বহরমপুর মেডিক্যালে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় ঠিকমতো চিকিৎসা হয়নি বলে জানিয়ে দিল তদন্ত কমিটিও। হরিহরপাড়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মেডিক্যালে ‘রেফার’ করার সময়ে প্রসূতিকে ‘ম্যাগসালফ্’ ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়নি কেন, মঙ্গলবার সেই প্রশ্ন তুলেছে ‘মেটারনিটি রিভিউ কমিটি’।
রবিবার রাতে বহরমপুর মাতৃসদনে মারা যান ডোমকলের প্রসূতি কোহিনুর বিবি। এই ঘটনাকে ঘিরে আয়া ও পরিবারের লোকজনের মধ্যে দফায় দফায় খণ্ডযুদ্ধ বাধে। পরিবারের লোকজন দু’জন আয়াকে মারধর করেন বলেও অভিযোগ। পাল্টা আয়ারাও তাদের উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। সব মিলিয়ে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় মাতৃসদন চত্বর। এর পরেই স্বাস্থ্যভবন থেকে নির্দেশ আসেওই প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার। সেই মতো ওই রিভিউ কমিটি এদিন তদন্ত করে। তদন্ত শেষে একটি রিপোর্টও তৈরি করে তারা। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রয়োজনের সময়ে ওই প্রসূতিকে ‘ম্যাগসালফ্’ ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়নি বলে ওই রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। কমিটির এক সদস্য জানান, খিঁচুনি উপসর্গ থাকায় ওই রোগীর শারীরিক অবস্থা ভাল ছিল না। ফলে শনিবার গভীর রাতে হরিহরপাড়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মাতৃসদনে রেফার করে দেওয়া হয়। কিন্তু হরিহরপাড়ার হাসপাতালের রেফারেল কার্ডে খিঁচুনি উপসর্গের কথা লেখা থাকলেও ম্যাগসালফ্ ইঞ্জেকশন দেওয়ার কোনও উল্লেখ ছিল না। কিন্তু হরিহরপাড়া হাসপাতালে যখন খিঁচুনি ধরা পড়ল, তখনই একটা ম্যাগসালফ্ ইঞ্জেকশন দিয়ে পাঠালে হয়তো রোগীর শারীরিক অবস্থার এতটা অবনতি হত না বলেই ওই কমিটির সদস্যদের অনুমান।” পরে স্বাস্থ্যভবনে পাঠানোর জন্য যে তিন পাতার রিপোর্ট তৈরি হয়েছে, তাতে ওই বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।
হাসপাতালের সুপার তথা সহ-অধ্যক্ষ মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় ওই কমিটির চেয়্যারম্যান। তিনি বলেন, “চিকিৎসায় গাফিলতির যে অভিযোগ তুলেছেন, তা শোনার জন্য ওই পরিবারের সদস্যদের ডেকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কমিটির সদস্যরা। সেই মতো আগামী সপ্তাহে তাঁদের কথা শোনা হবে।” এখন থেকে রাতে হাসপাতালের রোগীদের চিকিৎসায় এক জন আরএমও এবং এক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরের পাশাপাশি এক জন অ্যানাস্থেসিস্টকেও রাখা যায়, সে ব্যাপারে স্বাস্থ্যদফতরের অনুমোদনের জন্য রিপোর্টে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যভবন থেকে বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়ে সরজমিনে তদন্ত করে দেখার জন্যও ওই রিপোর্টে অনুরোধ করা হয়েছে।