নিগৃহীত জাহিদুল। —নিজস্ব চিত্র।
দালালের নির্দেশে রক্ত পরীক্ষা করাতে না চাওয়ায় আক্রান্ত হলেন রোগী। ডোমকল মহকুমা হাসপাতালের এই ঘটনায় সোমবার অভিযোগ দায়ের হয়েছে ডোমকল থানায়। অভিযোগ, লস্করপুরের বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম জ্বর নিয়ে গত শুক্রবার হাসপাতালে ভর্তি হন। শুক্রবার তাঁর রক্ত পরীক্ষা করেন চিকিৎসকেরা। জাহিদুল বলেন, “চিকিৎসায় আমার বেশ উন্নতিও হয়েছিল। কিন্তু শনিবার রাজেশ নামে এক দালাল আমার বাবাকে চাপ দিতে থাকেন ফের রক্ত পরীক্ষা করানোর জন্য। আমি প্রতিবাদ করলে আমাকে মারধর করে।”
দালালদের দৌরাত্ম্য অবশ্য ডোমকল মহকুমা হাসপাতালে নতুন কিছু নয়। সে কথা স্বীকার করেন চিকিৎসকদের একাংশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, “দালালে ভরে গিয়েছে হাসপাতাল চত্বর। এমনকী আয়ারাও দালালি করতে শুরু করেছে। এঁরা সকলেই স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ায় সমস্যা আরও বাড়ছে। আমাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে যে কোনও দিন।”
এ দিকে স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য আঙুল তুলছেন চিকিৎসকদের দিকেই। তাঁদের অভিযোগ চিকিৎসকদের একাংশের প্রশ্রয়ে দালালদের এক বাড়বাড়ন্ত। হাসপাতালে টিকিট কাটা থেকে খাবার সরবরাহ সব কাজেই এঁরা ‘সাহায্য’ করেন রোগী এবং রোগীর আত্মীয়দের। আর তাঁদের হাত ধরেই রমরমিয়ে চলছে ব্যঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠা হাজারো পরীক্ষাগার।
কিন্তু যাঁকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা, অভিযুক্ত গোলাম মোর্তাজা ওরফে রাজেশ কিন্তু আত্মবিশ্বাসী। তাঁর সাফ কথা, “আমি একা নই, হাসপাতাল চত্বরের ২৫ থেকে ৩০ টি পরীক্ষাগার ও ওষুধের দোকানের লোক (দালাল) আছে। হাসপাতালে তারা সকলেই ব্যাবসা করে। সেইসঙ্গে রোগীদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার আর তাদের উপকারও করি। চিকিৎসকরাই বা আমাদের কিছু বলবেন কেন? আমরা তো ভাল কাজই করছি।”
মহকুমা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার শুভরঞ্জন চন্দ্র অবশ্য বলেন, ‘‘দালালের সমস্যা আমাদের হাসপাতালে আছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কেউ অভিযোগ করতে চায় না। এবার অভিযোগ হয়েছে। আমরাও বিষয়টি পুলিশকে জানাব।” ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।