নিয়মানুযায়ী সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত খোলা থাকার কথা। কিন্তু ২২টি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেশিরভাগকেই বলে দেওয়া হয় ফার্স্ট হাফ (দুপুর ১টা পর্যন্ত)-এর পর পরিষেবা বন্ধ করতে। কারণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ‘বর্ষপূর্তি’ অনুষ্ঠানের ভোজে সামিল হতে হবে। সেই মতো সপ্তাহের প্রথম দিনই সমস্ত উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিষেবা বন্ধ রেখে ভোজে মেতে উঠেছিলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। ঘটনাটি ঘটেছে গোঘাট-১ নম্বর ব্লকে। ভোজের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারাও। এমনকী প্রশংসাও করলেন এমন উদ্যোগের। উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য আসা প্রচুর মানুষ ফিরে গেলেও তা নিয়ে অবশ্য কারও মাথাব্যাথা ছিল না।
যদিও এর মধ্যে কিছু অস্বাভাবিকতা দেখছেন না গোঘাট ১ এর বিএমওএইচ সুদীপ্ত মন্ডল। ‘বর্ষপূর্তি’ অনুষ্ঠানের আয়োজক হিসাবে নিজেকে দাবি করে তিনি বলেন, “যাঁরা সারা বছর ধরে মানুষকে স্বাস্থ্য পরিষেবা দিচ্ছেন, তাঁদের নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান করায় অসুবিধার তো কিছু দেখছি না। তবে কাজের দিন বলে সমস্ত সাব-সেন্টারের কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ফার্স্ট হাফ(দুপুর ১টা) পর্যন্ত ডিউটি করে চলে আসতে। কেউ কেউ হয়তো আগে চলে এসেছেন। তবে অসুবিধা কিছু হয়নি।”
উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ রেখে উত্সব (ফিস্ট) করার খবর মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক সিদ্ধার্থ বসুর কাছে পৌঁছলে তিনি বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।” গোটা ঘটনায় হুগলির সিএমওএইচ শুভ্রাংশু চক্রবর্তী হতবাক। তাঁর কথায়, “অদ্ভুত ব্যাপার।! সাব-সেন্টার বন্ধ রেখে উত্সব! বিষয়টা বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।”
ভোজের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ব্লক তৃণমূল সভাপতি মনোরঞ্জন পাল বলেন, “কোথায় কোনও অসুবিধা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উদ্বোধন করেছিলেন। তাকে স্মরণীয় করে রাখতে ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের এই উদ্যোগ প্রশংসার।”
বাম আমলে ২০০৭ সালের জুলাই মাসে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির একবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় এবং খালি বহির্বিভাগ চালু হয়। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর ২০১৩ সালের ২ ফেব্রয়ারি থেকে চালু হয় অন্তর্বিভাগ, সেদিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্তর্বিভাগের উদ্বোধন করেন।