হাড় ভাঙা রোগীর ভুল চিকিৎসা করার অভিযোগ উঠল এক হোমিওপ্যাথ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। ডোমকল আজিমগঞ্জ গোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই চিকিৎসকের নাম মোবাইনুল ইসলাম। এতবারনগর গ্রামের বছর দুয়েকের শিশু দীপ বিশ্বাস ৪ অগস্ট বাড়ির সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে বাম হাতে চোট পায়। তাকে স্থানীয় হোমিওপ্যাথ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তিনি হাতে প্লাস্টার করে দেন। পরিবারের দাবি, কোনও রকমের এক্স-রে না করেই তিনি ভাঙা হাতের প্লাস্টার করেন। তারপর থেকে ধীরে ধীরে ফুলতে শুরু করে হাত, শুরু হয় অসহ্য যন্ত্রনা।
তারপর অবশ্য মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ, কলকাতার একাধিক হাসপাতাল ঘুরে এসএসকেএম হাসপাতালে ঠাঁই হয় শিশুটির। চিকিৎসকরা অনেকেই বলেছিলেন হাতটা বাদ দিতেও হতে পারে। ২০ অক্টোবর ডোমকল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শিশুটির বাবা ফকরুদ্দিন আলি বিশ্বাস।
তিনি বলেন, “ছোট্ট ছেলেটার যে এমন হবে ভাবতেও পারিনি। অথচ যাঁর জন্য এত কিছু সেই হোমিওপ্যাথ চিকিৎসক কিন্তু আমার ছেলেকে একবারও দেখতে যাননি। চিকিৎসায় এত বড় গাফিলতি, অভিযোগ তো থানায় করতেই হত। তবে ছেলেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকায় দেরি হয়ে গেল।”
ডোমকলের এসডিপিও অরিজিৎ সিংহ বলেন, “পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের হয়েছে। বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরকে জানান হয়েছে। তাদের রিপোর্ট পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অভিযুক্ত ওই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাফ বলে দেন, “আমি ওই শিশুর চিকিৎসা করিনি।” অজিমগঞ্জ গোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কংগ্রেসের আলম খান বলেন, “মোবাইনুল ইসলামের চিকিৎসার পরে সমস্যাটি তৈরি হয়েছে। আমরা একবার আলোচনায় বসেছিলাম। পরে কলকাতায় চিকিৎসা খরচ হিসেবে কিছু টাকা তিনি দিয়েছেন বলে জানি।” কিন্তু ওই চিকিৎসকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে খোদ স্বাস্থ্য দফতর।
ডোমকলের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রবীর মাণ্ডি বলেন, “বিষয়টি অস্থি বিশেষজ্ঞের, কোনও হোমিওপ্যাথ চিকিৎসক কেন আগ বাড়িয়ে ভাঙা হাতে প্লাস্টার করতে যাবেন? এটা তো অন্যায়। তবে আমাদের কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ওই শিশুর পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, প্রয়োজন হলে থানার পরে তাঁর কাছেও অভিযোগ জানানো হবে।