবনে পাঠানো হয়। তারপর সেই রিপোর্টগুলি আসানসোল স্বাস্থ্য জেলার দফতরে আসে। কিন্তু আসানসোল থেকে বর্ধমানের দূরত্ব প্রায় ১০৭ কিমি। ফলে কোনও ব্লকে ম্যালেরিয়া, ডায়েরিয়া, ডেঙ্গু হোক কিংবা ক্যানসার, রিপোর্ট নিতে দীর্ঘ পথ উজিয়ে বর্ধমানে যাওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই।
স্বাস্থ্যজেলা হিসেবে ঘোষণা হলেও পর্যাপ্ত পরিকাঠামো তৈরি না হওয়ায় আসানসোল মহকুমার চিকিৎসা পরিষেবায় বর্তমানে মহকুমা স্বাস্থ্য দফতরের গুরুত্বই বেশি। মহকুমার সহায়ক মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা (এসিএমওএইচ) কেকা মুখোপাধ্যায় বলেন, “স্বাস্থ্য জেলা হিসেবে ঘোষণা হলেও সামগ্রিক অর্থে এখনও জেলা ভাগ হয়নি। তবে স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচের নির্দেশ অনুযায়ীই আমরা সাধারণত কাজ করি। পদ্ধতিগত কারণেই এখনও বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য ভবনেই সব রিপোর্ট পাঠাতে হয়।”
স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ মণিকাঞ্চন সাহা বলেন, “স্বাস্থ্যজেলার নিজস্ব ভবন তৈরি হয়ে গিয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি সেখানে অফিস স্থানান্তরিত হবে। কর্মী ও আধিকারিকও শীঘ্রই নিয়োগ হওয়ার কথা রয়েছে।”